ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা সামনে রেখে ফের সক্রিয় জালিয়াত চক্র

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৭
ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা সামনে রেখে ফের সক্রিয় জালিয়াত চক্র জালিয়াত চক্রের হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুক মেসেঞ্জারের স্ক্রিনশট

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ সেশনের ভর্তি পরীক্ষাকে সামনে রেখে আবার সক্রিয় রয়েছে একাধিক জালিয়াত চক্র। পাশাপাশি ২২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ‘খ’ ইউনিটের পরীক্ষায় জালিয়াতির পুরনো কৌশল নেয়ার টার্গেট করেছে তারা। এ ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুককে ব্যবহার করছে চক্রটি।

বাংলানিউজের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ফেসুবকে `Rasel hossain’ নামে আইডি থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন দেয়া হবে বলে একটি পোস্ট দেয়া হয়। সাথে মোবাইল নম্বর ০১৬৩২৭২৭৭৪১ দিয়ে দেয়া হয়।

পরবর্তীতে এক ছাত্রের অভিভাবক প্রশ্ন চাইলে এই নম্বরধারী ব্যক্তি বলেন, ‘প্রশ্ন আপনি অবশ্যই পাবেন। ফোনে কোন কথা নয়, ইনবক্সে আসেন। আমি আগে আপনার ব্যাপারে যাছাই-বাছাই করব। তারপর প্রশ্ন দিব। ’ এই কল রেকর্ড বাংলানিউজের হাতে এসেছে।

ইনবক্সে গেলে তিনি প্রশ্ন নেয়ার আগে চুক্তি হিসেবে পরীক্ষার্থীর এসএসসি এডমিট কার্ড, এডমিশন এডমিট, পিতা বা মাতার আইডি কার্ড, হোয়াটসএ্যাপ নম্বর, অভিভাবকের সাথে কথা বলিয়ে দেয়ার কথা বলেন। অন্যথায় টাকা এডভান্স করার কথা বলা হয়। রাত দুইটায় প্রশ্ন দেয়ার কথা বলে ওই চক্রটি।

এদিকে ভর্তি জালিয়াতি ঠেকাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গত বছর বারকোড পদ্ধতিতে প্রশ্ন প্রণয়ন করে। এতে জালিয়াত চক্র কিছুটা পিছু হটে। কিন্তু পরবর্তীতে ‘ডি’ ও ‘এ’ ইউনিটে অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থী জালিয়াতির দায়ে আটক হয়।  

জালিয়াত চক্রের একজনের ফেসবুক মেসেঞ্জারের স্ক্রিনশট
বাংলানিউজের অনুসন্ধানে ডি ইউনিটে একাধিক শিক্ষার্থীর জালিয়াতের আশ্রয় নিয়ে মেধা তালিকায় প্রথম সারিতে উঠে আসার প্রমাণ মেলে।

ভর্তি পরীক্ষায় দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা কানে ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতো। সেই কারণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মেটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করা শুরু করে। এতে জালিয়াত চক্রের ডিভাইস ব্যবহারে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এজন্য  আসন্ন ‘খ’ ইউনিটের পরীক্ষাকে সামনে রেখে ডিভাইস ব্যবহার থেকে সরে আসছে তারা।  

তবে এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় বাইরের কেন্দ্রগুলোকে টার্গেট করেছে জালিয়াত চক্র। এসব কেন্দ্রগুলোতে ক্যাম্পাসের কেন্দ্রের তুলনায় কিছুটা শিথিলতা থাকায়, কতিপয় শিক্ষক-কর্মচারীর যোগসাজশে অসাধু তৎপরতার সুযোগ পায় তারা। জালিয়াত চক্র এখন প্রকৃত পরীক্ষার্থীর ছবির সাথে মিলিয়ে ভুয়া পরীক্ষার্থীর ছবি প্রবেশপত্রে বিশেষভাবে বসিয়ে জালিয়াত করার কথা ভাবছে বলে জানা গেছে।

এসব জালিয়াত চক্রের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের অনেক শিক্ষার্থী জড়িত রয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ এম আমজাদ বাংলানিউজকে বলেন, ফেসবুকভিত্তিক জালিয়াত চক্র প্রশ্ন দেয়ার কথা বলে শিক্ষার্থীদের জন্য ফাঁদ তৈরি করে। আমরা গত পরীক্ষায় এমন একটি নম্বর ডিবিতে দিয়েছি। প্রশাসন সজাগ রয়েছে। আর ‘খ’ ইউনিটের পরীক্ষায় ছবি মিলানোর পর পরীক্ষার্থীদের প্রবেশের সুযোগ দেয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের কেন্দ্রগুলোতেও মেটাল ডিটেক্টর থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ০২৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৭
এসকেবি/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।