ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

শিক্ষক বহিষ্কার দাবিতে কুয়েট শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৭
শিক্ষক বহিষ্কার দাবিতে কুয়েট শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা

খুলনা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটুক্তি ও স্বাধীনতা বিরোধী কথা বলায় খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষক ড. রাফিজুল ইসলামের বহিষ্কারের দাবিতে ক্লাস বর্জন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও ল্যাব বর্জন করেন।

স্বাধীনতার পক্ষের কুয়েটের সর্বস্তরের শিক্ষার্থীদের ডাকে ক্লাস বর্জন করে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে স্বাধীন বিরোধী শক্তি ও জঙ্গিবাদ বিরোধী ছাত্রসমাবেশ করেছেন।

আন্দোলকারী শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের খান জাহান আলী হলের প্রভোস্ট ড. রাফিজুল ইসলাম বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় খান জাহান আলী হলের হল কমিটির মিটিংয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটুক্তি করেন। এতে উপস্থিত হল কমিটির সদস্যরা তার উপর ক্ষেপে যান এবং তার কাছে আগের দুর্নীতির হিসাব চান। এ সময় তিনি অপারগতা প্রকাশ করে সকল দায় মাথায় নিয়ে খান জাহান আলী হলের হল প্যাডে তার পদত্যাগপত্র লিখে সিল ও সাইন দিয়ে হল থেকে বের হয়ে চলে যান।

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তে প্রভোস্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি দুর্নীতি ও অনিয়ম চালাতে থাকেন। প্রথমে তিনি হল ছাত্রদের ভেতর থেকে নিজস্ব মতাদর্শের ছাত্রদের বাছাই করে একটি গ্রুপ তৈরি করেন, তাদের মাধ্যমে তিনি অন্যদের মুখ বন্ধ করার কাজটিও সহজ করে ফেলেন।  
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তার উল্লেখযোগ্য দুর্নীতি মধ্যে হলের এসি প্রজেক্ট রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুসারে কেউ ৩ লাখ টাকার বেশি কোনো প্রজেক্টে কাজ করলে তাকে টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ পেতে হবে। কিন্তু এই ক্ষেত্রে ড. রাফিজুল ইসলাম তা অনুসরণ করেননি। তার কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন এটা হলের ফান্ড থেকে করা হয়েছে। কিন্তু হল কমিটি তার কাছে হিসাব চাইতে গেলে সে হিসাব দিতে বাধ্য নয় বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিট কমিটিকেও তিনি কোনো হিসাব দেননি। যদিও পরবর্তীতে জানা যায়, তিনি এই প্রজেক্টের কিছু টাকা ভিসির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় ফান্ড থেকে নিয়েছেন। এছাড়াও গভীর নলকূপ স্থাপনের নামে যে প্রজেক্টিতে তিনি কাজ করেছেন, তারও কোনো সুস্পষ্ট হিসাব দিতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। হলে নিজের খেয়াল খুশি মত সিট বিতরণ করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।  

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র কুয়েট ছাত্রলীগ শাখার সভাপতি শোভন হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তি করার পর স্বাধীনতার পক্ষের কুয়েটের সর্বস্তরের শিক্ষার্থীদের দুটি দাবি ছিলো একটি হলো তাকে হলের প্রভোস্ট পদ থেকে অপসারণ ও শিক্ষক পদ থেকে বহিষ্কার। এর মধ্যে হলের প্রভোস্ট পদ থেকে তিনি নিজেই অব্যাহতি নিয়েছেন। এরপর শিক্ষার্থীরা রোববার রাত পর্যন্ত শিক্ষকের বহিষ্কারের সময় বেধে দিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে বহিষ্কার করা হয়নি। তাই সোমবার থেকে আমরা রাফিজুল ইসলামের বহিষ্কারের দাবিতে ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন করছি। আমাদের আন্দোলনের ফলে কোনো ক্লাস হচ্ছে না।

শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন বিষয়ে কুয়েট ছাত্র কল্যাণ পরিষদের পরিচালক ড. সোবহানের মোবাইলে বার বার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেন নি। পরে কুয়েটের রেজিষ্টার জি এম শহিদুল আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমি এখনও বিষয়টি জানি না। ক্যাম্পাসে যাচ্ছি।

অভিযুক্ত শিক্ষক ড. রাফিজুল ইসলামকে বার বার মোবাইলে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেন নি।

এদিকে দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মূখপাত্র কুয়েট ছাত্রলীগ শাখার সভাপতি শোভন হোসেন বলেন,  ক্লাস বর্জনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকরা আমাদের কথা শুনতে আসেন। আমরা আমাদের দাবির কথা তাদের জানাই। তারা ফিরে গিয়ে ভিসির বাসভবনে ভিসির সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে মিটিং করছেন।   

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৬ ঘণ্টা,  সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৭/আপডেট ১৩১৪ ঘণ্টা  
এমআরএম/বিএস 


 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad