ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

রাবিতে হরহামেশা গবেষণাপত্র জালিয়াতি!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৭
রাবিতে হরহামেশা গবেষণাপত্র জালিয়াতি!

রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হরহামেশাই গবেষণাপত্র (থিসিস) জালিয়াতির ঘটনা ঘটছে। অন্যের গবেষণাপত্র, রিসার্স মনোগ্রাফ, ইন্টার্নশিপ রিপোর্ট কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দিচ্ছেন অনেক শিক্ষার্র্থী। ক্যাম্পাসের কম্পিউটারের দোকানগুলোতে টাকার বিনিময়ে মিলছে এসব গবেষণাপত্র।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের পবিরহন মার্কেট ও স্টেডিয়াম মার্কেটে কম্পিউটারের দোকানগুলোতে শিক্ষার্থীরা বিষয়ভিত্তিক গবেষণাপত্র, রিসার্স মনোগ্রাফ, ইন্টার্নশিপ রিপোর্টসহ বিভিন্ন গবেষণা প্রবন্ধ প্রিন্ট ও বাঁধাই করতে গেলে দোকানিরা তাদের কাছ থেকে কৌশলে কপি করে তা কম্পিউটারে রেখে দেন। পরে কোনো শিক্ষার্থী এসব গবেষণাপত্রের খোঁজ করলে মোটা অংকের বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের কাছে বিক্রি করেন সেই গবেষণাপত্র।

 

শিক্ষার্থীরা কোনো গবেষণা না করেই এসব রেডিমেড গবেষণাপত্রের কিছু অংশ পরিবর্তন করে শিক্ষকদের কাছে উপস্থাপন করেন।

সচেতন শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, এভাবে হরহামেশা গবেষণাপত্র জালিয়াতি করায় ব্যাহত হচ্ছে গবেষণার মূল উদ্দেশ্য। এছাড়াও এসব গবেষণাপত্র থেকে মৌলিক কোনো তথ্য উঠে আসছে না। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক গবেষণার মান নষ্ট হচ্ছে।
 
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেট ও স্টেডিয়াম মার্কেটের দোকনগুলোতে অনুসন্ধান করা হলে, সাকসেস কম্পিউটারস, আল-আকসা ইন্টারন্যাশনাল, বর্ণমালা কম্পিউটার সেন্টার, আমার আইটি জব কর্নার, কম্পিউটার পয়েন্ট, জান্নাত কম্পিউটারসহ বেশ কয়েকটি দোকানে এসব গবেষণাপত্র, ইন্টার্নশিপ রিপোর্ট ও রিসার্স মনোগ্রাফ পাওয়া যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন দোকানি জানান, তাদের কাছে বিভিন্ন ধরনের গবেষণাপত্রের সফট কপি আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের করা বিষয়ভিত্তিক গবেষণাপত্র ও ইন্টার্নশিপ রিপোর্টের বিষয় তালিকা করে রাখা আছে। শিক্ষার্থীরা আসলে ওই তালিকা দেখে তাদের ইচ্ছেমতো বিষয় বেছে নিয়ে প্রিন্ট দিয়ে নিয়ে যান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সামজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. ফয়জার রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের ছাত্র-শিক্ষক উভয়েরই নীতি-নৈতিকতার জায়গায় যথেষ্ট ঘাটতি আছে। একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে কী শিখতে আসছে সেটা যদি সে চিন্তা করতো অন্যদিকে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কী শিখাচ্ছেন সেটা যদি শিক্ষকরা চিন্ত করেন তাহলে এ ধরনের কাজ হয়তো শিক্ষার্থীরা করতো না।

বিম্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. শিবলী সাদিক বাংলানিউজকে বলেন, আমরা যখন ধরতে পারি বা বুঝতে পারি যে শিক্ষার্থীরা নকল করে এগুলো আমাদের কাছে জমা দিচ্ছে তখন আমরা শিক্ষার্থীদের নম্বর কম দেই। এ ধরনের জালিয়াতি বন্ধ করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৭
এমজেএফ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।