ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

মা-মেয়ে এক সঙ্গে পাস, উল্লসিত এলাকাবাসী

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৭
মা-মেয়ে এক সঙ্গে পাস, উল্লসিত এলাকাবাসী ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

জয়পুরহাট: মা ইসমত আরা, মেয়ে তানজিলা আফরিন এক সঙ্গে এইচএসসি পাস করায় জয়পুরহাট জেলা শহরের আদর্শপাড়ায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়া জেলা জজ আদালতের সাবেক পেশকার জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী ইসমত আরা ও মেয়ে তানজিলা আফরিন পৃথক দু’টি কলেজ থেকে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন।

জানা যায়, লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহ থাকায় বয়স বাড়লেও ইচ্ছায় ভাটা পড়েনি অদম্য মা ইসমত আরার।

সংসারের সব কাজ নিজ হাতে করার পাশাপাশি লেখাপড়া চালিয়ে যেতেন তিনি।

এভাবেই এসএসসি পর্যন্ত মা গোপনে আর মেয়ে স্বাভাবিক নিয়মে চালিয়ে যেতেন লেখাপড়া। এসএসসিতে দু’জনেই ভালো ফলাফলের পর মেয়ে জয়পুরহাট সরকারি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। মা ভর্তি হন জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার আয়মা-জামালপুর টেকনিক্যাল কলেজে।

রোববার (২৩ জুলাই) রাতে মোবাইল ফোনে জাহাঙ্গীর আলম বাংলানিউজকে বলেন, আমার মেয়ে তানজিলা শুরু থেকেই মেধাবী। এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল নিয়ে জয়পুরহাট সরকারি কলেজে ভর্তি হয়। অপরদিকে আমার স্ত্রী ইসমত আরা জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার আয়মা-জামালপুর টেকনিক্যাল কলেজে ভর্তি হন।

তিনি বলেন, মা-মেয়ের একই ক্লাসে পড়ালেখার বিষয়ে অনেকেই অনেক কথা বললেও তারা পিছু হটেনি। লোক লজ্জার ভয়ে আমার স্ত্রী গোপনে বোরখা পরে ক্লাসে যেত। এখন একই সঙ্গে মা-মেয়ের এইচএসসি পাসের খবরে আত্মীয়-স্বজনসহ মহল্লাবাসীরা উল্লাসিত। আমিও বেজায় খুশি।

এ বিষয়ে ইসমত আরা বাংলানিউজকে বলেন, এ বয়সে পড়ালেখা করতে গিয়ে ক্লাসে, রাস্তা-ঘাটে অনেকের অনেক টিপ্পনী সহ্য করেছি, কিন্তু পিছপা হইনি। লেখাপড়া শেষ করে একজন যোগ্য আইনজীবী হয়ে নির্যাতিত নারীদের পক্ষে দাঁড়াতে চাই।

তানজিলা আফরিন বাংলানিউজকে বলেন, এ প্লাস না পাওয়ায় ততোটা খুশি হতে পারিনি। তবে আমার সঙ্গে আমার মাও পরীক্ষায় পাস করেছে, এর চেয়ে বড় আনন্দের আর কিছু হতে পারে না।

এদিকে ফলাফলের খবরে মা-মেয়েকে এক নজর দেখতে ছুটে আসেন তাদের শিক্ষক, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া প্রতিবেশীসহ বন্ধু-বান্ধবরা।

মা-মেয়ের এমন সাফল্যে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে আয়মা-জামালপুর টেকনিক্যাল কলেজের প্রভাষক কনক সরকার বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের ছাত্রী ইসমত আরা অধিকাংশ শিক্ষকের চেয়ে বয়সে বড় হলেও শিক্ষকদের কখনোই তিনি অসম্মান করেননি।

বাংলাদেশ সময়: ০৪২৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৭
এজেড/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।