ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্বে সহকারী শিক্ষকরা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬১৪ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৭
প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্বে সহকারী শিক্ষকরা

ঢাকা: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের শূন্য পদ পূরণে সহকারী শিক্ষকদের মধ্য থেকে চলতি দায়িত্ব প্রদান শুরু করেছে সরকার।
 

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার (২৩ মে) ঢাকা জেলার ৮৭ শিক্ষককে প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্ব প্রদান করেছে।
 
সহকারী শিক্ষকদের মধ্য থেকে ১৬ হাজার শূন্য পদে প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্ব দেওয়া হবে বলে জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান।

 
 
প্রধান শিক্ষকের পদটি দু’টি প্রক্রিয়ায় পূরণ করা হয়ে থাকে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, মোট শূন্য পদের ৩৫ শতাংশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে সরাসরি নিয়োগ এবং ৬৫ শতাংশ সহকারী শিক্ষকদের প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করা হয়ে থাকে।
 
প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ২১ হাজারের বেশি পদ শূন্য রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ৬৫ শতাংশ আমরা দিতে পারবো, যা সংখ্যায় ১৬ হাজার। এদের মধ্য থেকে চলতি দায়িত্ব দেবো।
 
মন্ত্রী বলেন, ওই সময় (৩৫ ও ৬৫ শতাংশ) প্রধান শিক্ষকের পদটি দ্বিতীয় শ্রেণির ছিল না। এখন দ্বিতীয় শ্রেণিতে আপগ্রেড হওয়ার পর ৬৫ শতাংশ আমদের প্রস্তুত করে পিএসসিতে পাঠাতে হয়। বাকি ৩৫ শতাংশ তারা পূরণ করবে।
 
‘দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, আমাদের নিয়োগ বিধি এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক কারণ ও মামলা-মোকদ্দমার কারণে যেখানে শূন্য রয়েছে তা পূরণ করা যায়নি। এরইমধ্যে বহু কিছু শূন্যতা পূরণ করা গেছে কিন্তু এটার আর শূন্যতা পূরণ করা যায়নি। ’
 
তিনি বলেন, কখনও নিয়োগ বিধির প্রশ্ন, কখনও শিক্ষকদের মধ্যে বিভাজন ও মতানৈক্যের কারণে আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। আদালতের ব্যাপারটাও এখন শেষ হয়নি। মামলার কারণে আমরা পিছিয়ে রয়েছি। প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় একাডেমিক কার্যাক্রমে গতি নেই বলেও স্বীকার করেন মন্ত্রী।  
১২ জেলার গ্রেডেশন তালিকা থেকে আমরা পদোন্নতির জন্য যে সুপারিশ করেছি তাদের মধ্য থেকেই অস্থায়ীভাবে কারেন্ট চার্জ দিয়ে স্কুলগুলোকে পরিচালনা করে নেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শূন্য পদের বিপরীতে ঢাকা জেলার মধ্য দিয়ে শুরু করতে চাই।
 
মন্ত্রী বলেন, পিএসসিতে যাদের সুপারিশ করা হয়েছে পিএসসি থেকে তাদের ক্লিয়ার করতে আদালত বা মামলা বা নিয়োগ বিধি না থাকার কারণে অনেকের চাকরির জীবনবায়ু শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমরা চাচ্ছি তারা এ স্বাদ নিয়ে যাক।
 
প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল নিয়ে বিদ্যমান সমস্যা দূরে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এজন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
 
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নজরুল ইসলাম খান বলেন, পর্যায়ক্রমে বাকিগুলোর তালিকা পাওয়া যাবে, সে দিনই চলতি দায়িত্ব দেওয়া হবে।  
 
মন্ত্রণালয় জানায়, সহকারী শিক্ষকদের পক্ষ থেকে জ্যেষ্ঠতা র্নিধারণের বিষয়ে হাইকোর্টে মামলা থাকায় দীর্ঘ আট বছর প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি দেওয়া সম্ভব হয়নি। পক্ষান্তরে ২০১৪ সালে প্রধান শিক্ষক পদটি তৃতীয় শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির বেতনস্কেল উন্নীত করে দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদায় উন্নীত করায় বিধি অনুযায়ী পিএসসি কর্তৃক পদোন্নতি প্রদান করবে। বিদ্যমান নিয়োগ বিধিতে প্রধান শিক্ষকের পদটি তৃতীয় শ্রেণি থাকায় নিয়োগ বিধি সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত পিএসসির মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি প্রদানে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
 
শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সহকারী শিক্ষকদের গ্রেডেশন তালিকা হতে প্রধান শিক্ষকের বিদ্যমান শূন্য পদে চলতি দায়িত্ব প্রদান করার বিষয়ে গত ৩০ এপ্রিল এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) সভায় সিদ্ধান্ত হয়।
 
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ আসিফ-উজ-জামান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আবু হেনা মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আতিকুর রহমান এবং সমিতির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান শিক্ষকের চলতি দায়িত্ব পাচ্ছেন সহকারী শিক্ষকরা
 
বাংলাদেশ সময়: ১২১৫ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৭/আপডেট: ১৩৩৩ ঘণ্টা
এমআইএইচ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।