ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

এইচএসসিতে পরীক্ষার্থী কমেছে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৭
এইচএসসিতে পরীক্ষার্থী কমেছে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী

ঢাকা: চলতি বছরে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় গত বছরের তুলনায় পরীক্ষার্থী কমেছে ৩৪ হাজার ৯৪২ জন। এ বছর দশ শিক্ষা বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১১ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৬ জন।

এরমধ্যে ছাত্রের সংখ্যা ছয় লাখ ৩৫ হাজার ৬৯৭ জন এবং ছাত্রীর সংখ্যা পাঁচ লাখ ৪৭ হাজার ৯৮৯ জন।  

আসন্ন এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য জানান শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।


 
আগামী ২ এপ্রিল থেকে এবারের তত্ত্বীয় পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ হবে ১৫ মে এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা ১৬ মে শুরু হয়ে ২৫ মে শেষ হবে।
 
আট হাজার ৮৬৪ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা দুই হাজার ৪৯৭টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। গত বছরের তুলনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৩১টি এবং কেন্দ্র বেড়েছে ৪৫টি। গত বছর মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১২ লাখ ১৮ হাজার ৬২৮ জন। এবার বিদেশের সাতটি কেন্দ্রে ২৭১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবে।
 
চলতি বছর এইচএসসিতে আটটি সাধারণ বোর্ডের অধীনে ৯ লাখ ৮২ হাজার ৭৮৩ জন, মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে আলিমে ৯৯ হাজার ৩২০ জন, কারিগরি বোর্ডের অধীনে এইচএসসি বিএম-এ ৯৬ হাজার ৯১৪ জন এবং ডিআইবিএসে ৪ হাজার ৬৬৯ জন পরীক্ষা দেবে।
 
দু’টি কারণে এবার পরীক্ষার্থী কমেছে বলে জানান আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান।
 
“২০১৪ সালের এসএসসিতে উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১৩ লাখ তিন হাজার ৩৩১ জন। ২০১৫ সালে এসএসসি উত্তীর্ণ হয়েছিল ১২ লাখ ৮২ হাজার ৬১৮ জন। ২০১৪ সালের তুলনায় ২০১৫ সালে পরীক্ষার্থীর পাসের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছিল ২০ হাজার ৭১৩ জন। ২০ হাজার শিক্ষার্থী কলেজে কম ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। ”
 
দ্বিতীয় কারণ সম্পর্কে মাহবুবুর রহমান জানান, ২০১৫ সালে যশোর বোর্ডে ইংরেজি পরীক্ষায় বিপর্যয় হয়ে পাসের হার ৪৬ শতাংশে নামলেও গত বছরে ৮৬ শতাংশে উন্নীত হয়। ওই পরীক্ষার্থীরা অনিয়মিত হিসাবে গত বছর পরীক্ষা দিয়ে ইংরেজিতে ৯০ শতাংশের বেশি পাস করেছে। যে কারণে যশোর বোর্ডে অনিয়মিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২৫ হাজার ৭৮২ জন কমেছে।
 
পাসের ফলে ২০ হাজার ৭১৩ জন এবং অনিয়মিত কারণে কমেছে ২৫ হাজার ৭৮২ জনসহ মোট ৪৬ হাজার ৪৯৫ জন। এই দুই ঘটনা না ঘটলে স্বাভাবিকভাবে ১১ হাজার ৫৫৩ জন বৃদ্ধি পেতো; বলেন আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সভাপতি।  
 
এবার অনিয়মিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২ লাখ ৩৯ হাজার ২৫৪ জন। এর বাইরে এবার ৩ হাজার ২৬২ জন প্রাইভেট এবং ৬ হাজার ২৫ জন মানোন্নয়ন পরীক্ষার্থী।
 
নিবন্ধন করেও শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশ না নেওয়ার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সবাই পড়াশোনা অব্যাহত রাখতে পারে না। নিবন্ধন করে টেস্ট পরীক্ষা দিয়ে আসতে হয়, টেস্টেও অনেকে বাদ পড়ে।
 
“কিছু শিক্ষার্থী চাকরি বা পড়াশোনার জন্য বিদেশে যায়। নানা কারণে ড্রপ আউট হয়, কেউ যাতে ঝরে না পড়ে সে বিষয়ে আমরা জোর দেবো। ”
 
২০১২ সালে শুধু বাংলা প্রথমপত্রের সৃজনশীল বিষয়ে পরীক্ষা হলেও এবছর ২৬টি বিষয়ের ৫০টি পত্রে সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ।
 
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীরা তোমরা প্রশ্নপত্র ফাঁসের পেছনে ছোটো না। মিথ্যা-ভুল প্রশ্ন যদি হয় তাহলে সর্বনাশের মধ্যে পড়বে। অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, সন্তানদের সাধারণ মূল্যবোধ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, এভাবে সে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আর শিক্ষক, জগতের সব থেকে মহৎ। কিছু শিক্ষক নামধারী জড়িত হয়ে পড়েছেন, শিক্ষক সমাজকে কলংকিত করেছেন। আমরা আহ্বান জানাচ্ছি যারা প্রশ্ন ফাঁস করছেন, সতর্ক হোন। এই ধরনের যারা শিক্ষক তাদের খুঁজে বের করবো।  
 
“প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে সবার সহযোগিতা চাই। শিক্ষকদের মধ্যে যারা বিপথগামী হয়ে গেছেন তাদের শিক্ষক হিসেবে থাকার আর অধিকার নেই। ”
 
হল থেকে প্রশ্ন ফাঁস করে রুমে রুমে পৌঁছে দেওয়া প্রসঙ্গে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, বিভাগীয় কমিশনারদের সভায় এরকম ঘটনায় সঙ্গে সঙ্গে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
 
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষা কক্ষে প্রবেশ করতে হবে। প্রথমে বহুনির্বাচনী ও পরে সৃজনশীল/রচনামূলক (তত্ত্বীয়) পরীক্ষা হবে। উভয় পরীক্ষার মধ্যে কোনো ব্যবধান থাকবে না।
 
এবারো দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসিজনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা শ্রুতিলেখক নিয়ে পরীক্ষা দিতে পারবে। এ ধরনের পরীক্ষার্থীরা অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় পাবেন।
 
আর অটিস্টিকসহ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীরা পাবেন অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময়। এ ধরনের শিক্ষার্থীরা অভিভাবক, শিক্ষক বা সাহায্যকারী নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।
 
পরীক্ষাকেন্দ্রে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ছবি তোলা যায় এমন ফোন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও সঙ্গে রাখতে পারবেন না। পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া অন্যদের কেন্দ্রে প্রবেশ নিষেধ।
 
সংবাদ সম্মেলনে কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক এস এম ওয়াহিদুজ্জামান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৭/আপডেট: ১৪২৩ ঘণ্টা
এমআইএইচ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।