ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

শিক্ষা

জবিতে শিক্ষকদের দ্বন্দ্বে বিভাগে তালা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪০ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৭
জবিতে শিক্ষকদের দ্বন্দ্বে বিভাগে তালা জবির মার্কেটিং বিভাগে তালা/ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) মার্কেটিং বিভাগে স‍ান্ধ্যকালীন কোর্সের টাকা ভাগ-ভাটোয়ারা নিয়ে শিক্ষকদের দু’গ্রুপের দ্বন্দ্বের জের ধরে বিভাগে তালা ঝুলিয়েছেন শিক্ষকরা। এতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

মার্কেটিং বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বিভাগের সান্ধ্যকালীন কোর্স (ইভিনিং-এমবিএ) ও হেকেপ (HEQEP) প্রকল্পের অর্থের ভাগ-ভাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয় বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান জাকির হোসেন ও বর্তমান চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন আরিফের মধ্যে। এ নিয়ে বিভাগে বেশ কোন্দলের সৃষ্টি হয়।

এতে জড়িয়ে পড়ে বিভাগের প্রায় বেশিরভাগ শিক্ষক।

ফলে দু’টি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন বিভাগের শিক্ষকরা। বিভাগে এ নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে একাধিকবার কথা কাটাকাটিও হয়েছে।

সর্বশেষ মঙ্গলবার (২১ মার্চ) বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জাকির হোসেন তালুকদার বিভাগের প্রতিটি কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন। এরপর থেকে বিভাগে ক্লাস পরীক্ষাসহ সব ধরনের প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন একাডেমিক ভবনের চতুর্থ তলার একপাশে ফিন্যান্স বিভাগ ও অন্যপাশে মার্কেটিং বিভাগ। পাশেই ফিন্যান্স বিভাগে শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর থাকলেও সুনসান নিরবতা মার্কেটিং বিভাগের অংশে। প্রবেশপথ থেকে শুরু করে বিভাগটির প্রতিটি ক্লাস রুম, শিক্ষকদের বসার রুম, সেমিনার রুম, বিভাগীয় অফিসরুম সবখানেই ঝুলছে তালা। বন্ধ রয়েছে বিভাগের সব ক্লাস ও পরীক্ষা। এতে চরম ক্ষুব্ধ বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

এদিকে, বিভাগ ঘুরে পাওয়া যায়নি কোনো শিক্ষককে। এমনকি বিভাগে পাওয়া যায়নি খোদ বিভাগীয় চেয়ারম্যানকেও। অফিস রুম তালাবদ্ধ থাকায় অফিসে কর্মরত কর্মচারীরা বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন অফিসের সামনেই, তাদের এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তারা কোনো ধরনের মন্তব্য করতে রাজি হননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কেটিং বিভাগের একজন শিক্ষক বাংলানিউজকে বলেন, বিভাগের এরকম আন্তঃকোন্দল নতুন নয়। ইভিনিং এমবিএ থেকে প্রাপ্ত মোটা অঙ্কের টাকার হিসেব না মেলা ও ভাগ-ভাটোয়ারা নিয়েই মূলত এই দ্বন্দ্বের সৃষ্টি।  

শিক্ষকদের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, শিক্ষকদের হুটহাট এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্বে শিক্ষার্থীদের কথা ভাবা উচিত ছিলো। তাদের দ্বন্দ্বের জের শিক্ষার্থীরা ভোগ করবে এটা তো হয় না। শিক্ষকদের কোনো সমস্যা থাকলে তা নিয়ে উপাচার্যের কাছে তারা যেতে পারতেন, হঠাৎ এমন ক্লাস রুমে তালা লাগানো তাদের মোটেও উচিত হয়নি। আমরা দূর-দূরান্ত থেকে ক্লাস করতে এসে দেখি ক্লাস রুমে তালা ঝুলানো, যা কোনোভাবেই মানা যায় না।

খুব দ্রুত ফের পুরোদমে ক্লাস-পরীক্ষা শুরুর দানি জানান তারা।

এ বিষয়ে জানতে বিভাগের চেয়ারম্যানকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও ফোন রিসিভ করেননি। এছাড়া বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জাকির হোসেন তালুকদারের ফোনে যোগাযোগ করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এদিকে, মার্কেটিং বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান ইভিনিং এমবিএ কোর্সের ডিরেক্টর মো. জাকির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বিভাগ কেন বন্ধ তা বিভাগের চেয়ারম্যান বলতে পারবেন। যেহেতু তিনি বিভাগ পরিচালনা করেন, তাই এ বিষয়ে তার জানার কথা। আমি কিছু জানি না।

এছাড়া বিভাগের চেয়ারম্যানের সঙ্গে অর্থের ভাগ-ভাটোয়ারা নিয়ে তার কোনো দ্বন্দ্ব নেই বলেও দাবি করেন সাবেক এ চেয়ারম্যান।

এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত। আজ (বুধবার) ক্যাম্পাসে না যাওয়ায় এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে পারিনি। আগামীকাল বিস্তারিত জেনে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩২ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৭
ডিআর/ওএইচ/টিআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।