ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

শিক্ষার্থীশূন্য রাবি ক্যাম্পাসে শুধু পুলিশ ও ছাত্রলীগ

রাবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৪
শিক্ষার্থীশূন্য রাবি ক্যাম্পাসে শুধু পুলিশ ও ছাত্রলীগ

রাবি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিভিন্ন বিভাগে চালুকৃত সান্ধ্য কোর্স ও বর্ধিত ফি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর গত রোববার ছাত্রলীগ ও পুলিশের হামলার পর বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করায় ক্যাম্পাস এখন শিক্ষার্থীশূন্য।

ক্যাম্পাসের প্রায় সব দোকানপাট বন্ধ রয়েছে, নেই শিক্ষার্থীদের হৈ-হুল্লোড়।

চিরচেনা আড্ডার স্থলগুলোতে অবস্থান নিয়ে আছে পুলিশ। তবে ফাঁকা ক্যাম্পাসে মাঝে মধ্যেই দেখা মিলছে দুই একজন করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের।

বুধবার সারাদিন ক্যাম্পাস কোনো শিক্ষার্থীর আনাগোনা ছিলনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ভবনে ঝুলছে তালা। খোলা নেই কোনো দোকান। এমনকি গুটিয়ে রাখা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের চায়ের দোকানগুলোও।

ক্যাম্পাসের আড্ডার স্থল টুকিটাকি চত্বর, ইবলিশ চত্বর, মিডিয়া চত্বর, লিচু তলা, পরিবহন মার্কেট, সিনেট ভবন এলাকায় নিরবতা বিরাজ করছে। তবে এসব এলাকায় দেখা গেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের।

এছাড়া ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার সব দায়-দায়িত্ব পুলিশ প্রশাসনের হাতে ন্যস্ত করায় অতিরিক্ত পুলিশ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে রয়েছে।

রোববারের সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার ড. সাদ আহমেদ বাদী হয়ে দু’টি মামলায় ১১০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও তিনশ জনের নামে পৃথক মামলা দায়ের করেছে।

পুলিশের পক্ষ থেকে মতিহার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদুর রহমান বাদী হয়ে ৯০ জনের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাতপরিচয়  তিনশ জনকে আসামি করে দুইটি মামলা দায়ের করেছেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিবিরের সভাপতিসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এদিকে, হল বন্ধ থাকলেও এসব মামলার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের ছাত্রাবাসে অবস্থান করা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে গ্রেফতার আতঙ্ক বিরাজ করছে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া বলেন, শিবিরের অপতৎপরতা ঠেকাতে আমরা ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে আছি। গত রোববারের ঘটনায় যারা অস্ত্রবাজি করেছে তাদের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় নেতারা ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান তিনি।

মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার প্রলয় চিসিম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হলেও সার্বিক নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের টহল অব্যাহত রয়েছে। ক্যাম্পাসে নৈরাজ্যকারী ও অস্ত্রবাজদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেন ডিলসকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তারিকুল হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার পর সোমবার সকাল ৮টার মধ্যে শিক্ষার্থীরা হল ছেড়ে চলে যাওয়ায় ক্যাম্পাস নিস্তব্ধ হয়ে গেছে। তবে নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এখনও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের সম্মান প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম যথারীতি চলবে বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। যথাসময়ে মেধাক্রম অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের সাক্ষাতকার গ্রহণ করা হবে। ভর্তির তারিখ পরে জানিয়ে দেওয়া হবে বলেও জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা অধ্যাপক ইলিয়াছ হোসেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর সারওয়ার জাহান বলেন, আমরা দ্রুত ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনব। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কবে খুলবে এ সিদ্ধান্ত সিন্ডিকেট নেবে। তবে বন্ধ খুব দীর্ঘায়িত হবে না বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২৩২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।