ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

গ্রামীণ জীবনকে উন্নত করতে পারিনি বলেই মানুষ শহরমুখী: অর্থমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১০
গ্রামীণ জীবনকে উন্নত করতে পারিনি বলেই মানুষ শহরমুখী: অর্থমন্ত্রী

ঢাকা: অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছেন, মানুষের শহরমুখী প্রবণতা বন্ধ করতে হলে বাংলাদেশের গ্রামগুলোকে সুইজারল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়ার গ্রামের মত উন্নত ও সমৃদ্ধ করতে হবে। সৃষ্টি করতে হবে সব ধরনের নাগরিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন বিশেষ গ্রামীণ জনপদ।



অর্থমন্ত্রী মঙ্গলবার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ‘ঘরে ফেরা কর্মসূচি’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘গ্রামে এমন জনপদ সৃষ্টি করতে হবে যাতে সেখানে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ সব নাগরিক সুবিধা থাকবে। সেই জনপদগুলোকে ছোট ছোট শহরে পরিণত করতে হবে। নইলে উন্নয়নে সমতা আসবে না। ’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা গ্রামীণ জীবনকে উন্নত এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারিনি বলে মানুষ শহরমুখী হচ্ছে। এছাড়া সার্বিকভাবে দেশে জনসংখ্যার বিস্ফোরণ ঘটছে। এটা দেশের জন্য মোটেও ভালো নয়। ’

সুইজারল্যান্ড ও দণি কোরিয়ার উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘এ দুই দেশে একটা গ্রামের সব মানুষ কয়েকটি বহুতল ভবনে বাস করেন। আমরাও যদি আমাদের গ্রামগুলোতে সেই ধরনের ব্যবস্থা চালু করতে পারি তবে সীমিত জায়গায় অনেকে থাকতে পারবেন। কৃষি জমি রক্ষা পাবে। এজন্য অবশ্যই শহর ও গ্রামের বৈষম্য কমাতে হবে এবং গ্রামে কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। ’

অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, ‘এ অবস্থা থেকে রক্ষার উপায় হচ্ছে গ্রামে কর্মসংস্থান, উৎপাদনশীলতা সৃষ্টি করা এবং জীবনযাত্রায় গতি আনা। এজন্য ঘরে ফেরা এবং একটি বাড়ি একটি খামার কর্মসূচির মত কার্যক্রম বৃদ্ধি করা উচিত। ’

ছিন্নমূল বস্তিবাসীদের ঋণ দিয়ে স্বাবলম্বী করার মাধ্যমে তাদের স্ব-গৃহে ফিরিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে কৃষি ব্যাংক ‘ঘরে ফেরা’ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। ১৯৯৯ সালের এ কর্মসূচি শুরু হলেও ২০০২ সালে তা বন্ধ হয়ে যায়। সরকারের ঘরে ফেরা কর্মসূচী থেকে পাওয়া ৫ কোটি টাকা দিয়ে এবছর আবার এ কর্মসূচি শুরু করে ব্যাংকটি।

অনুষ্ঠানে ঢাকার ১৪টি বস্তির ২৫৪ পরিবারকে সর্বনিম্ন ৪০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা করে ঋণ দেওয়া হয়েছে। এসব পরিবার গ্রামে ফিরে গিয়ে নানা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হবে এবং গ্রামে স্থায়ী হবে বলে আশা করছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

ঘরে ফেরা কর্মসূচিকে দলগতভাবে বাস্তবায়নের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘দরিদ্র মানুষের উন্নয়নের ক্ষেত্রে সমবায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। অথচ আমাদের দেশে সমবায়ের মত ব্যর্থ কার্যক্রম আর কিছু নেই। এ অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। ’

কৃষি ব্যাংকের পরিচালনা পর্যদের চেয়ারম্যান খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী কৃষি ব্যাংকে বিকেন্দ্রীকরণ এবং জনসম্পৃক্ত হওয়ার আহবান জানান।

তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় বলে আসছি সারাদেশের জন্য একটি গ্রামীণ ব্যাংক ঠিক নয়। তেমনি সারাদেশের জন্য এক কৃষি ব্যাংকও ভালো নয়। বিভাগীয় পর্যায়ে কৃষি ব্যাংককে স্বয়ং সম্পূর্ণ করতে হবে। ’

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমানও বক্তব্য রাখেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।