ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

যশোরে বড় গরুর ক্রেতা নেই

উত্তম ঘোষ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৮
যশোরে বড় গরুর ক্রেতা নেই যশোরে হাটে গুরুকে খাওয়াচ্ছেন এক খামারি। ছবি: বাংলানিউজ

যশোর: যশোরে শেষ মুহূর্তে গরুর হাটে জমজমাট বেচাকেনা শুরু হয়েছে। তবে ছোট ও মাঝারি গরু বেচাকেনা ভালো হলেও বড় গরুর ক্রেতা মিলছে না। এতে হতাশ খামারি ও ব্যাপারীরা।

মঙ্গলবার (২১ আগস্ট) দুপুরে যশোর জেলা শহরের একমাত্র অস্থায়ী গরুর হাট উপশহর ঈদগাহ মাঠে গিয়ে দেখা যায়, গত তিনদিনের তুলনায় হাটে চারগুণ ক্রেতার ভিড়। জেলার অন্যান্য পশুহাটে অবিক্রিত গরু এবং খামারিরা শেষ মুহূর্তের হাটে গরু বিক্রি করতে অস্থায়ী এসেছেন।

শেষ মুহুর্তে গরু বিক্রির সর্বোচ্চ চেষ্টাও করছেন বিক্রেতারা।  

গরু বিক্রেতা ও হাট সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত তিনদিন সকাল থেকে রাত ১০টা অবদি হাট চালু থাকলেও হাটে ক্রেতা খুবই কম ছিল। প্রতিদিন দুই থেকে চারটির বেশি গরুর বেচাকেনা হয়নি। তবে সোমবার (২০ আগস্ট) বিকেল থেকে হাট পুরোপুরি জমে ওঠে। এদিন হাটে শতাধিক গরু বিক্রি হয়েছে। তবে বিক্রিত গরুগুলোর অধিকাংশই মাঝারি সাইজের যা ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকার মধ্যেই ছিল। এছাড়াও ছোট গরুরও বেচাকেনা ভালো। তবে দুই থেকে পৌনে চার লাখ টাকা দামের বড় সাইজের গরুর ক্রেতা একদম নেই বললেই চলে।

যশোর সদর উপজেলার ঘুরুলিয়া গ্রামের আজিজুল ইসলাম ও কামরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, সারাজীবন গরু পালন করেছি। তবে দুইটি কালো বাছুর সৌখিনতার বসে গত তিন বছর ধরে পালন করে অনেক বড় করেছি। নিজেদের থাকার ঘরে ফ্যান না থাকলেও গোয়ালে বৈদ্যুতিক আলো, ফ্যান, মশারি সব ব্যবস্থা রেখেই এদের লালন-পালন করেছি। প্রতিমাসে খড়, ভূষি, ভাত, ওষুদের পেছনেও প্রচুর টাকা ব্যয় করেছি।  

গরু দুইটি বিক্রির জন্য সোমবার উপশহর হাটে এনেছি। এরমধ্যে একটির দাম ৩ লাখ ৬০ হাজার অপরটি ২ লাখ ৪০ হাজার দাম নির্ধারণ করেছি। কিন্তু এ দামে গরু কেনার ক্রেতা নেই বললেই চলে। দুই-চারজন দাম বলেছে, তাও অর্ধেকের কম। এতে হাটে গরু বিক্রির আশা ছেড়েই দিয়েছি।

হাট ঘুরে দেখা যায়, দুই লাখের বেশি টাকা দামের গরুর বেচাকেনা নেই বললেই চলে। তবে, মাঝারি ও ছোট সাইজের বেচাকেনা জমজমাট।

যশোরের চৌগাছা উপজেলার সুখপুকুরিয়া থেকে গরু বিক্রি করতে আসা ইমদাদুল গাজী বাংলানিউজকে বলেন, বাবা-চাচাসহ চার জনে মিলে পাঁচটি গরু হাটে এনেছিলেন তিনি। তবে চারটি গরুই ৫০ থেকে ৭০ হাজারের মধ্যে বিক্রি করেছেন। একটা গরু বিক্রি শেষ হলেই বাড়ি ফিরবেন তারা। ইমদাদুল আরও বলেন, এবার ভারতীয় গরু না আসায় যেটুকু দাম পেয়েছি, তাতেই খুশি আমরা। নিজেদের বাড়ির খড়-কুটো খাওয়ায়ে গরু পালন করে এর বেশি লাভের প্রয়োজন পড়ে না।  

ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অধিকাংশ ক্রেতাই যশোর জেলা শহর ও আশপাশের গ্রামের বাসিন্দা। তবে কর্মের তাগিদে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় বসবাস করেন তারা। ঈদের ছুটিতে কেউ সোমবার আবার কেউ মঙ্গলবার বাড়ি ফিরে গরু কিনতে হাটে এসেছেন। আবার কেউ কেউ শহরের বাসায় গরু রাখার জায়গার সংকটের কথা বিবেচনা করে শেষ দিনে গরু কিনছেন।  

যশোর উপ শহর গরু হাটের ইজারাদার সৈয়দ মুনছুর আলম বাংলানিউজকে বলেন, বিগত চারদিনে গরু বেচাকেনা ছিল না বললেই চলে। তবে সোমবার থেকে পুরোদমে বেচাকেনা শুরু হয়েছে। আশা করছি মঙ্গলবার রাত ১২টা অবদি ভালো বেচাকেনা হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭১২ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৮
ইউজি/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।