ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

কাপ্তাই হ্রদে জেলেদের হাসি, প্রথমদিন রাজস্ব ১৭ লাখ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০১৮
কাপ্তাই হ্রদে জেলেদের হাসি, প্রথমদিন রাজস্ব ১৭ লাখ কাপ্তাই হ্রদ থেকে ধরা কিছু মাছ। ছবি: বাংলানিউজ

রাঙামাটি: তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরতে শুরু করেছেন জেলেরা। 

বুধবার (১ আগস্ট) সারাদিনে কাপ্তাই হ্রদ থেকে শিকার করা হয়েছে আনুমানিক ১১৭ মেট্রিকটন মাছ। একদিনেই সরকার রাজস্ব আদায় করেছে ১৭ লাখ টাকা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছে মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) রাঙামাটি শাখা।

এর আগে মঙ্গলবার (৩১ জুলাই) জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ হ্রদে মাছ ধরার ওপর তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর জেলেরা বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় মাছ ধরতে নেমে পড়েন।  

বুধবার সকাল থেকে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের চালান রাঙামাটি মৎস্য অবতরণ ঘাটে আনা হয়। সকাল থেকে জেলার স্থানীয় মাছ বাজারগুলোতেও বিপুল মাছ দেখা যায়।

কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছসহ অন্যান্য মা মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিত করতে এবং হ্রদে অবমুক্ত করা পোনার সুষ্ঠু বৃদ্ধির লক্ষ্যে পহেলা মে থেকে কাপ্তাই হ্রদের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়।  

মাছ ধরা চালু হওয়ার পর রাঙামাটির বরফকলগুলোতে পুরোদমে বরফ উৎপাদন শুরু হয়েছে। ফলে কর্মসংস্থান হয়েছে অনেক শ্রমিকে। হ্রদের মৎস্যজীবী, ব্যবসায়ীদের মধ্যে কর্ম চাঞ্চল্য ফিরেছে।  

বিএফডিসি রাঙামাটি শাখার ব্যবস্থাপক কমান্ডার (নৌ-বাহিনী) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, নিষেধাজ্ঞা শেষে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা শুরু হয়েছে। সরকারিভাবে নিবন্ধিত ২১ হাজার স্থানীয় জেলেসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজারো জেলে উৎসবমুখর পরিবেশে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরছেন।  

প্রথমদিনে হ্রদ থেকে চাপিলা, কাঁচকি ও আইর মাছ বেশি ধরা পড়েছে জানিয়ে কমান্ডার আসাদ বলেন, রাঙামাটি মৎস্য অবতরণ ঘাট, মহালছড়ি ও কাপ্তাই মিলে সারাদিনে অন্তত ১১৭ মেট্রিক টন মাছ সরকারি রয়েলটি দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গেছেন ব্যবসায়ীরা। এতে করে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে প্রায় ১৭ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট, নদী উপকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কাজী মো. বেলাল উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, চলতি মৌসুমে মাছ আহরণ বন্ধ থাকার সময় প্রাকৃতিক পরিবেশ মা মাছের ডিম ছাড়ার জন্য সহায়ক ছিল। এজন্য হ্রদের প্রায় ৩৯ প্রজাতির দেশীয় মা মাছ ডিম ছাড়ার সুযোগ পেয়েছে।

পাশাপাশি কার্প জাতীয় মাছের যে চারটি প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র ছিল তার মধ্যে মাইনী চ্যানেল থেকে এ বছর স্বল্প পরিমাণে কার্প জাতীয় মাছের ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে।  

এদিকে, বিএফডিসি কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০১৭ সালের ১৩ জুন রাঙামাটিতে সংঘটিত ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে কাপ্তাই হ্রদের মৎস্য সম্পদও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যোগাযোগ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মাছ পরিবহনও বন্ধ ছিল। এতোকিছুর পরও গত বছর মাছ ধরা মৌসুমে ১০ হাজার ১২৩ মেট্রিক টন মাছ আহরণ করা হয় এবং সরকার রাজস্ব আদায় করে ১৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০১৮
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।