ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

গ্রাহকদের সন্তুষ্টিই প্রথম লক্ষ্য ইউএস-বাংলা গ্রুপের

বিজনেস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৮ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৮
গ্রাহকদের সন্তুষ্টিই প্রথম লক্ষ্য ইউএস-বাংলা গ্রুপের ইউএস-বাংলা গ্রুপ লোগো

ঢাকা: বাংলাদেশের অন্যতম ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ইউএস-বাংলা গ্রুপ। ইতিমধ্যে ইউএস-বাংলা দেশের বহুমাত্রিক ব্যবসায়িক গ্রুপ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। ইউএস-বাংলা’র মিশন কিংবা ভিশন বলতে বাংলাদেশের জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা। সে লক্ষ্যেই এগিয়ে চলেছে।

ইউএস-বাংলা গ্রুপের অন্যতম প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে- ইউএস-বাংলা এসেটস্, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স, ইউএস-বাংলা মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল, গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, ইউএসবি এক্সপ্রেস, ইউএস-বাংলা লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ, ইউএস-বাংলা ফুটওয়্যার, ইউএস-বাংলা হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ, ইউএস-বাংলা অটোমোবাইলস্, ইউএস-বাংলা ফুডস্, ইউএস-বাংলা ফ্যাশন্সসহ আরো নানাবিধ প্রতিষ্ঠান।

ইউএস-বাংলা গ্রুপের যাত্রা শুরু হয়েছে নয় বছর আগে।

কিন্তু সময়ের হিসাবে ব্যবসার পরিধি বেড়ে চলেছে জ্যামিতিক হারে, যা বাংলাদেশে অনেকটাই বিরল। পৃথিবীর ঘন বসতিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। জনসংখ্যার আধিক্যের কারণে দিন দিন আবাসন সংকট প্রকট আকার ধারণ করছে বাংলাদেশে। আবাসন সংকট নিরসনে ইউএস-বাংলা গ্রুপ ঢাকার অতি কাছে নতুন ঢাকা খ্যাত পূর্বাচলে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মাত্র ২০ মিনিট দূরত্বে গড়ে তুলেছে পূর্বাচল আমেরিকান সিটি। এখানে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল, খোলা মাঠসহ সবুজে ঘেরা একটি আধুনিক শহরের রূপ নিবে, যা একটি আধুনিক শহরের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। পূর্বাচল আমেরিকান সিটি প্রকল্পে থাকছে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, ইউএস-বাংলা মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল, ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, স্পোর্টস কমপ্লেক্স, অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টার, মডার্ন শপিং কমপ্লেক্স এবং স্বনামধন্য আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এর হেড কোয়ার্টারসহ নানাবিধ প্রতিষ্ঠান। সবুজে ঘেরা আধুনিক শহর পূর্বাচল আমেরিকান সিটি নির্মাণে ইউএস-বাংলা গ্রুপ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।  

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স, ইউএস-বাংলা গ্রুপের একটি স্বনামধন্য আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্স। ১৭ জুলাই ২০১৪ সালে যাত্রা শুরু করে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স বাংলাদেশের এয়ারলাইন্স পরিবহন শিল্পে একের পর এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে, অর্জন করেছে সাফল্যের মাইলফলক।

বাংলাদেশ তথা সারাবিশ্বের প্রতিযোগিতামূলক এভিয়েশন ব্যবসায় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স যাত্রা শুরু করেছিল ৭৬ আসন বিশিষ্ট দু’টি কানাডার বোম্বারডিয়ার তৈরি ড্যাশ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্রাফট দিয়ে ঢাকা-যশোর ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে। শুরু থেকেই নিজস্ব ক্যাটারিং, ইন হাউজ ট্রেনিং সুবিধা, আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ইন-ফ্লাইট সার্ভিস, যা যাত্রী সাধারণের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে।  

এক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সব চালু বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা ফ্লাইট পরিচালনা করে সারা দেশের জনগণকে স্বল্পতম সময়ে আকাশপথের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে করেছে সূদৃঢ়। বর্তমানে অভ্যন্তরীণ রুটে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, যশোর, সৈয়দপুর, বরিশাল, রাজশাহী রুটে প্রতিদিন ফ্লাইট পরিচালনা করছে। অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনার সাফল্যের পর ইউএস-বাংলা যাত্রা শুরুর দু’বছরের মধ্যে ১৫ মে ২০১৬ তারিখে ঢাকা-কাঠমান্ডু রুটে ফ্লাইট পরিচালনার মধ্যেমে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে কলকাতা, মাস্কাট, দোহা, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক ও গুয়াংজু রুটে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করে আসছে।  

বর্তমানে ইউএস-বাংলার বহরে চারটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ ও তিনটি ড্যাশ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্রাফট রয়েছে। রয়েছে নিজস্ব ইন-ফ্লাইট ম্যাগাজিন “ব্লু স্কাই”। বর্তমানে সপ্তাহে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটে ৩০০টির অধিক ফ্লাইট পরিচালিত হয়। চারবছরে প্রায় ৪০ হাজার ফ্লাইট পরিচালনা করেছে, যা বাংলাদেশের এভিয়েশনের ইতিহাসে একটি রেকর্ড। ৯৮.৭% অন-টাইম ফ্লাইট পরিচালনার রেকর্ড নিয়ে অভ্যন্তরীণ রুটে মোট যাত্রী সংখ্যার ৫০ ভাগের অধিক যাত্রী বহন করছে ইউএস-বাংলা।

যাত্রীসেবার অনন্য নজির স্থাপন করায় স্বীকৃতিস্বরূপ ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স অভ্যন্তরীণ রুটে গত তিন বছর ধরে সেরা এয়ারলাইন্স এর মুকুট অর্জন করতে পেরেছে। ইউএস-বাংলার টিকিট সংগ্রহ করার জন্য রয়েছে অন-লাইন বুকিং সুবিধা। রয়েছে হোম ডেলিভারি সুবিধাও। সারাদেশে নিজস্ব ৩০টি সেলস্ অফিস। এছাড়া কাঠমান্ডু, কলকাতা, মাস্কাট, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, দোহা, গুয়াংজু, কানাডা, নিউইয়র্ক এ নিজস্ব সেলস্ অফিস। ফ্রিকোয়েন্ট ফ্লাইয়ারদের জন্য রয়েছে “স্কাইস্টার” প্যাকেজ। যার মাধ্যমে শুধু টিকিট ক্রয়েই সুবিধা পাবে না বরং যাত্রীরা বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ধরনের ডিসকাউন্ট সুবিধাও পেয়ে থাকে।  

ভাইব্রেন্ট ব্র্যান্ড নিয়ে ইউএস-বাংলা গ্রুপের অন্যতম প্রতিষ্ঠান ইউএস-বাংলা ফুটওয়্যার লিমিটেড আত্মপ্রকাশ করেছে। ফ্যাশন সচেতন গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী দেশের মানুষের আধুনিক ও মননশীল চিন্তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই ভাইব্রেন্ট কাজ করছে। ভাইব্রেন্ট প্রোডাক্টের মান ও দামের প্রতি বিশেষভাবে লক্ষ্য রেখে গ্রাহকদের উন্নত সেবা প্রদান করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

প্রাথমিকভাবে প্রায় ৭০০ মডেলের পুরুষ, নারী ও শিশুদের জন্য নিত্য নতুন জুতার কালেকশন রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে রাজধানী ঢাকার মৌচাক, গুলশান ও রামপুরা এবং চট্টগ্রামের হালিশহরে ভাইব্রেন্টের কার্যক্রম শুরু করেছে। সেই সঙ্গে সারাদেশের জেলা শহরে ধারাবাহিকভাবে ভাইব্রেন্টের শো-রুম খোলা হবে। ২০১৮ সালের মধ্যে প্রায় ১০টি আউটলেটে কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। গ্রাহকদের সুবিধার্থে প্রত্যেকটি আউটলেটেই নগদ ক্রয় ছাড়াও ভিসা ও মাস্টার কার্ড গ্রহণ করা হবে। অনলাইন এর মাধ্যমেও ভাইব্রেন্টের সব পণ্য গ্রাহকসেবায় অন্তর্ভূক্ত হয়েছে।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের অন্যতম সহযোগী প্রতিষ্ঠান অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিস ইউএসবি এক্সপ্রেস, যা বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সেবাপ্রদানকারী কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। ইউএসবি এক্সপ্রেস এর মূলভিত্তি হচ্ছে আপনার পণ্যের যথাযথ নিরাপত্তা প্রদান, টেকনোলজিক্যালি পণ্যের অবস্থান নিশ্চিতকরণ, দ্রুততম সময়ে নির্ধারিত গন্তব্যে পণ্য পৌঁছানো।

ইউএস-বাংলা গ্রুপের অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ। মেধা, ছাত্রী, ভাই-বোন, স্বামী-স্ত্রী, ক্ষৃদ্র নৃগোষ্ঠী, মুক্তিযোদ্ধা ও খেলোয়াড় কোটায় ভর্তিচ্ছুরা সর্বোচ্চ ১০০% পর্যন্ত স্কলারশিপে ভর্তি হতে পারছেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ে। এসএসসি ও এইচএসসির ফলাফলের ওপর ভিত্তি করেও পাচ্ছেন বিশেষ ছাড়। এছাড়া করপোরেট ও গ্রুপভিত্তিক ভর্তি হলে রয়েছে অতিরিক্ত ওয়েভার।  

গ্রিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাচেলর ও মাস্টার্স পর্যায়ের প্রোগামগুলোর মধ্যে রয়েছে বিবিএ, এমবিএ, ইএমবিএ, এলএলবি, এলএলএম, সমাজবিজ্ঞান, সিএসই, ইইই, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইংলিশ এবং ফিল্ম, টেলিভিশন ও ডিজিটাল মিডিয়া।

গ্রিন ইউনিভার্সিটির যাত্রা ২০০৩ সালে। বর্তমানে মিরপুর শেওড়াপাড়ায় মোট তিনটি ভবনে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। যা শিগগির পূর্বাচল আমেরিকান সিটিস্থ স্থায়ী ক্যাম্পাসে চলে যাবে। সেখানেই সুবিশাল জায়গা আর সবুজে আচ্ছাদিত পরিবেশে আবাসিক শিক্ষার্থী হিসেবে পড়ালেখা করবেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা।

বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে রয়েছে ইউএস-বাংলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পূর্বাচল আমেরিকান সিটিতে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নয়া দিল্লি ভিত্তিক “এস্ট্রোন হসপিটাল অ্যান্ড হেলথ্ কেয়ার কনসালট্যান্টস (প্রা.) লিমিটেড” আধুনিক সব সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন চিকিৎসা সেবার কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়, ঠিক সেই ধরনের ইউএস-বাংলা মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালের কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে পূর্বাচলে হসপিটালের অবকাঠামো উন্নয়নের কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে।  

এছাড়া রয়েছে ইউএস-বাংলা লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ সম্পূর্ণ রফতানিমূখী একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান। চলতি বছর শেষ প্রান্তিকে ইউএস-বাংলা হাইটেক আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। যেখানে নানাধরনের ইলেকট্রনিক পণ্য উৎপাদন করার পরিকল্পনা রয়েছে। দেশীয় চাহিদা পূরণের পর বিদেশেও রফতানির পরিকল্পনা আছে।

ইউএস-বাংলা গ্রুপের প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে সর্বোচ্চ কাস্টমার সন্তুষ্টি, করপোরেট সংস্কৃতি মেনে চলা, সর্বোপরি একটি সুনিয়ন্ত্রিত টিম গঠন করা, যা দিয়ে আর্থ ও সামাজিকভাবে এগিয়ে চলেছে। ইউএস-বাংলা গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলি কোয়ালিটি সিস্টেমের ক্ষেত্রে আইএসও ৯০০১:২০০৮ দ্বারা সার্টিফাইড।

ইউএস-বাংলা গ্রুপ করপোরেট জগতে খ্যাতি অর্জনের সঙ্গে সঙ্গে করপোরেট স্যোসাল রেসপন্সিবিলিটির (সিএসআর) প্রতি সব সময় সজাগ। সব প্রতিষ্ঠানে প্রায় তিন হাজারের অধিক লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে ইউএস-বাংলা গ্রুপ। যেমন রয়েছে ইউএস-বাংলা’র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ তেমনি আছে হাসপাতালে বিনা খরচে চিকিৎসার সুযোগ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৭ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৮
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।