ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

বাজেট

রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অবাস্তব: সিপিডি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৪ ঘণ্টা, জুন ৮, ২০১৮
রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অবাস্তব: সিপিডি বক্তব্য দিচ্ছেন ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। ছবিধ শাকিল/বাংলানিউজ

ঢাকা: ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৯৬ হাজার ২০১ কোটি টাকা। যা ‘বাস্তবায়ন অবাস্তব’ বলে মনে করে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

শুক্রবার (০৮জুন)  রাজধানীর গুলশানের লোকশোর হোটেলে ‘জাতীয় বাজেট পর্যালোচনা ২০১৮-১৯’ শীর্ষক বাজেট প্রতিক্রিয়ায় সংস্থাটির সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এ কথা বলেন।  

তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ৮০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বেশি ধরা হয়েছে।

যা জিডিপির তুলনায় ৩০ শতাংশ। প্রকৃত পক্ষে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা আরো বেশি। অর্থাৎ জিডিপির তুলনায় ৪০ শতাংশ। বাজেটে এই অতিরিক্ত লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন অবাস্তব।

‘আগামীতে দেশের অর্থনীতির সামনে যে চ্যালেঞ্জগুলো আসছে, তা মোকাবেলায় কার্যকর পদক্ষেপ বাজেটে নেই। পাশাপাশি বাজেটে রাজস্ব আদায়, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বাস্তবায়ন নিয়েও সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে।

সিপিডি মনে করছে, বাজেটে যে বাড়তি ব্যয়ের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে, তার বড় অংশ যাবে জনপ্রশাসন ও সুদ ব্যয় খাতে। সে তুলনায় উন্নয়ন ব্যয় বৃদ্ধির হার একটি জায়গায় আটকে আছে।
 
বাজেট পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, এখন দেশের অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সরকার ৬০ শতাংশ ঋণ নিয়েছে। এতে সরকারের টেকসই ঋণ গ্রহণের সক্ষমতা বিনষ্ট হওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়। বাজেটে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ নিলে বেশি সুদ দিতে হয়। অন্যদিকে ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে বিনিয়োগে বাধাগ্রস্ত হবে এবং তারল্য সংকট দেখা দেবে। বিষয়টি সরকারের জন্য অনেকটা শাখের করাতের মতোই বলে মনে করছে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি।  

ড. দেবপ্রিয় বলেন, সমমূলধনের ক্ষেত্রে বিনিয়োগের নামে ২২ হাজার কোটি টাকা পুঁজি হিসেবে রাখা হয়েছে। কিন্তু এই পুঁজি কোথায় বিনিয়োগ করা হবে তা পরিষ্কার করা হয়নি। সরকারকে পরিষ্কার করতে হবে জনগণের করের বিপুল পরিমাণ এই অর্থ কোথায় ব্যয় করা হবে।  

‘তবে ধারণা করা হচ্ছে, সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘভাতা এবং সরকারি ব্যাংকের মূলধন যোগানের ক্ষেত্রেই এই অর্থ ব্যয় হবে। যা আমরা কোনোভাবেই সমর্থন করি না। ’

প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের ক্ষমতার সমালোচনা করে সিপিডি বলছে, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ৫৩ শতাংশ প্রকল্পকেই চলমান প্রকল্প হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আর এক-চতুর্থাংশ প্রকল্পকে শেষ হয়েছে বলে দেখানো হচ্ছে। বাকিটা প্রকল্প গ্রহণ বর্জনের মধ্যে রয়েছে। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি)-এর ১৪ প্রকল্পর কোনো অগ্রগতি নেই।

বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের পদক্ষেপের সমালোচনা করে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এই মুহূর্তে বাস্তবায়নাধীন পদ্মাসেতুর সময় বাড়ানো হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় উৎসাহের বশে এই বছর প্রকল্পটি শেষ হবে জানালেও বাস্তবে তা হবে না।  

‘প্রকল্পটিতে সময় বেড়েছে দেড়গুণ আর ব্যয় বেড়েছে দ্বিগুণ,’ যোগ করেন  তিনি।  

সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংগঠনের সম্মানিত ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এবং গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খানসহ সংস্থাটির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ০২৩৮ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০১৮
এমএফআই/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।