ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতে ‘কমিশন’ গঠনের সুপারিশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৫ ঘণ্টা, মে ২২, ২০১৮
পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতে ‘কমিশন’ গঠনের সুপারিশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: টেকসই কৃষি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতকরণে ‘মূল্য কমিশন’ গঠনের সুপারিশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। কৃষিখাতে স্বয়ম্ভরতার পাশাপাশি খাদ্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় আইনি কাঠামো প্রণয়ণের জন্যও মতামত তুলে ধরেছেন তারা। 

মঙ্গলবার (২২ মে) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়নে  ‘কৃষিখাতে স্বয়ম্ভরতা ও খাদ্য অধিকার’ শীর্ষক এক জাতীয় সেমিনারে বিশেষজ্ঞরা এ মতামত দেন।  

‘খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ’ আয়োজিত এই জাতীয় সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ।

সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক খাদ্য মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।  

এতে বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য কৃষিবিদ ড. মাহবুবার রহমান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক  কৃষিবিদ হামিদুর রহমান,  ক্রিশ্চিয়ান এইডের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক  সঞ্জীব কুমার সঞ্জয়।  

এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের  সাধারণ সম্পাদক  মহসিন আলী।  

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, নতুন নতুন কৃষি প্রযুক্তির ব্যাপকহারে সম্প্রসারণের  মাধ্যমে কৃষির উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব।  

প্রয়োজনীয় কৃষি উপকরণ সহায়তা বিশেষত কৃষি বিনিয়োগের সুদ কমানো ও কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিত করে দেশের কৃষি ও কৃষকের উন্নয়ন সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, দেশে প্রয়োজনীয় খাদ্য উৎপাদিত হলেও যথাযথ বণ্টন ব্যবস্থার অভাবে খাদ্য সকলের কাছে পৌঁছায় না, পাশপাশি রয়েছে নীতিমালা অনুযায়ী বাস্তবায়নের সমস্যা। এজন্য ৪ কোটি অতি দরিদ্র ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ‘খাদ্য ও পুষ্টি অধিকার’ নিশ্চিত করতে খাদ্য অধিকার আইন করা প্রয়োজন।

কৃষিবিদ ড. মাহবুবার রহমান বলেন, কৃষিতে আমরা এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ সুতরাং প্রয়োজন খাদ্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় আইনি কাঠামো প্রণয়ন করে সকলের নিকট প্রয়োজনীয় খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা।

কৃষিবিদ হামিদুর রহমান বলেন, আমরা যে খাদ্য গ্রহণ করি তার পুষ্টিমান-এর বিষয়টি আমাদের বিবেচনায় রাখা। দেশের বাজার ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তন কৃষির উৎপাদনকে প্রভাবিত করে থাকে সুতরাং খদ্যের স্বয়ম্ভরতার জন্য এগুলো প্রধান বিবেচ্য বিষয় হওয়া দরকার এবং প্রয়োজন যথাযথ গবেষণা ও সম্প্রসারণ কার্যক্রম।  

সেমিনারে বক্তারা বলেন, দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ১৮ শতাংশ আসছে কৃষি (শস্য, মৎস্য, প্রাণী ও বন) খাত থেকে। এর মধ্যে শস্য খাতের অবদান ১৩ শতাংশ। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের যত অর্জন আছে, তার মধ্যে কৃষি খাতে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। টেকসই কৃষি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হলে সকল মানুষের খাদ্য অধিকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার প্রধান শর্ত পূরণ হবে।  

সেমিনারে কৃষিখাতে স্বয়ম্ভরতা ও খাদ্য অধিকার নিশ্চিতে ৫টি সুপারিশ  হয়। এর মধ্যে টেকসই কৃষি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় কৃষক উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতকরণে ‘কমিশন’ গঠন করা,  কৃষিখাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে বাজেট বাড়ানো, কৃষিখাতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, ভালো ফসল উত্তোলন ব্যবস্থাপনা ও আগামীতে কৃষি শ্রমিকের ঘাটতি বিবেচনায় নিয়ে কৃষি ব্যবস্থার যান্ত্রিকীকরণে প্রয়োজনীয় ভর্তুকি দেওয়া, কৃষি জমি সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় নীতি/আইন প্রণয়ন করা ও ৫ দশমিক ৪ কোটি অতি দরিদ্র ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ‘খাদ্য ও পুষ্টি অধিকার’ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আইন প্রণয়নে অবিলম্বে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করা উল্লেখযোগ্য।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, মে ২২, ২০১৮
টিআর/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।