ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

পোশাক শ্রমিকদের জন্য নতুন ওয়েজ বোর্ড গঠন 

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৮
পোশাক শ্রমিকদের জন্য নতুন ওয়েজ বোর্ড গঠন 

ঢাকা: পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের জন্য নতুন ওয়েজ বোর্ড গঠন করেছে সরকার। শ্রমিকদের স্থায়ী মজুরি বোর্ডের চার সদস্যের সঙ্গে পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ও শ্রমিকদের একজন প্রতিনিধি নিয়ে এই মজুরি বোর্ড গঠনের ঘোষণা দিয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।

রোববার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন।
 
পোশাক খাতের জন্য এই মজুরি বোর্ডে বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান ও জাতীয় শ্রমিক লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার ভূঁইয়াকে এ বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

 
 
শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যে এই কমিটি পোশাক শ্রমিকদের বেতন কাঠামো যাচাই-বাছাই করে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দেবে। এরপর সরকার তাদের নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্ত করবে।
 
গুরুত্বপূর্ণ এই খাতের জন্য বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন বিদ্যমান বেতন-কাঠামো পর্যালোচনার জন্য মজুরি বোর্ড গঠনের দাবি জানিয়ে আসছিলো।

শ্রম আইন অনুযায়ী, ২০১৩ সালে সর্বশেষ এই খাতের জন্য মজুরি বোর্ড গঠন করে মজুরি ঘোষণা করা হয়।  
 
শ্রম প্রতিমন্ত্রী চুন্নু বলেন, নিয়মানুযায়ী সরকার ইচ্ছা করলে তিন বছরের মধ্যে রিভিউ করতে পারে এবং পাঁচ বছর পর পর্যালোচনার সুযোগ থাকে।  

বিজিএমইএ এক মাস আগে মজুরি বোর্ড গঠনের জন্য চিঠি দিয়েছে বলেও জানান তিনি।  
 
প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্থায়ী মজুরি বোর্ডে একজন জেলা জজ চেয়ারম্যান, মালিকদের পক্ষ থেকে একজন ও শ্রমিকদের পক্ষ থেকে একজন করে প্রতিনিধি এবং নিরপেক্ষ হিসেবে একজন সদস্য থাকেন। তবে যখন যে সেক্টরের জন্য মজুরি বোর্ড গঠন করা হয় সেখান থেকে মালিক ও শ্রমিক পক্ষ থেকে একজন করে প্রতিনিধি নেওয়া হয়।
 
বর্তমানে ৪৩টি সেক্টরের মধ্যে পোশাক শিল্পে বিগত মজুরি কাঠামোর মেয়াদ এ বছরের ডিসেম্বরে শেষ হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যে এই বোর্ড বাজার ও ইনফ্লেশন যাচাই করে মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে সুপারিশ দেবে সরকারের কাছে। পরবর্তী সরকার পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।
 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল শ্রমিকদের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী চুন্নু বলেন, আমরা আশা করি পাঁচ বছর শেষ হওয়ার আগেই পোশাক খাতের শ্রমিকদের জন্য মজুরি বোর্ডের অধীনে নতুন একটি মজুরি কাঠামো গঠন করতে পারবো।   
 
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পোশাক শিল্পে ৭০-৭৫ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব করে নারী, যিনি শ্রমিকদের স্বার্থ দেখবে, দাবির প্রতি সহানুভূতি থাকবে, সরকার-মালিক পক্ষের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকবে- তেমন একজন প্রতিনিধি হিসেবে নারী শ্রমিক প্রতিনিধি বাছাই করেছে সরকার। আফরোজা খান ২০১০ সালেও সদস্য ছিলেন। আর বিজিএমইএ নিজেরাই প্রতিনিধি দিয়েছেন।
 
শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব আফরোজা খান বলেন, আশা করি এই কমিটি দ্রুত প্রতিবেদন দিতে পারবে ও আমরাও চূড়ান্ত করে ঘোষণা দিতে পারবো।   
 
এফবিসিসিআই সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, আমরা খুব ক্রিটিক্যাল সময় পার করছি। আমাদের গ্রোথ হওয়ার কথা ছিল ১৪ শতাংশ, হয়েছে মাত্র ৬ শতাংশ। অন্যান্য দেশের গ্রোথ আমাদের থেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। কারণ, আমাদের বেসিক ‘র’ ম্যাটেরিয়াল নাই, গভীর সমুদ্র বন্দর নাই।  

‘আমি অন্য দেশের সঙ্গে পারছি না, সস্তা ইজ নট দ্য ক্রাইটেরিয়া। সস্তা ও দ্রুত হতে হবে। আমাদের বন্দরের সক্ষমতা অত্যন্ত দুর্বল। শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিলে পিছিয়ে পড়বো আরও। কিছু কিছু শ্রমিক সংগঠন শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরির চেষ্টা করছে। ’
 
তিনি বলেন, কমিটি ঘোষণার মধ্য দিয়ে আগামী দিনের সমস্যা সমাধান হবে, শ্রমিকদের অভুক্ত রেখে কারখানা চালাতে চাই না। তারা ভালো থাকলে উৎপাদন বাড়বে।
 
এ সময় বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

চার সদস্যের স্থায়ী নিম্নতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান হলেন- সিনিয়র জেলা জজ সৈয়দ আমিনুল ইসলাম। আর তিনজন সদস্য হলেন- মালিকপক্ষের প্রতিনিধি  বাংলাদেশ এমপ্লোয়ার্স ফেডারেশনের শ্রম উপদেষ্টা কাজী সাইফুদ্দীন আহমদ, শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধি ফজলুল হক মন্টু, তিনি বাংলাদেশ শ্রমিকলীগের কার্যকরী সভাপতি।  

আর নিরপক্ষে প্রতিনিধি হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যাপলয়ের অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৮/আপডেট: ১৫৫৪ ঘণ্টা
এমআইএইচ/এমএ/ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।