ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

সংগঠিত হচ্ছেন বিড়ি শ্রমিকরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৭
সংগঠিত হচ্ছেন বিড়ি শ্রমিকরা বিড়ি শিল্পের বিরুদ্ধে নানামুখি চক্রান্তের প্রতিবাদে সোমবার (২০ নভেম্বর) ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা নবাব বিড়ি ফ্যাক্টরির মাঠে বিড়ি শ্রমিকদের মানববন্ধন;ছবি: বাংলানিউজ

ময়মনসিংহ থেকে: ‘সরকারের কিছু আমলা, ব্রিটিশ-আমেরিকান কোম্পানি এবং অর্থমন্ত্রী মিলে বিড়িশিল্পকে ধ্বংস করার চক্রান্ত করছেন। আমরা সারাদেশের লক্ষ লক্ষ শ্রমিক। আমরা এই চক্রান্ত বন্ধের জন্য সংগঠিত হচ্ছি। আগামী ডিসেম্বরে আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় মহাসমাবেশ করবো। সেখানে কমপক্ষে ৭/৮ লাখ শ্রমিক ভাইয়ের সমাবেশ হবে। প্রধানমন্ত্রীকে আমরা জানাতে চাই, এই শিল্প বন্ধ হলে আমরা বেকার হয়ে যাবো, আমরা পথে বসবো।’

সোমবার (২০ নভেম্বর) বেলা ১টার দিকে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা নবাব বিড়ি ফ্যাক্টরির মাঠে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিন উদ্দিন বিএসসি।

এসময় উপস্থিত শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এখানে উপস্থিত শ্রমিক ভাই ও বোনেরা শিশু বয়স থেকে এই শিল্পের সাথে জড়িত।

এখন তারা বৃদ্ধ, বিড়িশিল্প বন্ধ হলে তাদের আর বেঁচে থাকার কোনো অবলম্বন থাকবে না। তাদের দ্বারা এখন অন্য কোনো কাজ করাও সম্ভব নয়। কিন্তু একটি মহল এই শিল্পকে ধ্বংস করতে উঠেপড়ে লেগেছে। তারা বিগত ২০ বছর ধরে বিড়ির উপর ট্যাক্স বাড়াতে বাড়াতে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে, বিড়ির উৎপাদনই বন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের মজুরি তো বাড়বেই না, বরং উল্টো কাজ হারিয়ে আমাদের পথে বসতে হবে। কিন্তু আমরা এ অবস্থা চলতে দেব না। আগামী দিনে আন্দোলন সংগ্রামে আপনারা (শ্রমিক ভাই-বোনেরা) পাশে থাকবেন না?বিড়ি শিল্পের বিরুদ্ধে নানামুখি চক্রান্তের প্রতিবাদে সোমবার (২০ নভেম্বর) ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা নবাব বিড়ি ফ্যাক্টরির মাঠে বিড়ি শ্রমিকদের মানববন্ধন;ছবি: বাংলানিউজএসময় মানববন্ধনে উপস্থিত শতশত নারী-পুরুষ শ্রমিক দু'হাত তুলে তার আহ্বানে সাড়া দেন। এসময় মানববন্ধনে উপস্থিত শ্রমিকদের হাতে হাতে 'অন্ন চাই কর্ম চাই, বাঁচার মতো বাচতে চাই', 'বিড়ি শ্রমিকরা সাগরে ভাসে, অর্থমন্ত্রী কি করে?', 'বেকার সমস্যা দূর না করে, বেকারত্ব বাড়ানো চলবে না, চলবে না' –এরকম বিভিন্ন স্লোগান লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।

'বাংলাদেশে আর বিড়ি শিল্প থাকবে না' মর্মে সম্প্রতি অর্থমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের প্রতিবাদে দফায় দফায় দেশব্যাপী বিভিন্ন আন্দোলন করছেন বিড়ি শিল্পে নিয়োজিত শ্রমিকরা। এরই অংশ হিসেবে চলতি মাসের ৫ তারিখ থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শুরু হয়েছে রোড শো। প্রথম দফায় গত ৫ নভেম্বর বাগেরহাট থেকে শুরু হয়ে খুলনা, যশোর, কুষ্টিয়া, পাবনা হয়ে সিরাজগঞ্জে এসে এ রোড শো ও পথসভার শেষ হয়।

রোববার (১৯ নভেম্বর) দ্বিতীয় দফায় কিশোরগঞ্জ জেলা থেকে শুরু হয়েছে তাদের এ আন্দোলন। যা আগামী ২৩ নভেম্বর টাঙ্গাইল জেলা সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হবে। সোমবার (২০ নভেম্বর) রোড শো ময়মনসিংহ হয়ে নেত্রকোনায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

মানববন্ধনে বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক হারিক হোসেনের পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এম কে বাঙালি, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, সদস্য শামীম ইসলাম, আবুল হাসনাত লাভবু, মুক্তাগাছা বিড়ি ফেডারেশনের নেতা জসিম উদ্দিন, সুভাষ ও নাজমুল প্রমুখ।

বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এম কে বাঙালি তার বক্তব্যে বলেন, বিড়িশিল্প একটি ঐতিহ্যবাহী শিল্প। এই শিল্প বাংলাদেশের নিজস্ব শিল্প। মালিক-শ্রমিকের কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে এই শিল্পের বিকাশ ঘটেছে। এতে সরকারের কোনো অবদান নেই। সুতরাং যে শিল্প বিকাশে সরকারের কোনো অবদান নেই সেই শিল্প বন্ধেরও কোনো অধিকার তাদের নেই। আমরা প্রয়োজনে জীবন দেব, তবু আমাদের রুটি রুজির একমাত্র অবলম্বন এই শিল্পকে ধ্বংস হতে, বন্ধ হতে দেবো না।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৭
এসআইজে/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।