ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

উপজেলায় অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপনে গড়িমসি, বাড়ছে ব্যয়ও

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৭
উপজেলায় অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপনে গড়িমসি, বাড়ছে ব্যয়ও

ঢাকা: ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে উপজেলা পর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির ছোঁয়া দিতে অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল নেটওয়ার্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয় চার বছর আগে। যাতে করে দ্রুত গতির ইন্টারনেট সুবিধা পেতে পারে দেশের বিভন্ন উপজেলার লোকজন। কিন্তু অপরিকল্পনার কবলে পড়ে বার বার বেড়েছে ব্যয়। এর পাশাপাশি সময়ও বাড়ানো হয়েছে দু’ ধাপে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) আবারও সময়-ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে।  কয়েকধাপে সময়-ব্যয় বাড়লেও প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৮৫ শতাংশ।

৪৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৩ সালের ১৮ জুন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপজেলা পর্যায়ে অপটিকাল ফাইবার নেটওয়ার্ক উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।  উপজেলা তথা গ্রাম পর্যায়ে তথ্য যোগাযোগ ও আধুনিক প্রযুক্তিগত সুবিধা সম্প্রসারিত করতে এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়।  জুন ২০১৬ সালেই উপজেলা পর্যায়ে অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপনের কথা। কিন্তু প্রকল্পের সময়-ব্যয় দুটোই বাড়ানো হয়। দ্বিতীয় ধাপে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৫৯০ কোটি ৬১ লাখ টাকা।  চলতি বছরের জুন মাসে প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা ছিলো।   কিন্তু নানা অজুহাতে হয়নি। সেজন্য আবারো সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য ৪৪৩টি উপজেলায় ৮ হাজার ৯০০ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপন করা।  দেশের ৪৪৩টি উপজেলায় ৮ হাজার ৬৬০ কিলোমিটার অপটিক্যাল ক্যাবল  লেইন মেটারিয়েল স্থাপন করা।  এছাড়াও স্থানীয় ও বৈদেশিক বিভিন্ন ধরনের টেলিযোগাযোগ যন্ত্রপাতি সংগ্রহ এবং স্থাপন করা।

অথচ এখনও  প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ রুপে শেষ হয়নি।  ফলে নতুন করে মার্চ ২০১৮ সাল পর্যন্ত প্রকল্পের সময় বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।  একই সঙ্গে অতিরিক্ত ৩২ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ছে।  ফলে এখন প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ৬২২ কোটি ৮৯ লাখে।  

ইতোমধেই প্রকল্পের তৃতীয় ধাপে সময়-ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)।

বিটিসিএল সূত্র জানায়,  নানা কারণে প্রকল্পের কাজ সঠিক সময়ে শেষ করা হয়নি।  নতুন করে কাজের কিছু আওতা বৃদ্ধির কারণে প্রকল্পের সময়-ব্যয় বাড়ছে।  প্রকল্প এলাকায় কিছু স্থানে ক্যাবলের সংখ্যা বাড়ানো হবে।  উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ক্যাবল স্থাপনে ব্যয়ও বাড়বে।

ক্যাবল স্থাপনে ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি ব্যাংক চার্জ খাতেও ব্যয় বেড়েছে।  মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষন খাতেও ব্যয় বেড়েছে।  নতুন বেতন কাঠামো বৃদ্ধির ফলে প্রকল্পের আওতায় সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন বেড়েছে।  যে কারণে আরও সময়-ব্যয় প্রয়োজন বলে জানায় সূত্র।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে চট্টগ্রামে পাহাড়ি এলাকায় কিছু স্থান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যে কারণে সময়-ব্যয় বাড়ছে।   

প্রকল্প সময়-ব্যয় বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বিটিসিএলের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ  মঈনুদ্দিন বলেন, এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেশি হয়েছে, ফলে অনেক স্থানে অপটিক্যাল ফাইবার আবারও স্থাপন করতে হয়েছে।  অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপনে সড়কসহ অনেক স্থানে কাটাকাটি করতে হয়।  কিন্তু অনেক বিভাগে আমাদের কাটতে দেয়নি।  তবে এখন শুষ্ক মৌসুম কাজের গতি ভালো।  আমরা আশা রাখছি আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো। ’

জুন ২০১৮ সালের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ করা হবে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রকল্প পরিচালক বলেন, আশা রাখছি আর সময় ও ব্যয় বাড়বে না।  এবার কাজ সম্পূর্ণভাবে শেষ হবে।  বর্ষাকালে আমরা কাজ করতে পারিনি।  এর পর বিভিন্ন অকেশনে ছুটির কারণেও কাজের বিলম্ব হয়েছে।  নতুনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত কাজ করা এবং কাজের আওতা বাড়ায় ব্যয়ও বাড়ছে।

নতুনকরে কক্সবাজারের মহেশখালী, রাজবাড়ীর কালুখালী, বরগুনার তালতলী এবং  বরিশালের হিজলা উপজেলা প্রকল্পের আওতায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।  ফলে ব্যয়-সময় বৃদ্ধির প্রয়োজন বলে জানায় বিটিসিএল।

বাংলাদেশ সময়: ০১১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০১৭
এমআইএস/এসএইচ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।