ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

কৃষি

সৌরবিদ্যুতের সেচে ফলবে ২৬৬০০ মেট্রিকটন ধান

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৭
সৌরবিদ্যুতের সেচে ফলবে ২৬৬০০ মেট্রিকটন ধান সৌরবিদ্যুতের সেচে ফলবে ২৬৬০০ মেট্রিকটন ধান

ঢাকা: মেহেরপুর জেলায় স্থাপিত অর্ধশতাধিক সোলার ইরিগেশন পাম্পে ফসল ফলাচ্ছেন চাষিরা। সেচকাজে এখন আর ডিজেল কিনতে হয় না বলে অধিকাংশ চাষিই এর ওপর নির্ভরশীল।

অন্য অনেক জেলার কৃষকরাও কৃষিজমিতে কম খরচে ঝামেলামুক্তভাবে সৌরশক্তি চালিত লো-লিফট পাম্পের (এলএলপি) এ সেচ সুবিধা পাওয়ায় দিন দিন বাড়ছে এর চাহিদা।

প্রযুক্তিটিকে সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)।

সৌরশক্তি ব্যবহারে বছরে ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ও ২৬ হাজার ৬০০ মেট্রিকটন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রাও নির্ধারণ করা হয়েছে।
 
সূত্র জানায়, ২০৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বিদ্যুৎ সুবিধা নেই- এমন ১৬৮টি উপজেলায় এ পাম্প স্থাপিত হবে। প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে এসব উপজেলার ৫ হাজার ৩২০ হেক্টর জমিতে সেচ সম্প্রসারণ করা হবে।

চলতি সময় থেকে ২০২০ সালের জুন মেয়াদে কাজগুলো সম্পন্ন করবে বিএডিসি।

তবে বরগুনা জেলায় পাম্প স্থাপনে সরকারের পাশাপাশি আর্থিক সহায়তা করবে জেলার বেসরকারি সংস্থা রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (আরডিএফ) ও ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (ইডকল)।

সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় এক কিউসেক পানি উৎপাদনকারী ২০ হর্স পাওয়ারের ১৫০টি ও ০ দশমিক ৫ কিউসেক পানি উৎপাদনকারী সাড়ে ৭ হর্স পাওয়ারের ২৫০টিসহ মোট ৪০০ সেট এলএলপি বসানো হবে। এজন্য তৈরি হবে উন্নতমানের পাম্প হাউজ।

২০ হর্স পাওয়ারের পাম্প নির্মাণে ৫৬ লাখ টাকা ও সাড়ে ৭ হর্স পাওয়ারে ৩৫ লাখ টাকা করে খরচ হবে। প্রতিটি সোলার সিস্টেমে সৌরশক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠে পানি সরবরাহ করা হবে। ২০ হর্স পাওয়ারের সোলার সেচ পাম্পে ৮০ থেকে ১০০ একর জমি চাষাবাদ করা যাবে।

এ প্রযুক্তিতে সেচের পানি অন্যের জমিতে চলে যায় না।   সোলার পাম্পে ড্রেনও তৈরি করতে হয় না, মাটির নিচ দিয়ে মোটা পাইপের মাধ্যমে জমিতে সেচ দেওয়া যায়। এজন্য ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪০০টি ফিতা পাইপ কেনা হবে।
 
পাঁচ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সোলার প্যানেল সরবরাহ করা হবে ২০ সেট। ৪০০টি করে সৌরশক্তি চালিত পাতকূয়া খনন ও ভূ-গর্ভস্থ সেচ নালা নির্মিত হবে। ছয়টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

বিএডিসি’র প্রধান প্রকৌশলী (ক্ষুদ্রসেচ) জিয়াউল হক বাংলানিউজকে বলেন, ‘সারা দেশেই পর্যায়ক্রমে সৌরশক্তির সেচ পাম্প স্থাপন করবো। প্রাথমিকভাবে বেশি হলেও পরবর্তী সময়ে কম খরচে সেচ সুবিধা পাওয়া যাবে’।
 
বিএডিসি সূত্র জানায়, দেশের মোট আবাদি কৃষিজমির প্রায় ৭৫ শতাংশে ধান উৎপাদিত হয়, যার ৬৩ শতাংশই ব্যবহৃত হয় বোরো মৌসুমে।

কৃষিকাজের প্রধান নিয়ামক সেচ। বর্তমানে প্রতি কেজি ধান উৎপাদনে বিদ্যুৎ চালিত গভীর-অগভীর নলকূপের মাধ্যমে ২-৩ লিটার পানিসেচের প্রয়োজন হচ্ছে। বিদ্যুৎবিহীন এলাকাগুলোতে সেচ চলে ডিজেল চালিত নলকূপে। প্রতি লিটার ডিজেল ৬৮ টাকা দরে কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন কৃষকরা। ওইসব বিদ্যুৎবিহীন এলাকায়ই আসছে সোলার সেচ পাম্প।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৭
এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।