ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

কৃষি

বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথেই দেশের কৃষি অর্থনীতি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৭
বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথেই দেশের কৃষি অর্থনীতি বাংলাদেশের কৃষি। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: শুধু স্বাধীনতা নয়, দেশের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্যও লড়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাই ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে শুরু করেন দীর্ঘ মেয়াদি টেকসই অর্থনৈতিক পরিকল্পনা। ৫০০ কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মসূচিতে তিনি ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিলেন কৃষিখাতের জন্য।

নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বঙ্গবন্ধু উপলব্ধি করেছেন সমৃদ্ধ কৃষিই স্বনির্ভর অর্থনীতির পূর্ব শর্ত। তাই দেশের প্রথম উন্নয়ন কর্মসূচি- এডিপির বড় অংশই ছিল এই খাতের উন্নয়নে।

কিন্তু পঁচাত্তরের কালো আগস্ট ভেঙে ফেলে বঙ্গবন্ধুর সাজানো সাম্পান। মুখ থুবড়ে পড়ে স্বাধীন বাংলার উন্নয়নযজ্ঞ।
 
বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমানে দেশ মধ্যম আয়ে রূপান্তরের যাত্রা চলছে বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। বঙ্গবন্ধুই প্রগতির এই ভিত্তি গড়ে গেছেন। নাগরিক জীবনের সর্বত্র সুশাসন নিশ্চিত করা গেলে সামনের দিনেও চলমান থাকবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের এ উচ্চ প্রবৃদ্ধির ধারা।
 
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম বলেন, বঙ্গবন্ধু বুঝেছিলেন, বিপর্যস্ত দেশের পুনর্গঠনে দরকার সুচিন্তিত পরিকল্পনা। এ কারণে দেশে ফিরে মাত্র ১৮ দিনের মাথায় তিনি পরিকল্পনা কমিশন গঠন করেন। এই কমিশনে সেসব গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন, যারা ছয় দফা, এগারো দফাসহ অর্থনৈতিক মুক্তির আন্দোলনে বিভিন্ন সময়ে ভুমিকা রেখেছিলেন। এই কমিশন যুগান্তকারী প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (১৯৭২-৭৬) প্রণয়ন করে অর্থনেতিক প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে তোলেন।
 
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শুরুতেই পদক্ষেপ নিয়েছেন কৃষির উন্নয়নে। তাই কৃষকদের ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা মওকুফ করে দেন। গবেষণার জন্য কৃষি গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত করেন। এই প্রতিষ্ঠানটি বিনামূল্যে ও স্বল্পমূল্যে কৃষকদের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ করে।
 
“দেশে ফিরে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না, যদি এদেশের মানুষ, যারা যুবক শ্রেণি আছে, তারা চাকরি না পায়। ”

বঙ্গবন্ধু এভাবেই শুরু করেন অন্ধকার থেকে আলোর পথের যাত্রা। দীর্ঘ মেয়াদি অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ছিল বঙ্গবন্ধুর টেকসই উন্নয়নের প্রথম কৌশল।
 
ড. শামসুল আলম উন্নয়নের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধু শহীদ হওয়ার পর আমরা একটি ঘূর্ণিচক্রে পড়ে যাই। সে অবস্থা কাটিয়ে উঠতে আমাদের বেশ বেগ পোহাতে হয়। ১৯৯০ সালের আগ পর্যন্ত আমরা প্রবৃদ্ধিকে ৩ শতাংশের উপরে নিতে পারিনি।
 
বর্তমানে অবশ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। এখন প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের উপরে, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। আর মাথাপিছু আয়ও বেড়েছে। পরিবর্তন হয়েছে সামজিক অবস্থারও।
 
বিশ্লেষকরা বলছেন, ধীরে হলেও বঙ্গবন্ধুর দেখানো উন্নয়নের পথেই হাঁটছে বাংলাদেশ।
 
এ বিষয়ে জাতিসংঘে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, দেশের প্রথম বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি- এডিপির বড় অংশই ছিল এই খাতের উন্নয়নে।
 
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন স্বাধীন বাংলার দায়িত্ব নিলেন, সে সময়ে কৃষকদের স্বার্থ সবচেয়ে আগে বিবেচনা করলেন। ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে প্রায় ৫০১ কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি নেওয়া হয়। তার মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকাই ছিল কৃষিক্ষেত্রের উন্নয়নে, কৃষকদের স্বার্থে। বঙ্গবন্ধু উপলব্ধি করেছিলেন, কৃষকরা বাঁচলে স্বনির্ভর হবে দেশের অর্থনীতি।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৭
এসই/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।