ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

সমালোচকদের জবাব দিল এনবিআর

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০১৭
সমালোচকদের জবাব দিল এনবিআর

ঢাকা: প্রতি বছরই সংসদে বাজেট প্রস্তাব থেকে শুরু করে পাস হওয়ার পরেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব সংগ্রহের যোগ্যতা নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইতে থাকে। কিন্তু টানা তিনবার সমালোচনার কড়া জবাব দিয়ে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করলো এনবিআর।

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, সমাপ্ত অর্থবছরে ২৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে এনবিআরকে ২ লাখ ৩ হাজার ১৫২ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়। এর মধ্যে আয়কর খাতে ৭৩ হাজার ৩৬৮ কোটি, মূসকে ৭৪ হাজার ১১৪ কোটি ও শুল্কে ৫৫ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়।

তবে অর্থ বছরের শুরু থেকে রাজস্ব আহরণ ভালো থাকলেও মাঝামাঝি সময়ে এসে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। তখন পরিস্থিতি আঁচ করে অর্থবছরের শেষ দিকে সংশোধন করে ১৮ হাজার ১৫২ কোটি টাকা কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয় অর্থমন্ত্রণালয়। ফলে ২০১৬-১৭ অর্থবছর রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা এসে দাঁড়ায় ১ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা।

আরও জানা যায়, রাজস্ব আহরণের হিসাব অনুযায়ী সমাপ্ত অর্থবছরে রাজস্ব আহরণে সবচেয়ে বেশি সাফল্য এসেছে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) খাতে। এ খাতে সংশোধিত ৬৬ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৬৭ হাজার কোটি টাকা। শুল্ক থেকে সংশোধিত ৫৫ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৫৪ হাজার ৬০০ কোটি টাকা আহরণ হয়েছে। আয়কর থেকে ৬৩ হাজার ৪৭১ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ করেছে এনবিআর। এ খাতে সংস্থাটির সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৪ হাজার কোটি টাকা।

এদিকে রাজস্ব আদায়ে এনবিআরের গত তিন অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ছিলো ১১ থেকে ১৫ শতাংশের মধ্যে কিন্তু সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরে ১৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হওয়ায় রেকর্ড করলো এনবিআর। আর চলতি অর্থবছরে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে ২ লাখ ৪৮ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। যে লক্ষ্যমাত্রা এনবিআর সংশোধন ছাড়াই অর্জন করতে সক্ষম হবে বলে দাবি করছে।

অন্যদিকে এনবিআর আরও বলছে, ভ্যাট আইন বাস্তবায়নকে কেন্দ্র করে প্রায় সময় চলে গেছে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের পেছনে। আর ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন না হওয়ায় বিপাকে পড়ে যায় এনবিআর। তবে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন না হওয়ায় কিছুটা হলেও ক্ষতির সম্মুখীন হবে এনবিআর। তবে কি পরিমান ক্ষতির সম্মুখীন হবে সেটা এখন পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

শুধু তাই নয়, সরকারি প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলার কাছে এনবিআরের বকেয়া রাজস্বের পরিমাণ ২২ হাজার ৮২৪ কোটি টাকা। আর বিদায়ী অর্থবছরেই বকেয়া রাজস্বের পরিমাণ ৫ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। ফলে এই একটি সংস্থার বকেয়া রাজস্ব পাওয়া গেলে মোট রাজস্ব আদায় হতো ২ লাখ ৭ হাজার ৮২৭ কোটি টাকা যা বিদায়ী অর্থবছরের মূল লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকা বেশি। এছাড়া ৪ মোবাইল কোম্পানির ২ হাজার ৪৮ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকির রায় হয়েছে ২২জুন। পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কাছে বকেয়ার পরিমান প্রায় ৬শ কোটি, সাধারণ বিমার কাছে বকেয়া রয়েছে ৮১ কোটি টাকা, বিটিআরসি’র কাছে বকেয়া রয়েছে প্রায় প্রায় ৬১০ কোটি টাকা। অন্যান্য সংস্থার বকেয়া ছাড়া এই কয়েকটি সংস্থার বকেয়া আদায় হলে এনবিআর ম‍ূল লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আরও প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায় হতো।

এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো.নজিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন,পুরোপুরি কৌশলগত পরিকল্পনা, উদ্ভাবনী পদ্ধতি (রাজস্ব সংলাপ, রাজস্ব হালখাতা, কর প্রশিক্ষণ ফোরাম) অবলম্বনের মাধ্যমে সকল অংশীদারকে নিয়ে কাজ করেই লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম সম্ভব হয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর রাজনৈতিক নির্দেশনাও আমাদের পাথেয় ছিলো। এছাড়া ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবহার ও গণমাধ্যমের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাজস্ব আহরণে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪০ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০১৭
এসজে/বিএস

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।