ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

আগে ক্রেতা পরে দাম!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২১ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৭
আগে ক্রেতা পরে দাম! আগে ক্রেতা পরে দাম!

মানিকগঞ্জ: বাজারে গরুর দুধের অভাব নেই। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিমাণ আরও বাড়ছে। কিন্তু অবিরাম বৃষ্টির কারণে দেখা মিলছে না পাইকার দরের ক্রেতা বা হোটেল ব্যবসায়ীদেরও। সেজন্য এখন কোনো ক্রেতা এলেই আগে তাকে মানানো, তারপর দামের হিসাব।

মানিকগঞ্জের ধানকোড়া বাজারে দুধ বিক্রির জন্য ক্রেতার অপেক্ষায় থাকা আফজাল হোসেন এভাবেই বলছিলেন বাংলানিউজকে। বুধবার (২৬ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বৃষ্টির মধ্যেই কথা হচ্ছিল তার সঙ্গে।

প্রায় আধঘণ্টা ধরে বৃষ্টিতে ভিজে ক্রেতার অপেক্ষায় আফজাল।

অন্যান্য সময়ের চেয়ে গত কয়েকদিন দুধের দাম একেবারে কম। বৃষ্টির কারণে পাইকার বা হোটেল ব্যবসায়ীদের আনাগোনাও নেই আগের মতো। আবার নেই খুচরা ক্রেতাও। এতে করে চরম বিপাকে পড়েছেন আফজাল হোসেনের মতো শতাধিক খামারি।

মানিকগঞ্জের সাতটি উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রাম্য বাজারেই রয়েছে দুধের চাহিদা। স্থানীয় খামারিদের দুধের আমদানিও বেশ। রাজধানীর সঙ্গে মানিকগঞ্জের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকার কারণে এখানকার দুধের চাহিদা ও দামও বেশ ভালো। যে কারণে গ্রামের প্রায় প্রতিটি কৃষকই দুই একটি করে গাভী পালন করে থাকেন।

এতে করে একদিকে যেমন নিজেদের পুষ্টি চাহিদা মিটে, অন্যদিকে আবার আয়ের বাড়তি টাকা দিয়ে চলে সংসাসের অন্যান্য কাজকর্মও। কিন্তু গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে দুধের দাম ও চাহিদা কম থাকায় বিপাকে পড়েছেন এসব কৃষক বা খামারিরা।

সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি এলাকার মোতালেব মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিদিন সাধারণত ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে প্রতি লিটার দুধ বিক্রি হয়। কিন্তু কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে সেই দুধের দাম এখন ২৫ থেকে ৩০ টাকা। তাও আবার ক্রেতা কম থাকায় দুধ বিক্রিতে সময় লাগছে আগের চেয়ে দ্বিগুন।

উপজেলার ধানকোড়া এলাকার ফাইজুদ্দিন মিয়া বাংলানিউজকে জানান, বৃষ্টিতে একদিকে গাভীর খাবার কিনতে খরচ বেশি হচ্ছে অপরদিকে বাজরে দুধের চাহিদা ও দাম কম। এ অবস্থায় চলতে থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

দৌলতপুর উপজেলার নিরালী বাজার এলাকার কৃষক আব্দুস সালাম বাংলানিউজকে বলেন, গাভীর দুধ বিক্রির টাকা দিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে চলতে হয়। গত কয়েকদিন ধরে ২০ থেকে ২৫ টাকা ধরে দুধ বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে করে কোনো রকমে গাভীর খাবারের টাকা আসলেও নিজেরা খুব বিপাকে রয়েছেন।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ফরহাদুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, মানিকগঞ্জ জেলায় দুধের বাৎসরিক চাহিদা এক হাজার ২শ’ ৭০ পয়েন্ট ২০ লাখ লিটার। আর উৎপাদন হয় এক হাজার ৫শ’ ১০ পয়েন্ট ৩৩ লাখ লিটার।

চাহিদার চেয়ে দুধের উৎপাদন বেশি থাকার কারণে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ওই দুধ প্রতিদিন রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলে যায় বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৭
জিপি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।