ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

চার বছর পার না হতেই অকেজোপ্রায় কোরিয়ার ৩০০ বাস!

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৪১ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৭
চার বছর পার না হতেই অকেজোপ্রায় কোরিয়ার ৩০০ বাস! এভাবেই অকেজো পড়ে আছে বিআরটিসি’র বহু বাস- বাংলানিউজ

ঢাকা: চার বছর পার না হতেই বিকলের পথে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ঋণে কেনা ৩০০টি একতলা বাস। সরকারি অর্থায়নে সিএনজি চালিত বাসগুলো মেরামতে হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি)। ফলে খোদ বাস রফতানিকারক দেশ দক্ষিণ কোরিয়ারই উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার কাছে অনুদান চেয়েছে সরকারি পরিবহন সংস্থাটি।

৫২ সিটের বাসগুলোর মধ্যে ১৫০টি এসি ও ১৫০টি নন-এসি। এর মধ্যে ৮টি একেবারেই মেরামতের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

চারটি পুড়েছে রাজনৈতিক আগুনে। ঢাকা-গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের বিআরটিসি ডিপোতে ঠাঁই হয়েছে বাসগুলোর। বাকি ২৮৮টি বাস একদিন মেরামত করে দু’দিন সড়কে পরিচালনা করা হয়।
 
তবে স্থায়ী মেরামতে আবারও দক্ষিণ কোরিয়ার উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন ফান্ডের (ইডিসিএফ) কাছে অনুদান চেয়েছে বিআরটিসি।   
 
‘বিআরটিসি’র জন্য কোরিয়ান ইডিসিএফ ঋণের আওতায় ৩০০টি সিএনজি একতলা বাস সংগ্রহ’ প্রকল্পের আওতায় চার লাখ ডলার অনুদান চেয়েছে বিআরটিসি, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা (প্রতি ডলার সমান ৮০ টাকা ধরে)। ইডিসিএফের এ অনুদান চেয়েছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) চিঠি দিয়েছে সংস্থাটি।
 
ইআরডি সূত্র জানায়, বিআরটিসি’র প্রস্তাবনার ওপর ভিত্তি করে গত বুধবার (১৯ জুলাই) সভা হয়। সভায় বিআরটিসি, ইআরডি ও  ইডিসিএফের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। তবে দ্রুততম সময়ে বাসগুলো বিকল হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ইডিসিএফের প্রতিনিধিরা।
 
ইআরডি’র উপ-সচিব এ এস এম মুস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘৩০০টি সিএনজি চালিত বাস মেরামতে চার লাখ ডলারের অনুদান চেয়েছে বিআরটিসি। আমরা আবেদনটি ইডিসিএফকে পাঠিয়েছি। এ অনুদানের বিষয়ে একবার সভাও হয়েছে। তবে বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি’।
 
বিআরটিসি সূত্র জানায়,  ২৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ২০১৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি বাসগুলো কেনা সম্পূর্ণ হয়। সিএনজি চালিত বাসগুলো কিনতে ২০৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ঋণ দেয় দক্ষিণ কোরিয়া। প্রকল্পের আওতায় এ ঋণচুক্তি হয় ২০১০ সালের ২৯ জুলাই। ঋণের সার্ভিস চার্জ ০ দশমিক ১ শতাংশ। ১০ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছরে ঋণ পরিশোধযোগ্য।  

ফলে ঋণ পরিশোধ না হতেই বিকলের পথে বাসগুলো।
 
বিআরটিসি’র দাবি, বার বার বিকল হওয়া ও মেরামতের কারণে বাসগুলো কেনার লক্ষ্য পূরণ হয়নি। ঢাকা ও শহরতলীর বায়ু ও পরিবেশ দূষণ রোধে সিএনজি চালিত বাসের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়। অথচ এখন মেরামতেই হিমশিম খাচ্ছে ।
 
বিআরটিসি’র চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) মো. মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ৩০০টি বাসের মধ্যে ৮ থেকে ১০টি একেবারে বিকল হয়ে গেছে। সেগুলো মেরামত করেও পরিচালনা সম্ভব নয়। কিছু বাস আগুনেও পুড়েছে। বাকি বাসগুলো একদিন মেরামত করে দু’দিন চালানো হয়। নষ্ট হয়ে গেলে প্রতিনিয়তই ছোট-খাটো মেরামত করছি’।
 
‘ভালোভাবে মেরামত করে সেগুলো সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে চাই। সে লক্ষ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে অনুদানের আবেদন জানিয়েছি’।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৭ 
এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।