ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

‘ব্যাংকিং খাতে ক্রাইসিস হওয়া যাবে না’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪০ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৭
‘ব্যাংকিং খাতে ক্রাইসিস হওয়া যাবে না’

ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেছেন, ব্যাংক খাত যাতে সঠিক পথে থাকে তা দেখভাল করতে অভিভাবক হিসেবে কাজ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

তিনি বলেন, ‘নরমালি ব্যাংকিং ইন্ড্রাস্ট্রির গার্ডিয়ান (অভিভাবক) হিসেবে আমাদের দেখতে হয়, ব্যাংক যেন সঠিক পথে থাকে। কারণ, ব্যাংকিং খাতে ক্রাইসিস হওয়া যাবে না।

কোনো ব্যাংক যেন অসুবিধায় না পড়ে। সেটি আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হয়’।
 
মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স রুমে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) সদস্যদের জন্য বৈদেশিক মুদ্রানীতি ও বিনিয়োগ বিষয়ক ওরিয়েন্টশন কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
 
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফজলে কবির আরও বলেন, ‘বিদ্যমান ‘ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ (সংশোধিত ২০১৩)’- এ সিঙ্গেল বরোয়ার এক্সপোজার লিমিট ২৫ শতাংশের কথা বলা হয়েছে। সিঙ্গেল বরোয়ার এক্সপোজার লিমিটটা সম্পূর্ণ তাদের ব্যাপার, যারা ব্যাংক কোম্পানি আইন করে (অর্থ মন্ত্রণালয়)। ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রি রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। আমরা সব সময় চাই সিন্ডিকেশনের মাধ্যমে। এটি আমরা প্রিফার (পছন্দ) করি। পাওয়ার সেক্টর আমাদের সম্পূর্ণ অগ্রাধিকার- এতে কোনো সন্দেহ নেই। এজন্য আমরা যেকোনো ধরনের সহযোগিতা করতে রাজি আছি এবং করেও যাচ্ছি’।

‘বৈদেশিক ঋণের মাধ্যমে দেশে কয়েকটি পাওয়ার সেক্টর আসছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সেগুলোকে সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছি। যেটি (ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন) আসতে চাচ্ছে, সেটি আমরা জানি না’।
 
গভর্নর বলেন, ‘২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে উপনীত হতে দেশের প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের বেশি হওয়া প্রয়োজন। এ জন্য দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে ব্যাংকেরও অনেক দায়িত্ব রয়েছে’।
দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলেও সাংবাদিকদের অবহিত করেন তিনি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গভর্নর ফজলে কবির আরও বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাইবার হ্যাকিংয়ের ঘটনায় গণমাধ্যম ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে। রিজার্ভ চুরির পর পরই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিকদের চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছিল, এটি সত্যি। কিন্তু এখন পরিস্থিতি অনেক ভালো হয়েছে। যে কেউ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে পারছেন।

তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক রিপোর্টারদের আরও অনুসন্ধানী ও দায়িত্বশীল হয়ে কাজ করতে হবে। অনেক সময় প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে ভুল তথ্য প্রকাশিত হয়ে যায়। তবে সময় সময় মনে রাখবেন, সঠিক সংবাদ সবার প্রথমে দেওয়া জরুরি। কোনো সত্য ঘটনা যেন চাপা পড়ে না যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে’।
 
দিনব্যাপী ওরিয়েন্টশন কোর্সে বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এ এন এম আবুল কাশেম ও আহমেদ জামাল, মহাব্যবস্থাপক মো. মাসুদ বিশ্বাস, উপ-মহাব্যবস্থাপক আলী আকবর ফারাজী, যুগ্ম পরিচালক মো. হারুন-অর-রশিদ প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন ডিপার্টমেন্ট অব কমিউনিকেশন অ্যান্ড পাবলিকেশন্সের মহাব্যবস্থাপক জি এম আবুল কালাম আজাদ, গভর্নর সচিবালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক রোকেয়া খাতুন প্রমুখ।  

সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান।
 
এক প্রশ্নের উত্তরে আহমেদ জামাল বলেন, ব্যাংকিং চ্যানেল ব্যবহারে অর্থপাচার করা অনেক কঠিন। পণ্য আমদানি-রফতানিতে ওভার ইনভয়েস ও আন্ডার ইনভয়েসের কথা প্রায়ই শোনা যায়। এটি একটি জটিল প্রক্রিয়া। তবে এ পর্যন্ত রফতানিমূল্য অপ্রত্যাবাসিত রয়েছে এমন অর্থের পরিমাণ ৩০ থেকে ৩২ কোটি মার্কিন ডলার। অর্থাৎ, ডলার প্রতি ৮০ টাকা হিসেবে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার রফতানিমূল্য দেশে আসেনি। এসব অর্থ ফিরিয়ে আনতে মামলা চলমান রয়েছে।
       
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইআরএফের সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলাল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. সুলতান আহাম্মদের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামান।
 
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৭
এসই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।