ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

কৃষি

স্থিতিশীল হতে শুরু করেছে চালের বাজার

মনি আচার্য্য, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৭
স্থিতিশীল হতে শুরু করেছে চালের বাজার কারওয়ান বাজারের একটি চালের আড়ত (পুরনো ছবি)

ঢাকা: বেশ দীর্ঘ সময় ধরে চালের বাজার চড়া থেকে চড়া হতে দেখেছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। রোজার কয়েক মাস আগে থেকেই চালের বাজারের এই রূপ দেখতে হয়েছে তাদের। তবে এবার লাগাম পড়েছে ‘চড়া দরের ঘোড়ায়’। মজুদদার ব্যবসায়ীরা বাজারে চাল ছাড়তে থাকায় এবং আমদানিকৃত চাল আসতে থাকায় বাজার কিছুটা স্থিতিশীলতার দিকে যাচ্ছে।

রোববার (১৬ জুলাই) রাজধানীর প্রধান কারওয়ান বাজারের পাইকারি ও খুচরা চালের বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ কথাই জানা গেল। ক্রেতারাও হাসিমুখে বললেন সে কথা।

চালের বাজার দর নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মোটা চালের দাম খুচরা ও পাইকারি উভয় বাজারেই কমেছে গত সপ্তাহের তুলনায়। মিনিকেট ও নাজিরশাইল চালের খুচরা দর ১-২ টাকা করে কমলেও অপরিবর্তিত রয়েছে পাইকারি বাজারে।

সর্বশেষ চালের বাজারের খুচরা দর অনুযায়ী, প্রতি কেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা। যার মধ্যে রয়েছে গুটি, স্বর্ণা, বিআর-২৮, পারিজা। গত সপ্তাহে এ চালই বিক্রি হতে দেখা গেছে ৪৮ টাকা পর্যন্ত। প্রতিকেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৫৬ টাকায়, যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৫৬-৫৮ টাকা। এছাড়া প্রতিকেজি নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬১-৬৫ টাকা পর্যন্ত।

সর্বশেষ পাইকারি বাজার দর অনুযায়ী, প্রতিকেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪২ টাকা। যা গত সপ্তাহে ছিল ৪৩-৪৪ টাকা। মিনিকেট ও নাজিরশাইল চাল কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ৫২ ও ৫৬ টাকায়। এ দুই জাতের চালের দাম অবশ্য গত সপ্তাহেও একই ছিল।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, চালের বাজার দরের বর্তমান অবস্থা পুরোপুরি সন্তোষজনক না হলেও শুভ লক্ষ্মণই দেখছেন তারা। তারা আশা করছেন, আগামী এক মাসের মধ্যে চালের দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে।

এতোদিন চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকার পেছনে মজুদদার চক্রকে দায়ী করা হলেও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ করলে তারা দায়ী করেন মিল মালিকদের। তাদের বক্তব্য, মিল মালিকদের কাছে যে পরিমাণ চাল ও ধান মজুদ আছে, তারা যদি তা বাজারে নিয়ে আসতো তাহলে মিনিকেট ও নাজিরশাইল চালের কেজিপ্রতি দাম হতো ৪২-৪৪ টাকা। কিন্তু চালের মিল মালিকরা তা না করে অল্প অল্প চাল বাজারে দিচ্ছে, ফলে বাজারে যোগান অনুযায়ী চাহিদা বেশি হওয়ায় চালের দাম বাড়তি।

কারওয়ান বাজারের খুচরা চালের ব্যবসায়ী আবুল কালাম বাংলানিউজকে বলেন, চালের বাজারে এখন সুবাতাস বইতে শুরু করেছে। আশা করি আগামী এক মাসের মধ্যে চালের দাম স্বাভাবিক হয়ে যাবে।  

আবুল কালাম বলেন, সরকার যদি বাজারে চালের দাম সবসময় স্বাভাবিক রাখতে চায়, তাহলে চালের মিল মালিকদের ধরতে হবে। তারা অবৈধভাবে চাল ও ধান মজুদ করে দাম বাড়িয়ে দেয়। ফলে ক্রেতা ও আমরা যারা খুচরা ব্যবসায়ী আছি তাদের সমস্যায় পড়তে হয়।

কারওয়ান বাজারের আরেক চালের ব্যবসায়ী ইসমাইল বাংলানিউজকে বলেন, বাজারে চাহিদা অনুযায়ী যোগান ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। সরকারে প্রচেষ্টা ও ব্যবসায়ীদের মজুদ চাল বাজারে আসা শুরু করায় অল্প করে হলেও দাম কমছে।

দাম স্বাভাবিক রাখতে সরকার চালের আমদানি কর কমানোসহ বিভিন্ন দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ চাল আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে। এছাড়া অবৈধভাবে চাল মজুদকৃত ব্যবসায়ীদের তালিকাও করছে সরকার। আর এসব কারণেই ধীরে ধীরে চালের বাজার স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ২২১৩ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৭
এমএ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।