ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

‘সৎ ব্যবসায়ীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গী পাল্টাতে হবে’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০১৭
‘সৎ ব্যবসায়ীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গী পাল্টাতে হবে’ এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান

বেনাপোল (যশোর): অসৎ ব্যবসায়ীর সাথে যে আচারণ করা হয়, একজন সৎ ব্যবসায়ীর সাথে সেই একই আচারণ করা যাবে না। এক্ষেত্রে রাজস্ব কর্মকর্তাদের দৃষ্টিভঙ্গী পাল্টাতে হবে। আমি এখানে এসে কিছু ব্যবসায়ীর কাছে কাস্টমস কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ পেয়েছি।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) বিকালে বেনাপোল বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন ও কাস্টমসের রাজস্ব আহরণের বিষয়ে সর্বস্তরের স্টেক হোল্ডারদের সাথে যৌথ মতবিনিময় সভায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার শওকাত হোসেনকে উদ্দেশ্য করে এ কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, সরকারের ডিজিটাল বাংলার স্বপ্নপূরণে রাজস্ব প্রদানে ব্যবসায়ীরা আন্তরিক হয়ে সহযোগিতা করছেন।

এখানে দ্রুত অবকাঠামো উন্নয়ন ও জনবল নিয়োগের কাজ হবে। এছাড়া এ বন্দর দিয়ে আরো বাণিজ্য সেবা বাড়াতে সপ্তাহে ৭ দিনে ২৪ ঘণ্টা পণ্য খালাস কার্যক্রম চালুর পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। পরে অন্যান্য পরিষেবাও ২৪ ঘণ্টা সচল রাখা হবে। সবার সহযোগিতা পেলে আগামী এক মাসের মধ্যে এই সেবা চালু করা সম্ভব হবে।

‘তখন আমি বেনাপোল বন্দরকে ২৪ ঘণ্টার দুর্নীতিমুক্ত কাস্টমস হিসাবে ঘোষণা করবো। বেনাপোল বন্দরে ব্যবসাবান্ধব ও রাজস্ব বান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে হবে। আমরা আপনার নেতৃত্বে (কাস্টমস কমিশনার শওকাত হোসেন) তা দেখতে চাই। ’

আলোচনায় অংশ নিয়ে বেনাপোল বন্দরের বিদ্যুৎসহ অন্যান্য সমস্যার চিত্র তুলে ধরেন বেনাপোল পৌর মেয়র আশরাফুল আলম লিটন।

তিনি বলেন, যেখানে প্রয়োজন কম সেখানে ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে। আর যেখান থেকে সরকারের বড় অংকের রাজস্ব আসছে সেই বেনাপোল বন্দরে বিদ্যুৎ থাকে না, দিনভর যানজট, সড়কের বেহাল দশা। এটা আমরা কোনোভাবে মেনে নেব না। সরকারকে এদিকে অবশ্যই নজর দিতে হবে। আমরা সহযোগিতার জন্য সব সময় প্রস্তুত রয়েছি।

বেনাপোল সিআ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, বন্দর-কাস্টমসের অব্যবস্থাপনায় ব্যবসায়ীরা খেসারত গুণতে গুণতে হাঁফিয়ে উঠেছে। সরকার যদি বন্দর উন্নয়নে নজর দেয় তাহলে লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণ রাজস্ব আহরণ করা সম্ভব হবে।

ভারত-বাংলাদেশ ল্যান্ডপোর্ট চেম্বার কর্মাসের সাব-কমিটির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বলেন, বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বেনাপোল বন্দরের বিপরীতে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে অত্যাধুনিক টেকসই উন্নয়ন করা হয়েছে। পুরো বন্দর এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায়, আছে বিভিন্ন সংস্থার নিছিন্দ্র নিরাপত্তা। শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত এসি ওয়ারহাউজ, চোরাচালান প্রতিরোধে স্কানিং ব্যবস্থাসহ আরো অনেক আধুনিক ব্যবস্থা রয়েছে। যার একটিও সুবিধা গড়ে উঠেনি বেনাপোল বন্দরে।

বেনাপোল বন্দরের ব্যবসায়ী আলীকদর সাগর বলেন, বার বার কর্মকর্তারা বেনাপোলে আসে আর উন্নয়নের কথা বলে ঢাকায় গিয়ে ভুলে যায়। এতো অব্যবস্থাপনার মধ্যে বাণিজ্যিক কার্যক্রম আর চলছে না। ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগ কমাতে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন এমনটি আশা করি।

যশোর জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দিন বলেন, বন্দরের উন্নয়ন যেহেতু এক দিনের জন্য নয়, সেজন্য মাস্টার প্ল্যান নিয়ে কাজ করতে হবে। সবার সহযোগিতা থাকলে সব সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।

মতবিনিময় সভায় আরো ছিলেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব অশোক মাধব রায়, বাংলাদেশ স্থলবন্দরের চেয়ারম্যান তপন কুমার চক্রবর্তী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (কাস্টমস নীতি) লুৎফর রহমান, কাস্টমস কমিশার মো. শওকাত হোসেন, বেনাপোল বন্দর পরিচালক (ট্রাফিক) আব্দুর রউফ, ৪৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফুল হক।

আলোচনা শেষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়াত এবং আমদানি-রফতানি বাণিজ্য পর্যবেক্ষণ ও বাণিজ্যের সাথে সম্পৃক্ত বিভিন্ন মানুষের সাথে কথা বলেন।

বাংলাদেশ সময়:  ০৬৩৫ ঘণ্টা, জুলাই  ১৪, ২০১৭
এজেডএইচ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।