ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

লগ্নিকৃত অর্থ ফেরত পাননি ইউনিপে টু ইউ’র গ্রাহকরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৬ ঘণ্টা, জুলাই ৯, ২০১৭
লগ্নিকৃত অর্থ ফেরত পাননি ইউনিপে টু ইউ’র গ্রাহকরা

ঢাকা: গ্রাহকদের পাওনা টাকা পরিশোধ না করে উল্টো মামলার বিচারকাজ বিলম্বিত করতে তৎপর হয়ে উঠেছেন এমএলএম কোম্পানি ‘ইউনিপে টু ইউ’র প্রতারক কর্মকর্তারা। সরকারের নির্দেশ সত্ত্বেও এখনও লগ্নিকৃত অর্থ ফেরত পাননি ২০ লাখ গ্রাহক।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে লিখিত আবেদনে এ অভিযোগ করা হয়েছে। প্রতারিত গ্রাহকদের পক্ষে কক্সবাজার পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুল করিম সংসদীয় কমিটির সভাপতি বরাবর লিখিত আবেদন করেন।

আবেদনে তিনি জানিয়েছেন, ভিটে বাড়ি বিক্রি করে গ্রাহকরা ইউনিপে টু ইউ’তে বিনিয়োগ করে। যাদের প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। ওই গ্রাহকদের পাওনা টাকা আদায় না হলেও সংস্থাটির শীর্ষ কর্মকর্তা মুন্সি তরিকুল ইসলাম ও তার সঙ্গীরা নতুন করে প্রতারণা শুরু করেছেন।

আবেদনে প্রতারক চক্রের নতুন তৎপরতা বন্ধ ও নিঃস্ব গ্রাহকদের বিনিয়োগের অর্থ দ্রুত ফেরত পেতে সংসদীয় কমিটির হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, এমএলএম কোম্পানির ব্যবসার নামে প্রতারণা বন্ধে আগেই সংসদীয় কমিটির পক্ষ থেকে সুপারিশ করা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রীও এ ধরনের প্রতারণার বিষয়ে সতর্ক রয়েছেন। যারা প্রতারণার সঙ্গে জড়িত আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের অবশ্যই শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
 
এদিকে লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, ইউনিপে টু ইউ’র চেয়ারম্যান শহিদুজ্জামান শাহীন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনতাসির ইমন ও উপদেষ্টা মাসুদুর রহমান মাসুদসহ প্রতারকচক্র দেশের বিভিন্ন স্থানে এজেন্ট নিয়োগ দিয়ে সহজ-সরল মানুষের কাছ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। ২০১১ সালে সরকার সংস্থাটির ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করে ১২৯ কোটি টাকা ফ্রিজ করলেও অবশিষ্ট অর্থ আত্মসাত করে কর্মকর্তারা বিদেশে পাড়ি জমান। কেউ কেউ দেশে আত্মগোপনে থেকে যান। আত্মগোপনে থাকা শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে মুন্সি তরিকুল ইসলাম অন্যতম। যিনি আত্মসাৎ করা টাকায় রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে নামে-বেনামে ফ্ল্যাট, জমি, দোকানসহ বিভিন্ন সম্পত্তি কিনেছেন। আত্মীয়-স্বজনদের কাছে বিপুল অংকের অর্থ জমাও রেখেছেন। মাদক ব্যবসাসহ রাষ্ট্র বিরোধী কাজেও সেই অর্থ ব্যবহার হচ্ছে।

অভিযোগে আরও বলা হয়, ২০১২ সালের ১৩ আগস্ট প্রতারিত গ্রাহকদের পক্ষে কক্সবাজার পৌরসভার ওয়ার্ড নং-৮ ওয়ার্ডের বৈদ্য ঘোনার আব্দুর রশিদ কক্সবাজার আমলি আদালতে একশো কোটি টাকা আত্মসাতের একটি মামলা দ্বায়ের করেন। যার নং সিআর - ৫৯২/১২ । ধারা: ৪০৬/৪২০/৩৪ দঃ বিঃ। এ মামলায় মুন্সি তরিকুল ইসলামসহ ১৩ জনকে আসামি করা হয়। মামলার পর কিছুদিন প্রশাসন সক্রিয় থাকলেও পরে নিশ্চুপ হয়ে যায়। এই সুযোগে সম্প্রতি তরিকুল ও তার সঙ্গীরা নতুন করে প্রতারণা শুরু করেছেন। তিনি বিভিন্ন থানায় ইউনিপে টু ইউ’র কর্ণধারসহ কর্মকর্তাদের নামে দায়েরকৃত মামলাগুলো দেখাশুনার দায়িত্বও পালন করছেন।

অর্থ আত্মসাতের এক মামলায় চট্টগ্রামের একটি আদালতে ইউনিপে টু ইউ’র দুই পরিচালকের ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হওয়ার পর থেকেই তিনি নানা কৌশলে অন্য মামলাগুলোর কার্যক্রম দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা,  জুলাই ০৯, ২০১৭
এসএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।