ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

কুড়িগ্রামে গলদা চিংড়ি চাষ স্বপ্ন বাস্তবায়নের হাতছানি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৭
কুড়িগ্রামে গলদা চিংড়ি চাষ স্বপ্ন বাস্তবায়নের হাতছানি কুড়িগ্রামে গলদা চিংড়ি চাষ স্বপ্ন বাস্তবায়নের হাতছানি-ছবি: বাংলানিউজ

কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রাম জেলায় মিঠা পানিতে গলদা চিংড়ি চাষের মাধ্যমে মাছচাষিদের স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করছে মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার। এতে গলদা চিংড়ির স্বাদ বঞ্চিত এ অঞ্চলের মানুষের যেমন রসনাপূর্তি হবে, তেমনি দারিদ্র পীড়িত জেলার অর্থনীতির ভীতও মজবুত হবে অনেকখানি।

বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) সরেজমিনে খামারে গিয়ে জানা যায়, মিঠা পানিতে গলদা চিংড়ি চাষের লক্ষ্যকে সামনে রেখে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারে গলদা চিংড়ি চাষ ও রেনুপোনা উৎপাদনের উদ্যোগ নেয়া হয়। তা সফল করতে পেকুয়া, কক্সবাজার থেকে ব্রাইন ওয়াটার (লোনা পানি) এবং পায়ড়া নদী, দুমকি, পটুয়াখালী থেকে গলদা চিংড়ির মা মাছ এনে চিংড়ি হ্যাচারিতে হ্যাচিং করা হয়।

যা এখন বাস্তবায়নের দ্বারপ্রান্তে।
 

বৃহস্পতিবার (২০ প্রপ্রিল) পর্যন্ত প্রায় ৬ লক্ষাধিক জীবিত লার্ভার এখন বয়স দাঁড়িয়েছে ২০দিন। যার বয়স ৩৫ দিন হলে মৎস্যচাষিদের মধ্যে উৎপাদনের জন্য বিতরণ করা হবে। কুড়িগ্রামে গলদা চিংড়ি চাষ স্বপ্ন বাস্তবায়নের হাতছানি-ছবি: বাংলানিউজতবে আশার কথা হচ্ছে মিঠা পানির গলদা চিংড়ির রেনু পোনার (পিএল) এবং সঙ্গে একই পানিতে একক অথবা রুই জাতীয় মাছের সঙ্গে মিশ্র চাষও করা যাবে।

কুড়িগ্রামের জেলার সর্বত্র মিঠা পানির এ গলদা চিংড়ি চাষ করে খুব সহজেই অর্থনৈতিক মুক্তি লাভ করতে পারবে দরিদ্র মৎস্যচাষিরা।

কুড়িগ্রাম চিংড়ি হ্যাচারিতে কর্মরত টেকনিশিয়ান দেলোয়ার হোসেন দিলু বাংলানিউজকে জানান, খামারে যন্ত্রপাতি মানসম্মত খাদ্য ও ওষুধপত্রসহ সরবরাহসহ কারিগরী সহায়তা নিশ্চিত থাকায় রেনু পোনা উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। ভবিষ্যতে আরো কিছু অবকাঠামোগত সংশোধন ও ত্রুটিমুক্ত যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হলে কুড়িগ্রামে ব্যাপকহারে গলদা চিংড়ি উৎপাদন সম্ভব হবে। যা শুধু রংপুর বিভাগে নয় দক্ষিণাঞ্চলেও সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
 

কুড়িগ্রাম মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার ব্যবস্থাপক মুসা কালিমুল্লা বাংলানিউজকে জানান, মিঠা পানির চিংড়ি হওয়ায় বন্ধ ও মুক্ত উভয় জলাশয়ে গলদা চিংড়ি চাষ করা সম্ভব। গলদা চিংড়ি পরিবেশবান্ধব এবং দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় চাষিদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বাজার মূল্য সবসময় উচ্চ থাকার পাশাপাশি ৬ থেকে ৮ মাসে বাজারজাত করার সুযোগ থাকায় মৎস্যচাষিরা স্বল্পমেয়াদি বিনিয়োগে স্বপ্নপূরণ হবে স্বাবলম্বী হওয়ার। দরিদ্র জনপদের এ মৎস্য হ্যাচারিটিতে আরো দক্ষ জনবল এবং কারিগরী সহায়তা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি প্রয়োজন বলে আশা করনে তিনি।

কুড়িগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, প্রাথমিক অবস্থায় জেলার ৯টি উপজেলার প্রতি উপজেলায় গড়ে কমপক্ষে ১.০ হেক্টর জলাশয়ে চিংড়ি চাষ প্রদর্শনী পুকুর করলে বছরে কমপক্ষে ৪.৫ টন গলদা চিংড়ি উৎপাদন সম্ভব হবে। কুড়িগ্রামে গলদা চিংড়ি চাষ স্বপ্ন বাস্তবায়নের হাতছানি-ছবি: বাংলানিউজজেলার ৯ উপজেলায় উৎপাদিত চিংড়ির পরিমাণ দাঁড়াবে ৪০ হাজার ৫০০ কেজি। যার বাজার মূল্য প্রতি কেজি ৫০০ টাকা দরে প্রায় ২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। যা কুড়িগ্রাম জেলার আগ্রহী মৎস্যচাষি ও জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক ভীত আরও মজবুত করবে।


বাংলাদেশ সময়: ০৯২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৭
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad