ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

ইলিশের ক্রেতা নেই খুলনার বাজারে!

মাহবুবুর রহমান মুন্না, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৭
ইলিশের ক্রেতা নেই খুলনার বাজারে! বৈশাখের একদিন বাকি থাকলেও ইলিশের কদর নেই

খুলনা: এরম (এ রকম) সময়ে বাজারে ইলিশের কদর আকাশচুম্বী থাকতো। ইলিশ নিতে আইসে (এসে) পাইকারি ব্যবসায়ীরা গায় (শরীর) গায় টাক খাইতো (খেতো)। কিন্তু এবার কাস্টমার নেই, কদর নেই ইলিশের। যে কারণে দুই দিনে পাঁচ ককশিট ইলিশ বিক্রি করতি পারিনি।

বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) সকালে এভাবে অনেকটা হতাশার সঙ্গে ব্যবসায় মন্দার কথা জানান খুলনা মহানগরীর কেসিসি রূপসা পাইকারি মৎস্য বাজারের মুজাহিদ ফিশের আড়ৎদার আবু মুসা।

খুলনা বিভাগের সর্ববৃহৎ মাছের এ বাজারের আড়ৎদাররা বলেন, পাইকারি এ বাজারে এক সময় বৈশাখে চাহিদা অনুযায়ী ইলিশ দিতে পারতাম না।

দ্বিগুণ দামে তখন ইলিশ বিক্রি হয়েছে। আর এখন ইলিশের চাহিদা নেই বললেই চলে।

নিউ মার্কেট মাছ বাজারের ইলিশ বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলেও জানা যায়, বৈশাখের একদিন বাকি থাকলেও ইলিশের কদর নেই। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে মাছের সরবরাহ থাকলেও বিক্রি নেই তেমন।
পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে মাছের সরবরাহ থাকলেও বিক্রি নেই
মো. রুহুল আমীন নামে এক খুচরা ইলিশ ব্যবসায়ী জানান, এবার বৈশাখী বাজারে তেমন ক্রেতা নেই। দামও বেশি একটা চড়া না। বৈশাখের আগেও যেমন এখনও তেমন।

একই বাজারের ইদ্রিস জানান, এই সময় ইলিশ বিক্রি করতে করতে গায়ের ঘাম ছুটে যেত। পাইকারি বাজারে ইলিশের সংকট দেখা দিতো। কিন্তু এবার মাছের বিক্রি নেই বললেই চলে।

বাজারের প্রবীণ ব্যবসায়ী আব্দুল মজিদ বলেন, এক কেজি ওজনের ইলিশ ১২শ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। আর ৮শ গ্রামের ইলিশ ৮শ টাকা ও ৬শ গ্রামের ইলিশ ৫শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা বৈশাখের আগেও একই ছিলো।

বাজারে মাছ কিনতে আসা মহসেন জুট মিলের এজিএম এফ করিম স্বস্তি প্রকাশ করে বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকার তুলনায় খুলনায় ইলিশ মাছের দাম কম। এক কেজি সাইজের একটি ইলিশ হাতে ধরে তিনি বলেন, এই ইলিশ ঢাকায় হলে দুই হাজার টাকা দাম হতো।
পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে মাছের সরবরাহ থাকলেও বিক্রি নেই
বাজারে ইলিশের দাম পর্যবেক্ষণ করার সময় কথা হয় মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (নৌ) মো. নাসির উদ্দিনের সঙ্গে।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, পহেলা বৈশাখের জন্য কয়েকমাস আগে ইলিশ কিনে ফ্রিজে রেখে দিয়েছি। এখন ইলিশের দাম পর্যবেক্ষণ করে দেখছি।
তিনি জানান, বৈশাখে ইলিশের বাজারে তেমন উত্তাপ নেই।

খুলনার বাজারে ইলিশের চাহিদা কম থাকা প্রসঙ্গে খুচরা ব্যবসায়ী ও আড়ৎদাররা জানান, বিত্তবান এবং অভিজাত পরিবারের লোকজন আগে থেকে ইলিশ কিনে ফ্রিজে রেখেছে। কয়েক সপ্তাহ আগেই খুলনা জেলা প্রশাসনের পহেলা বৈশাখের খাদ্য তালিকা থেকে ইলিশ বর্জনের ঘোষণা রয়েছে। এছাড়া জাতীয় মাছ ইলিশ রক্ষায় নববর্ষ উদযাপনের দিন খাদ্য তালিকা থেকে ইলিশ বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এসব কারণে খাবারের তালিকায় অনেকে ইলিশের পরিবর্তে বিভিন্ন মাছ, বেগুন ভাজি, ডিম ও মুরগির মাংস ভুনা রেখেছেন। আবার কেউ কেউ নববষের্র সঙ্গে পান্তা-ইলিশের কোনো সম্পর্ক নেই বলে পান্তা-ইলিশ বর্জন করছেন বলেও জানা যায়।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৭
এমআরএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।