ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

আফ্রিকায় ব্যাংক করতে চায় নিটল-নিলয় গ্রুপ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০১৭
আফ্রিকায় ব্যাংক করতে চায় নিটল-নিলয় গ্রুপ

ঢাকা: পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ায় ব্যাংক স্থাপন করতে চায় বেসরকারি খাতের নিটল-নিলয় গ্রুপ। সেখানে মূলধন পাঠাতে অনুমোদন চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করেছে গ্রুপটি।

আইনি বাধ্যবাধকতা থাকায় অনুমতি দেওয়ার আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের মতামত চেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

নিটল-নিলয় গ্রুপের মালিক দেশের ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই)  সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমাদ।

নিটল-নিলয় গ্রুপ দেশে ভারতের টাটা মোটরসের বাস-ট্রাক ও ভারতের হিরো হোন্ডার পরিবেশক। আর্থিক প্রতিষ্ঠান, উৎপাদনমুখী শিল্প, শহরতলী স্যাটেলাইট বিল্ডিংসহ আরও কয়েক ধরনের ব্যবসাও রয়েছে গ্রুপটির।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ০৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিয়োগ বিভাগে করা নিটল-নিলয় গ্রুপের আবেদনে বলা হয়েছে, আফ্রিকার গাম্বিয়ায় বাণিজ্যিক ব্যাংক ‘গাম্বিয়া কর্মাস অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল ব্যাংক লিমিটেড’ স্থাপনে ০৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (ইক্যুইটি ইনভেস্টমেন্ট) সেখানে পাঠানো দরকার।

পশ্চিম আফ্রিকার দেশটির রাষ্ট্রীয় নাম গাম্বিয়া ইসলামি প্রজাতন্ত্র। এটি আফ্রিকা মহাদেশের মূল ভূখণ্ডের ক্ষুদ্রতম দেশ। ২০০৯ সালের তথ্যানুসারে দেশটির জনসংখ্যা ১৭ লাখ ৫ হাজার। মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৪৩০ ডলার।

‘বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় নিয়ন্ত্রণ আইন-১৯৪৭ (২০১৫ সালে সংশোধিত)’ এর ধারা-৪ এর উপধারা ৬ অনুসারে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের বিদেশে ইক্যুইটি ইনভেস্ট করতে সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের পরামর্শ নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

এর আলোকে অনুমতি দেওয়ার আগে বিভাগটির অনুমতি চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে ‘প্রচলিত বৈদেশিক লেনদেন ব্যবস্থায় নিবাসী বাংলাদেশিদের বিদেশে মূলধন বিনিয়োগ অবাধ উন্মুক্ত নয়’ বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

একই সঙ্গে অনুমতি দেওয়ার আগে বিদেশে পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রা ভিন্নখাতে প্রবাহিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিতকরণ, বিনিয়োগকৃত অর্থ ও মুনাফা দেশে ফেরানোর বিষয়টি কিভাবে নিশ্চিত করা হবে, কোন কোন খাতে বিনিয়োগের সুযোগ দিলে দেশ লাভবান হবে- তা বিবেচনা করা ও বিদেশে দেশি কর্মসংস্থান বাড়বে কি-না, সেগুলো নিশ্চিতেরও পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সূত্র আরও জানায়, সরকার দেশজুড়ে একশ’টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়ে বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করেছে। সেগুলোতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগও আহবান করা হয়েছে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলেও বিনিয়োগ করতে পারে নিটল-নিলয় গ্রুপ।

বাংলাদেশ পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান মনসুর এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে না গেলেও সীমিতভাবে বিদেশে ইক্যুইটি ইনভেস্টমেন্টের পরামর্শ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে নিটল-নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুল মাতলুব আহমাদকে ফোন করা হলেও তিনি বিদেশে থাকায় ধরেননি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা বাংলানিউজকে বলেন, কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান বিদেশে ইক্যুইটি ইনভেস্টমেন্টের আবেদন করলে আইনগতভাবেই মতামতের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে পাঠানো হয়। সেখান থেকে ইতিবাচক মতামত পেলে অনুমোদন দেওয়া হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে,  নিটল-নিলয় গ্রুপ ছাড়াও আকিজ জুট মিলস লিমিটেড মালয়েশিয়ায় দু’টি কোম্পানি অধিগ্রহণে ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং হা-মীম গ্রুপ হাইতিতে পোশাক কারখানা স্থাপনে ১০ দশমিক ৪৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ইক্যুইটি ইনভেস্টমেন্টের আবেদন করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ০০৪৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০১৭
এসই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।