ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

‘বাঁশফুল’ চালের ভাত আর ‘তামরি’ চালের খিচুড়ি  

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০১৭
‘বাঁশফুল’ চালের ভাত আর ‘তামরি’ চালের খিচুড়ি   হারিয়ে যাওয়া অনেক চাল- ছবি- জি এম মুজিবুর

ঢাকা: হাল ফ্যাশন বা আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে গেছে অনেক ঐতিহ্য। এতে বাদ যায়নি খাবারও। সুগন্ধি বিভিন্ন চালের তৈরি সেসব খাবার বর্তমান প্রজন্ম খাবে তো দূরের কথা, নামও শুনেনি এমন অনেক চাল রয়েছে। কোন চাল কী রান্নার জন্য ভালো, কোন চালের ঘ্রাণ কেমন, আর কোনটাতে পোলাও, কোনটাতে খিচুড়ি সুস্বাদু হয়, এসব তাদের জানারও কথা নয়।

কারণ ‘মিনিকেটে’র এ যুগে প্রায় হারিয়ে গেছে বাংলার অনেক জাতের ধান। আহ! ‘বাঁশফুল’ চালের ভাত আর ‘তামরি’ চালের খিচুড়ির যে কী স্বাদ, তা কেবলে চাখলেই বোঝা যায়।


 
এমন করেই কথাগুলো বলছিলেন চিত্রা অর্গানিক কৃষিবাজারের পরিচালক সুস্মিতা হক সূচি।  

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) চলমান এসএমই মেলায় হারিয়ে যাওয়া হরেক জাতের চাল নিয়ে পসরা সাজিয়েছে চিত্রা অর্গানিক কৃষিবাজার।
 
মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, মানুষের ব্যাপক আগ্রহ এসব চালের প্রতি। বিক্রিও বেশ হচ্ছে। এতে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েই খুশি। প্রদর্শনী দেখে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি ঢেঁকিছাঁটা আউশ ধানের চাল বিক্রি করছে কেজি প্রতি ৬০ টাকা দরে। চিনিগুড়া প্রতি কেজি ১১০ টাকা, বাঁশফুল ৬০ টাকা, ঢেঁকিছাঁটা লাল বালাম ৬০ টাকা, কালো বিন্নি ১৫০ টাকা, লাল বিন্নি ১৫০ টাকা আর সাদা বিন্নি ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  খিচুড়ির জন্য আমরি

এছাড়া খিচুড়ির জন্য তামরি চাল ৯০ টাকায়, রাঁধুনী পাগল ১৩০ টাকায় আর বিরুই ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
 
অন্যদিকে লাল চিড়া বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়, বিন্নি ধানের খই ১২০ টাকায় ও মুড়ি ১২০ টাকায়। রাজধানীর ভোজনরসিক মানুষগুলো অনেকটা যেন নস্টালজিয়ায় ভুগছেন। প্রতিষ্ঠানটির স্টলে যেই এসেছেন সেই কোনো না কোনো চাল নিয়ে ফিরেছেন।
 
বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা আমানুর রহমান আতিক বাংলানিউজকে বলেন, ঢেঁকিছাঁটা চাল এখন কই পাবো? বাজারে তো নেই বললেই হয়। আবার তামরিও তেমন পাওয়া যায় না। কিন্তু খিচুড়ির জন্য এ চালের কোনো তুলনা নেই। অন্যদিকে লাল বিন্নি, ঢেঁকিছাটা লাল বালাম, বাঁশফুল এসবের কোনো তুলনাই হয়না। তাই কয়েক প্রকারের চাল এক কেজি করে নিয়ে নিলাম। বিশেষ করে বাঁশফুল তো রান্নার সময় ব্যাপক ঘ্রাণ ছড়ায়।
 
পরিচালক সুস্মিতা হক বলেন, এসব চাল নিজস্ব খামারে উৎপাদন করা হয়। এছাড়া কোনো বিষ, ক্যামিক্যাল, সার দেওয়া হয় না। সব চালই অর্গানিক। মেলায় ভালো বিক্রি হচ্ছে, অনেকে আবার অর্ডারও দিচ্ছেন। মেলা শেষে তাদের পৌঁছে দেওয়া হবে।
 
প্রতিষ্ঠানটি এসব চাল ছাড়াও আতপ চাল, বুরো ধানের চাল, জিংগা শাইল, কাউন চাল, বাংলামতি চাল বাজারজাত করে থাকে। মেলায় তাদের প্রায় ১০০ প্রকারের নানা জাতের শস্য ও খাদ্য দ্রব্যের বিক্রি ও প্রদর্শনী চলছে।
 
এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে পঞ্চম জাতীয় এসএমই মেলার পর্দা ‍নামবে আগামী ১৯ মার্চ।
 
**ডায়াবেটিস রোগীদের উপযোগী লো জিআই চাল-আটা
**বেলা গড়াতেই মুখরিত এসএমই মেলা

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০১৭
ইইউডি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।