ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ব্যাংকিং

দশ টাকার হিসাবদধারীদের ঋণ বিতরণে প্রণোদনা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৭
দশ টাকার হিসাবদধারীদের ঋণ বিতরণে প্রণোদনা

ঢাকা: ক্ষুদ্র-প্রান্তিক-ভূমিহীন কৃষক ও প্রাকৃতিক দ‍ুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত নিম্ন আয়ের পেশাজীবী এবং প্রান্তিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ঋণদানকারী ব্যাংকগুলোকে প্রণোদনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের দুইশ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল থেকে ঋণ বিতরণের জন্য চুক্তিবদ্ধ ব্যাংক ও মাইক্রো ফাইন্যান্স ইনস্টিটিউট এ সুবিধা পাবেন।

আর্থিক সেবাবঞ্চিত তৃণমূল জনগোষ্ঠীকে প্রাতিষ্ঠানিক আর্থিক সেবায় আনার লক্ষ্যে ১০ টাকার হিসাবগুলো সচল রাখার উদ্দেশ্যে তাদের সহজ শর্তে ঋণ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৪ সালের ১৪ মে ২০০ কোটি টাকার আবর্তনশীল পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করে।

এ তহবিল থেকে প্রদত্ত ঋণ যথাযথভাবে নির্ধারিত সময়ে আদায়ের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট হারে ঋণ বিতরণকারী ব্যাংক এবং ক্ষেত্র বিশেষে এনজিওগুলো প্রণোদনা রেয়াত পাবে। বিভিন্ন মেয়াদে বিতরণকৃত ঋণসমূহের মধ্যে যেসকল ঋণ গ্রাহক পর্যায় থেকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সুদসহ আদায় করেছে সব ঋণের জন্য প্রণোদনা রেয়াত প্রদত্ত হবে।
 
ঋণের শেষ বা চূড়ান্ত কিস্তি পরিশোধের তারিখে সাপ্তাহিক বা সরকারি বন্ধ থাকলে, পরবর্তী কার্যদিবসে আসল ও সুদসহ সমুদয় অর্থ পরিশোধিত হলেও তা নির্ধারিত সময়ে পরিশোধিত হয়েছে বলে গণ্য করা হবে।
 
নীতিমালা অনুযায়ী নির্ধারিত মেয়াদ শেষে কোন ঋণ সম্পূর্ণ বা আংশিক অনাদায়ী থাকলে এবং খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রে এ সুবিধা প্রযোজ্য হবে না। ব্যাংক-এনজিও লিংকেজে বিতরণকৃত ঋণ এনজিও কর্তৃক ব্যাংকের টাকা পরিশোধ করা হয়েছে কিন্তু এমএফআই এর কোনো গ্রাহক কর্তৃক গৃহীত ঋণের আংশিক বা সম্পূর্ণ আদায় হয়নি, সেক্ষেত্রে গ্রাহকের গৃহীত ঋণের জন্য ব্যাংক এবং এমএফআই প্রণোদনা রেয়াত প্রাপ্য হবে না। সরাসরি বা ব্যাংক–এনজিও লিংকেজের মাধ্যমে ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে প্রান্তিক ঋণগ্রহীতা ঋণ হিসাব সমন্বিত (সম্পূর্ণরূপে পরিশোধিত) না হলে ব্যাংক বা এনজিও প্রণোদনা রেয়াত প্রাপ্য হবে না। নির্দিষ্ট ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত প্রণোদনা রেয়াতের দাবিসমূহ দ্বৈবচয়ন ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক পরিদর্শন করা হবে।

পরিদর্শনে প্রাপ্ত ফলাফলের সঠিকতার শতকরা হার অনুযায়ী প্রণোদনা রেয়াত দাবি হিসাবায়ন করা হবে। দ্বৈবচয়ন ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক পরিদর্শন করার জন্য প্রাপ্ত দাবিসমূহ টাকার অংকে বিবেচনা করা হবে।

বিতরণকৃত ঋণ যে সময়কালের জন্য প্রদান করা হয়েছে, সুদসহ উক্ত মেয়াদের নির্ধারিত তারিখের মধ্যে আদায়কৃত ঋণের উপর ৩ দশমিক ৫ শতাংশ হারে ক্রমহ্রাসমান পদ্ধতিতে প্রণোদনা রেয়াত প্রদান করা হবে।
 
নির্ধারিত সময়ে গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণকৃত ঋণের ১ কিস্তির অর্থ অনাদায়ী থাকলেও উক্ত ঋণের বিপরীতে কোনো প্রণোদনা রেয়াত প্রদান করা হবে না।

পরিদর্শন প্রতিবেদন এর সুপারিশ অনুযায়ী যথাযথ এবং সন্তোষজনকভাবে আদায়কৃত ঋণের শতাংশ হিসেবে সুদ প্রণোদনা রেয়াতের প্রাপ্য তা হিসাবায়ন করা হবে। যেহেতু এ তহবিলটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে আর্থিক সেবাভুক্তির আওতায় নিয়ে আসার উদ্দেশ্যে গঠিত একটি বিশেষ তহবিল এবং তাদের প্রাতিষ্ঠানিক ও আর্থিক শিক্ষার অপর্যাপ্ততা রয়েছে, সেহেতু কিছু গ্রাহক অসচেতনতা অথবা প্রাকৃতিক কারণেও যথাসময়ে ঋণের কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হতে পারে।

এসকল ক্ষেত্রে ঋণ প্রদানকারী ব্যাংক/এনজিও কর্তৃক বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে ঋণ মেয়াদের (৩-৬-৯-১২মাস নির্বিশেষে) পরের ৩ মাসের মধ্যে গ্রাহক কর্তৃক উক্ত ঋণ পরিশোধ করা হয়, তাহলেও ব্যাংক-এনজিও ঋণ মেয়াদের (৩-৬-৯-১২মাস) জন্য প্রণোদনা রেয়াত প্রাপ্য হবে।

তবে এ তহবিলের আওতায় বিতরণকৃত যে সকল ঋণ এক কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য, সে সকল ঋণ ব্যতীত অন্য সকল ঋণের ক্ষেত্রে ব্যাংক কর্তৃক ন্যূনতম ৫০ শতাংশ ঋণ নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে আদায় করা হলেই প্রণোদনা রেয়াতের বিষয়টি বিবেচিত হবে।
 
এনজিও লিংকেজের মাধ্যমে গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ বিতরণ করা হলে প্রাপ্যতা অনুযায়ী ঋণ বিতরণকারী ব্যাংক পাবে হিসাবকৃত ৩ দশমিক ৫ শতাংশ প্রণোদনা রেয়াতের মধ্যে ব্যাংক পাবে ১ শতাংশ এবং এনজিও পাবে দুই দশমিক ৫ শতাংশ।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৭
এসই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।