ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

আরএডিপি ১১৬২৬৩ কোটি টাকা, কমছে পিএ, বাড়ছে জিওবি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৭
আরএডিপি ১১৬২৬৩ কোটি টাকা, কমছে পিএ, বাড়ছে জিওবি আরএডিপি

ঢাকা: পদ্মাসেতু ও মেট্রোরেলসহ ১০টি মেগা প্রকল্পকে গুরুত্ব দিয়ে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জন্য ১ লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকার  বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) অনুমোদন দেয় সরকার। তবে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (আরএডিপি) ১ লাখ ১৬ হাজার ২৬৩ কোটি ১৭ লাখ টাকার বরাদ্দ প্রস্তাব করতে যাচ্ছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।

ফলে  এডিপি থেকে আরএডিপি’তে বরাদ্দ বাড়ছে ৫ হাজার ৫৬৩ কোটি ১৭ লাখ টাকা।   তবে প্রকল্প সাহায্য (পিএ) কমলেও বাড়ছে সরকারি অর্থায়ন (জিওবি খাত)।

এদিকে নতুন অর্থবছরে এডিপিতে প্রকল্পের সংখ্যা হবে ১ হাজার ২৯৬টি।  তবে স্বায়ত্ত্বশাসিতসহ মোট উন্নয়ন বাজেট দাঁড়াচ্ছে ১ লাখ ২৩ হাজার ৩৪৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা।  এডিপি’র বরাদ্দ ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেট থেকে মেটানো হবে।

তবে এডিপি থেকে আরএডিপিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের আসছে।  মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় প্রস্তাবিত আরএডিপি’র অনুমোদন দেওয়া হবে।

তবে বরাবরের মতো এবারও মন্ত্রণালয় ও বিভাগের চাহিদা অথবা আবদারের পরিপ্রেক্ষিতে কয়েক হাজার কোটি টাকা বাড়তি বরাদ্দ দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।

আরএডিপি নিয়ে বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়। সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগের চাহিদাও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।   বর্ধিত সভা ছাড়াও সংশ্লিষ্টদের নিয়ে ছোট ছোট সভা করছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও পরিকল্পনা সচিব জিয়াউল ইসলাম।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ৫১টি খাতে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১ লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকার এডিপি নির্ধারিত হয়েছিলো।  এর মধ্যে সরকারি নিজস্ব তহবিল থেকে ৭০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক উৎস থেকে ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা রয়েছে।

কিন্তু চলতি অর্থবছরে আরএডিপিতে জিওবি বাবদ অতিরিক্ত চাহিদা রয়েছে ১৩ হাজার ৯৬৬ কোটি ৯১ লাখ টাকা।  ফলে মোট জিওবি বরাদ্দের প্রস্তাব করা হবে ৮৪ হাজার ৬৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকা।  অন্যদিকে প্রকল্প সাহায্য চাহিদা ৮ হাজার ৪২৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা কমে দাঁড়াচ্ছে ৩১ হাজার ৫৭৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা।

এদিকে স্বায়ত্ত্বশাসিত সংস্থা ও কর্পোরেশনগুলোর নিজস্ব অর্থায়নের চাহিদা আরএডিপি’তে কমছে ৪ হাজার ৯৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা।  ফলে এর মোট চাহিদা কমে দাঁড়াচ্ছে ৮ হাজার ৫৫২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

সব মিলিয়ে জিওবি, প্রকল্প সাহায্য এবং স্বায়ত্ত্বশাসিত সংস্থা ও কর্পোরেশনগুলোর নিজস্ব অর্থায়নের চাহিদা যোগ করে মোট আরএডিপি’র পরিমাণ দাঁড়াতে যাচ্ছে ১ লাখ ২৪ হাজার ৮১৫ কোটি ৪৭ লাখ টাকা।  এডিপিতে এ খাতের মোট বরাদ্দ ছিলো ১ লাখ ২৩ হাজার ৩৪৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা।

সূত্র জানায়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত ২৭৮টি প্রকল্পের অতিরিক্ত চাহিদা আরএডিপি’তে ৪ হাজার ২২৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকার প্রস্তাব করা হবে।  এর মধ্যে জিওবি ৩ হাজার ৫৪৭ কোটি ৭৩ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ৬৭৮ কোটি ৭২ লাখ টাকা।  একই অর্থবছরে আরএডিপি’তে নতুন অনুমোদিত প্রকল্পের সংখ্যা ২৪৮টি।  এসব প্রকল্পের আওতায় মোট বরাদ্দ থাকছে ৯ হাজার ৮৫৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা।  এর মধ্যে জিওবি ৬ হাজার ৮৭২ কোটি ৬৭ লাখ এবং প্রকল্প সাহায্য ২ হাজার ৯৮০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

গত এডিপিতে বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ১০টি মেগা প্রজেক্টের মধ্যে পদ্মাসেতু ও মেট্রোরেলকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে পদ্মাসেতুতে বরাদ্দ ছিলো ৬ হাজার ২৬ কোটি টাকা। কিন্তু খরচ করতে না পারার কারণে দেড় হাজার কোটি টাকা কমছে।

অন্য ৮টিতে ২০ হাজার ৫১৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।  এর মধ্যে ‘মাতারবাড়ি এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র’ নির্মাণে বরাদ্দ ছিলো ২ হাজার ৯১৯ কোটি  টাকা।  সময়মতো জাপানি পরামর্শক না আসা ও সংশ্লিষ্টদের বাস্তবায়নে অদক্ষতার কারণে এ প্রকল্পের মাত্র ৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।  বাকি ২ হাজার ৬১৯ কোটি টাকা কমছে আরএডিপি’তে।

 

পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাংলানিউজকে বলেন, ‘মঙ্গলবার এনইসি সভায়  আরএডিপি’তে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৬৩ কোটি ১৭ লাখ টাকার বরাদ্দ প্রস্তাব করা হবে।   সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবরা উপস্থিত থাকবেন।  এসব মন্ত্রণালয়ের খরচ করার সক্ষমতা যাচাই করা হবে।  যদি অতিরিক্ত খরচ করার সক্ষমতা থাকে, তবে প্রধানমন্ত্রী অতিরিক্ত বরাদ্দ দিতে পারেন’।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলার কারণে মেগা প্রকল্পের পরামর্শকেরা আসতে পারেননি।  যেমন মেট্রোরেল ও মাতারবাড়ি প্রকল্পের জাপানি পরামর্শকরা সময়মতো আসতে পারেননি।  এ প্রকল্পে যা বরাদ্দ ছিলো, তা খরচও হয়নি।  যে কারণে এবার আরএডিপিতে প্রকল্প সাহায্যের টাকা কমছে।  তবে টাকা টাকাই, সেটা পিএ (প্রকল্প সাহায্য) হোক, আর জিওবি হোক। আশা করছি, সামগ্রিকভাবে আরএডিপি’র বরাদ্দ বাড়বে’।

 

পদ্মাসেতু প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এডিপি’র তুলনায় আরএডিপি’তে দেড় হাজার কোটি টাকা কমবে’।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৭
এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad