ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

কৃষি

শ্রীলংকায় চিনির মজুদ গড়ছে ব্যবসায়ীরা!

রহমান মাসুদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৬
শ্রীলংকায় চিনির মজুদ গড়ছে ব্যবসায়ীরা!

ঢাকা: বিশ্ব বাজারে চিনির দাম বেশি- দোহাই দিয়ে কেজি প্রতি ৫ টাকা দাম বাড়ানোর আর্জি জানিয়েছিলেন চিনি আমদানিকারকরা। অভিযোগ উঠেছে, সেই আবদারে সাড়া না দেওয়ায় সরকারকে বিব্রত করতে ভিন্ন পথ বেছে নিয়েছেন তারা।

ইতোমধ্যে চিনি আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খোলার পরিমাণ অর্ধেকে নেমে এসেছে। অন্যদিকে আমদানিকারকরা শ্রীলংকায় চিনির মজুদ গড়ে তুলেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশের বাজারের চেয়ে বিশ্ববাজারে চিনির দাম বেশি দ‍াবি করছেন আমদানিকারকরা। এরই মধ্যে তারা চিনি আমদানির ঋণপত্র (এলসি) খোলা কমিয়ে দিয়েছে। এবার যে পরিমাণ আমদানি হয়েছে তা গত বছরের তুলনায় অর্ধেকেরও কম। ফলে দেশের বাজার স্থিতিশীল রাখতে বিকল্প চিন্তা করছে সরকার।

অন্যদিকে আমদানিকারকরা আগের এলসি’র চিনি বিভিন্ন অজুহাতে শ্রীলংকার বন্দরগুলোতে মজুদ করছে বলে অভিযোগ এসেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে। মন্ত্রণালয় প্রাথমিক তদন্তে এর সত্যতাও মিলেছে বলছে দায়িত্বশীল সূত্র।

এ প্রসঙ্গে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন (এনডিসি) এ বিষয়ে বাংলানিউজকে বলেন, শ্রীলংকায় একটা কিছু ঘটেছে। তবে এ বিষয়ে এখনই বিস্তারিত বলা যাবে না। বিষয়টির দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে মন্ত্রণালয়।

তিনি বলেন, চিনি একটি আমদানি নির্ভর পণ্য। আমরা ইচ্ছা করলেই ৫/১০ দিনে বাজারে প্রভাব ফেলতে পারি না। এজন্য সময় লাগে। আরও বড় অসুবিধা হলো এক সময়ের উল্লেখযোগ্য চিনি রফতানিকারক দেশ ভারত এখন নিজেই বড় ধরনের আমদানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে।

ফলে আর্ন্তজাতিক বাজার এখন একটি ‘গেম প্লেস’এ পরিণত হয়েছে। আমাদের মতো ছোট দেশের মোকাবেলা করা কঠিন হলেও আমরা এ নিয়ে চিন্তা করছি।

হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন বলেন, সামনে নতুন মৌসুম। আশা করি বাজার নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। তবে বিশ্ব বাজার কবে স্বাভাবিক হবে তা বলা কঠিন। এক বছর আগেও যে চিনি বিশ্ব বাজারে ৩২৯ ডলারে বিক্রি হয়েছে, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৫৯০ ডলার পর্যন্ত। এতে দাম বাড়াটাই স্বাভাবিক। তবে তা যেনো জনগণের ক্রয় ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ না করে, সে বিষয়ে মন্ত্রণালয় সচেতন আছে।

তিনি জানান, বিশ্ব বাজারে চিনির দর দেশের বাজারের তুলনায় বেশি- জানিয়ে এরই মধ্যে আমদানিকারকরা এলসি খোলা কমিয়ে দিয়েছেন। এই পরিস্থিতি মোকাবেলার কথাও ভাবছে সরকার। অচিরেই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দেশের বৃহত্তম চিনি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক বিশ্বজিৎ সাহা চিনির বাজার সম্পর্কে বলেন, বাজার এখন খুবই ঝুঁকির মধ্যে আছে। বিশ্ব বাজারে প্রতি টন চিনির দাম কখনো ৫৯০ ডলার থেকে ৫২০ ডলারে নেমে যাচ্ছে। আবার হয়তো পরের দিনই তা ৫৫০ ডলারে গিয়ে পৌঁছাচ্ছে। এতে করে ব্যবসায় ঝুঁকি বাড়ছে। এই ঝুকিঁর কারণেই হয়েতো এলসির পরিমাণ কমছে।

তবে শ্রীলংকায় চিনির মজুদ গড়ার বিষয়ে কিছু জানেন না বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ সময় দ্রুত দেশের বাজারের চিনির দর কমতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন বিশ্বজিৎ সাহা।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৬
আরএম/এটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।