ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

কৃষি

ভালোমানের সোনালী আঁশ ঘরে তুলতে যা করণীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৬
ভালোমানের সোনালী আঁশ ঘরে তুলতে যা করণীয়

ঢাকা: চাষিরা এখন পাট কাটা, জাগ দেওয়ার পাশাপাশি পাটের আঁশ ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এই সোনালী আঁশ যত উন্নত মানের হবে তত ভালো দাম পাবেন চাষিরা।

তাই যত্নে ঘরে তুলতে হবে পাটের আঁশ।  

ভালো মানের আঁশ উৎপাদনের জন্য সঠিক সময়ে পাট কাটা, সঠিকভাবে জাগ দেয়াসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গুরুত্বসহকারে সম্পাদন করতে হবে। কৃষিবিদ ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ পাট চাষিদের জন্য তুলে ধরা হলো।
 
পাট কাটা ও জাগ দেয়া: ভালমানের আঁশ উৎপাদনের জন্য পাট গাছে ফুলের কুড়ি আসা মাত্রই পাট কাটতে হবে। কাটার পর চিকন ও মোটা পাট গাছ আলাদা করে আঁটি বেঁধে পাতা ঝড়িয়ে গাছের গোড়া তিন থেকে চার দিন এক ফুট পানিতে ডুবিয়ে রাখতে হবে। পরে পরিস্কার পানিতে জাগ দিতে হবে।
 
জাগ দেওয়ার জন্য খুব গভীর পানির দরকার নেই। মাঠে ঘাসের ওপর এক ফুট থেকে দেড় ফুট পানি থাকলে সেখানেও জাগ দেওয়া যায়। তবে পাট গাছ বেশি হলে জাগ ডুবিয়ে রাখার মতো গভীর পানির দরকার হয়।
 
মাঠে ঘাস থাকলে পাট গাছগুলো মাটির সংস্পর্শে আসে না, ফলে পাটের রং ভাল থাকে। ঘাস না থাকলে কিছু খড় বিছিয়ে তার উপরও জাক দেওয়া যায়। জাগের ওপর কচুরী পানা বা খড় বিছিয়ে দিলে খুব ভাল হয়, তবে কখনই সরাসরি মাটি দিয়ে চাপা দেওয়া যাবে না।
 
 জাগ দেওয়ার পর নিয়মিত গাছ পরীক্ষা করে দেখতে হয় যাতে বেশি পঁচে না যায়। আঁশ মাটিতে বসিয়ে না নিয়ে পানিতে ভাসিয়ে নেওয়া ভাল। কেননা তাতে আঁশে মাটি, কাঁকর থাকার সম্ভাবনা কমে যায়। এরপর পরিস্কার পানিতে ধোয়া দরকার।
 
পানির অভাব হলে যা করতে হবে: পানির অভাব দেখা দিলে অথবা জাগ দেওয়ার জায়গা না থাকলে পাট গাছ না পঁচিয়ে পাট গাছের ছাল পঁচানো যায় এবং এতে পঁচন তাড়াতাড়ি শেষ হয়।
 
এ জন্য বাঁশের খুটির মাথায় ইংরেজি অক্ষর ইউ এর মত করে কেটে তার মাঝে পাট গাছ রেখে অতি সহজে গাছ থেকে ছাল ছড়ানো সম্ভব। এরপর চাড়িতে বা চারকোণা গর্ত করে পাটের ছাল জাগ দেয়া যায়। পঁচানোর সময় পঁচন পানিতে যদি ছালের ওজনের আনুমানিক ৩৭ কেজি ওজনের জন্য ৫ গ্রাম ইউরিয়া সার মিশিয়ে দেয়া যায় তবে পঁচন আরো তাড়াতাড়ি হয়।

 
গোড়ার দিকের কালো অংশ বা কাটিংস দূর করার উপায়: সঠিক পদ্ধতিতে পাট না পঁচানোর জন্য অথবা পঁচন পানির অভাবজনিত কারণে পাট আঁশ ছালযুক্ত ও নিচু মানের হলে পাট আঁশের ওজন প্রতি ৩৭ কেজিতে ৫ গ্রাম ইউরিয়া পানিতে মিশিয়ে আঁশের গোড়ায় ছালযুক্ত স্থানে ছিটিয়ে দিয়ে এক সপ্তাহ পলিথিন বা ছালা দিয়ে ঢেকে রেখে গোড়ার দিকটা পুনরায় ধুয়ে নিলেই আঁশ ছালমুক্ত হয় এবং আঁশের মানও ভাল হয়।

ধোয়া  আঁশ কখনই মাটির উপর বিছিয়ে শুকাতে নেই। বাঁশের আড়, রেলিং, ঘরের চাল ইত্যাদিতে বিছিয়ে শুকানো ভাল। মনে রাখবেন উন্নতমানের আঁশের দাম সর্বোচ্চ এবং সব সময় এর গ্রাহক থাকে। পক্ষান্তরে নিম্নমানের অতিরিক্ত পঁচানো, কম পঁচানো, রঙ জলা, কালচে, বাকল, কাঠি লেগে থাকা আঁশের বাজার মূল্য সব সময়ই কম হয়ে থাকে।
 
এর বাইরে আরও তথ্য জানার জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বা উপজেলা কৃষি অফিসে যোগাযোগ করা যেতে পারে। এছাড়া স্বল্প মূল্যে মোবাইল থেকে ১৬১২৩ নম্বরে (শুক্রবার ছাড়া) প্রতিদিন সকাল ৯টা হতে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ফোন করে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৬
একে/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।