ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শেয়ারবাজার

দুই বছরের সর্বনিম্ন দরে আরামিট সিমেন্ট

শেখ নাসির হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১৪
দুই বছরের সর্বনিম্ন দরে আরামিট সিমেন্ট

ঢাকা: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট খাতের আরামিট সিমেন্ট কোম্পানির শেয়ার গত দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন দরে অবস্থান করছে।
 
যদিও সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ তাদের শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে।


 
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটে দেওয়া কোম্পানির প্রোফাইল থেকে জানা যায়, ২০১২ সালের মে মাসে এ কোম্পানির শেয়ার বিক্রি হয়েছিল ১২৭ টাকায়। একই বছর জুলাই মাসে এ শেয়ারের দর ৬৫ টাকায় নেমে আসে। এরপর থেকে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেশ ওঠানামা করতে দেখা যায়।

সর্বশেষ চলতি এপ্রিল মাসে এ কোম্পানির শেয়ার ৫২ থেকে ৫৭ টাকায় লেনদেন হচ্ছে। যা গত দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন দর।
 
এছাড়া গত ৫২ সপ্তাহের মধ্যে এ কোম্পানির শেয়ার সর্বনিম্ন ৫১ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৯৪ টাকায় ওঠানামা করে।

১৯৯৮ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৩৩ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
 
এছাড়া সম্প্রতি কোম্পানিটির রাইট শেয়ার দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ফেসভ্যালু ১০ টাকার সঙ্গে ৫ টাকা প্রিমিয়ামসহ মোট ১৫ টাকা অফার মূল্যে বাজারে মোট ১ কোটি ৬৯ লাখ ৪০ হাজার সাধারণ শেয়ার ছেড়ে মোট ২৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা উত্তোলন করেছে কোম্পানিটি।
 
সমাপ্ত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে মুনাফা বাড়লেও তৃতীয় প্রান্তিকে দ্বিতীয় প্রান্তিকের চেয়ে কমেছে। তবে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে। ২০১৩ অর্থবছরের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানির মুনাফা হয়েছিল ৯৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা, অর্ধবার্ষিকীতে মুনাফা হয়েছে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। তবে তৃতীয় প্রান্তিকে লোকসান হয়েছে ২২ লাখ ২০ হাজার টাকা।

অন্যদিকে প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ০ দশমিক ৫৭ টাকা, দ্বিতীয় প্রান্তিকে ১ দশমিক ৮৬ টাকা, তৃতীয় প্রান্তিকে লোকসান হয়েছে ০ দশমিক ১৩ টাকা এবং চতুর্থ প্রান্তিকে ইপিএস হয়েছে ২ দশমিক ৫৬ টাকা।
 
আরামিট সিমেন্ট কোম্পানির সচিব শাহ আলম বাংলানিউজকে বলেন, গত অর্থবছরের প্রতি প্রান্তিকেই আমাদের মুনাফা ঊর্ধ্বমুখী ছিল। এছাড়া বেড়েছে শেয়ার প্রতি আয়ও। এমনকি আমরা প্রতি বছরই শেয়ারহোল্ডারদের ভালো লভ্যাংশ দিচ্ছি। কিন্তু শেয়ার দাম কেন কমছে সে বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই। তবে বর্তমান বাজার পরিস্থিতি অনেক খারাপ হওয়ায় এবং বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট একটা কারণ হতে পারে। যে কারণে গত দুই বছর ধরে এ কোম্পানির শেয়ার দর কমছে।
 
 ‘এ’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানির বাজারে মোট শেয়ার রয়েছে ১ কোটি ৬৯ লাখ ৪০ হাজার। এর মধ্যে কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে রয়েছে ৪২ দশমিক ৮৬ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে ২৫ দশমিক ০৮ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৩২ দশমিক ০৬ শতাংশ শেয়ার।
 
এ বিষয়ে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, একটি কোম্পানির শেয়ার দর তার উৎপাদন, বাজার সম্প্রসারণ এবং কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের কী পরিমাণ লভ্যাংশ দিচ্ছে তার ওপর নির্ভর করে। যদি কোনো কোম্পানি ব্যবসা ভালো করে, মুনাফা ভালো করে এবং বিনিয়োগকারীদের কথা চিন্তা করে তবে সেই কোম্পানির শেয়ারের প্রতি তাদের আগ্রহ বাড়ে। কিন্তু যারা বাজর থেকে টাকা উত্তোলন করে পরবর্তীতে বিনিয়োগকারীদের কথা চিন্তা করে না, সেসব কোম্পানির ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমতে থাকে। ফলে ওই কোম্পানির শেয়ার দর নিম্নমুখী থাকে।
 
তারা আরও বলেন, যারা শেয়ারহোল্ডারদের টাকা দিয়ে ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করাসহ অন্য কাজে ব্যয় করে সেসব কোম্পানি ভবিষ্যতে ভালো ফল দেখাতে পারে না। এতে কোম্পানির পরিচালকরা হয়তো সাময়িকভাবে ভালো থাকেন। কিন্তু ঝুঁকিতে পরে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের বিনিয়োগ।
 
তবে তারা একথাও বলেন, যেহেতু এ কোম্পানির শেয়ার দর গত দুই বছর ধরে কমছে। অন্যদিকে কোম্পানির মুনাফা ও ইপিএস বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভবিষ্যতে এ ধারা যদি অব্যাহত থাকে তবে শেয়ারহোল্ডারদরা ভালো মুনাফা করতে পারবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।