ঢাকা: পুঁজিবাজারে স্মরণকালের রেকর্ড দরপতন নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে বিনিয়োগকারীদের ধৈর্য্য ধরার আহবান জানিয়েছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সভাপতি মো. শাকিল রিজভী ও চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সভাপতি মো. ফকরুউদ্দীন আলী আহমেদ।
রোববার সন্ধ্যায় বাংলানিউজকে দেওয়া বিশেষ প্রতিক্রিয়ায় তারা এ আহবান জানান।
প্রতিক্রিয়ায় পুঁজিবাজারে দরপতনকালে মার্চেন্ট ব্যাংকের আচরণে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তারা।
ডিএসই সভাপতি মো. শাকিল রিজভী বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমাদের দেশের অর্থনীতি বর্তমানে বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে। দেশের অর্থনীতিতে এমন কোনো বিপর্যয় নেমে আসেনি যে শেয়ারবাজারে বিপর্যয় নেমে আসবে। ’
তিনি বলেন, ‘বাজারের এই দরপতনের সময়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মতো আচরণ করছেন। এটা কোনোভাবেই তাদের কাছে কাম্য ছিলো না। বাজারে এই দরপতনের সময়ে প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের যে আচরণ করা উচিত ছিলো তারা তা করছেন না। ফলে বাজারে বড় ধরনের দরপতন হয়েছে। ’
দরপতনের বেশ কয়েকটি কারণও উল্লেখ করেন শাকিল বিজভী।
তিনি বলেন, ‘মবিল যমুনা ও এমআই সিমেন্টের আইপিও’র জন্য চলতি মাসে টাকা জমা নেওয়ায় বাজার থেকে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা চলে গেছে। একই সঙ্গে ব্যাংকের সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজগুলো বিনিয়োগকারীদের চাহিদা অনুযায়ী মার্জিন লোন দিতে পারছে না। তাই বাজারে এক ধরনের তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে বাজারে বড় ধরনের দরপতন হয়। বাজারে বেশ কিছু শেয়ার অতিমূল্যায়িত হয়ে পড়েছিল। একইসঙ্গে অনেক ভালো শেয়ারের দামও কমে গেছে। যা কাম্য ছিল না। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীদের ধৈর্য্য ধারণ করা উচিত। কোনভাবেই অধৈর্য্য হয়ে শেয়ার বিক্রি করে দেওয়া উচিত হবে না। ’
শাকিল বিজভী আরো বলেন, ‘পুঁজিবাজারের উর্ধ্বমুখীতার বিষয়ে দুই স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে ২০১০ সালের ৯ অক্টোবর আমরা বিনিয়োগকারীদের সাবধান করেছিলাম। এটা পুঁজিবাজারের ইতিহাসে বিরল ঘটনা। কিন্তু তারপরও বিনিয়োগকারীরা সচেতন হননি। ফলে যা হবার তাই হয়ে গেছে। তাই এই মুহূর্তে বিনিয়োগকারীদের কোনোভাবেই লোকসানে শেয়ার বিক্রি না করে প্রয়োজনে লভ্যাংশ ঘোষণা পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত। ’
চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সভাপতি মো. ফকরুউদ্দীন আলী আহমেদ বাজারের বড় ধরনের দরপতন সর্ম্পকে বাংলানিউজকে বলেন, ‘বাজারের এই দরপতনকালে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর আচরণ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মতো। বাজারের এই দরপতনকালে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর যে আচরণ করা দরকার ছিল তারা সেটা করছে না। ’
কি আচরণ করা দরকার ছিল এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি এর বেশি বলবো না। ’
সিএসই সভাপতি আরো বলেন, ‘বাজারের এই দরপতনের কোনো কারণ ছিল না। আমাদের পুঁজিবাজারের বাজার মূলধন প্রায় সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকা। সেখান থেকে ২০/৩০ হাজার কোটি টাকা চলে গেলে কিছু হবে না। কিন্তু বিনিযোগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। ’
তিনি আরো বলেন, ‘বাজারের এই অবস্থায় বিনিয়োগকারীদের মৌলভিত্তি সম্পন্ন শেয়ার ধরে রাখা উচিত। ’
বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০১১