ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

খাদ্য সূচকে মূল্যস্ফীতি আগামী মুদ্রানীতির বড় চ্যালেঞ্জ

সোহেল রহমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০১১

ঢাকা : মূল্যস্ফীতি বিশেষত খাদ্য সূচকে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা আগামী মুদ্রানীতির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব কেটে যাওয়ায় আন্তর্জাতিক অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে উঠছে।

ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল ও ভোগ্য পণ্যের দাম বাড়ছে। অন্যদিকে বিনিয়োগ স্থবিরতায় অভ্যন্তরীণ ঋণের চাহিদা কমে গেছে। ফলে বাড়ছে তারল্য। পাশাপাশি রেমিটেন্স প্রবাহ কম ও আমদানি ব্যয় বেড়েছে। সব মিলিয়ে মূল্যস্ফীতি আগামীতে আরও বেড়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
 
প্রসঙ্গত সর্বশেষ গত অক্টোবরে খাদ্য সূচকে গড় মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৮৩। অন্যদিকে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে খাদ্য সূচকে মূল্যস্ফীতির হার হচ্ছে- ৮ দশমিক ৭২। গত সেপ্টেম্বরে এই হার ছিল যথাক্রমে ৯ দশমিক ৭৮ এবং ৯ দশমিক ৬৪।
   
এদিকে মূল্যস্ফীতির রশি টেনে ধরতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এরই মধ্যে ‘সংকোচনমূলক’ নীতি অনুসরণ করতে শুরু করেছে। অনুৎপাদনশীল খাতে ঋণ প্রদানে ব্যাংকগুলোকে নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সংবিধিবদ্ধ জমার হার (স্ট্যাটিউটরি লিক্যুইডিটি রেশিও- এসএলআর) ও নগদ সংরক্ষণের (ক্যাশ রিজার্ভ রিকোয়ারমেন্ট - সিআরআর) হার বাড়ানো হয়েছে। গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে এই নতুন হার কার্যকর করা হয়েছে।  

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা ‘সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ’ (সিপিডি) অবশ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংকোচনমূলক নীতির সঙ্গে একমত নয়। আগামীতে বিদ্যমান মুদ্রানীতির পরিবর্তন না করার পরামর্শ দিয়ে সংস্থাটি সম্প্রতি বলেছে, ‘মূল্যস্ফীতির সাম্প্রতিক প্রবণতার সঙ্গে বর্তমান মুদ্রানীতির কোনো সম্পর্ক নেই’। সার্বিক মূল্যস্ফীতির সাম্প্রতিক প্রবণতা নিম্নমুখী উল্লেখ করে সংস্থাটি আরও বলেছে, ‘তবে চালের দাম উঠা-নামা করছে। পাইকারি ও খুচরা মূল্যে পার্থক্য অনেক বেশি’।
 
সিপিডি’র মতে, ‘রেমিট্যান্স, রিজার্ভ ও বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি এবং আমদানি বাড়ার কারণে আর্থিক খাতের ভারসাম্যের ওপর এক ধরনের চাপ সৃষ্টি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু সঠিক আর্থিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এই চাপ সামলানো সম্ভব। কারণ দেশের অর্থনীতিতে যে তারল্য রয়েছে, এতে করে অর্থের লভ্যতা বড় কোনো সমস্যা নয়। ’
   
পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের মতে, মূল্যস্ফীতি সহনীয় রাখতে হলে কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। এগুলো হচ্ছে- চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য মূল্য সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে পণ্যের সরবরাহ ঠিক রেখে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা, কৃষি ও শিল্পে উৎপাদন বাড়ানোর জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহরের ব্যবস্থা করা এবং যে কোনো মূল্যে মুদ্রার বিনিময় হার ঠিক রাখা। অর্থাৎ টাকার মান ধরে রাখতে হবে। ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে গেলে ভোগ্যপণ্য, মূলধনী যন্ত্রপাতি, শিল্পের কাঁচামালের আমদানি ব্যয় বেড়ে যাবে, যা মূল্যস্ফীতিকে আরও উসকে দেবে।

বাংলাদেশ সময় : ২০১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।