চট্টগ্রাম: প্রতিদ্বন্দ্বী এক পক্ষের বর্জনের মধ্যে দিয়ে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজের (সিসিসিআই) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নানা নাটকীয়তার পর হাইকোটের নির্দেশে সকাল ৯টায় নগরীর আগ্রাবাদে চেম্বার হাউসে ভোট গ্রহণ শুরুর আধ ঘণ্টার মধ্যেই নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয় প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেল চট্টগ্রাম ব্যবসায়ী পরিষদ।
ভোটগ্রহণ চলে বিকেল চারটা পর্যন্ত।
মোট ছয় হাজার ছয়শ’ ১২ ভোটারের মধ্যে তিন হাজার ছয়শ’ ৪২ জন ভোট প্রদান করে।
হাইকোটের নির্দেশ লঙ্ঘন করে নমিনী ভোটারের মাধ্যমে ভুয়া ভোট দেওয়ার অভিযোগ এনে তারা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়।
তবে নির্বাচন সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ হচ্ছে দাবি করে নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় রয়েছে অপর প্যানেল চট্টগ্রাম চেম্বার পরিষদ। এই পরিষদের নেতৃত্বে আছেন সরকার দলীয় সাংসদ ও চট্টগ্রাম চেম্বারের বর্তমান সভাপতি এম এ লতিফ।
অন্যদিকে বর্জনকারী প্যানেলের নেতৃত্বে আছেন সরকার দলীয় সাংসদ আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর ছেলে ও চট্টগ্রামের চেম্বারের তিন বার নির্বাচিত সাবেক সভাপতি সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ।
নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়ার পর মঙ্গলবার সকালে নিজ প্রতিষ্ঠান আগ্রাবাদের আখতারুজ্জামান সেন্টারে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা প্রহসনের নির্বাচন করতে চাই না। নির্বাচন কমিশন হাইকোর্টের নির্দেশ অবমাননা করে নমিনী ভোট নিয়ে নির্বাচন পরিচালনা করায় আমরা এই নির্বাচন বর্জন করেছি। ’
নির্বাচনে অনিয়মের বিরুদ্ধে আদালতে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়া হলে জানান তিনি।
নির্বাচনে নমিনী ভোট গ্রহণের কথা স্বীকার করলেও কোনো ধরনের প্রক্সি ভোট প্রদানের বিষয়টি নাকচ করেছেন নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান নাজমুল হক চৌধুরী।
এছাড়া কোনো প্যানেলের নির্বাচন বর্জনের বিষয়ে তিনি অবগত নন বলে বাংলানিউজকে জানান।
নমিনী ভোট গ্রহণের বিষয়ে চট্টগ্রাম চেম্বার পরিষদের প্যানেল লিডার এম এ সালাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘নমিনী ভোটারের এই পদ্ধতিতেই জাবেদ তিনবার সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার আমলে এই বিষয়টি ঠিক করা হয়নি। চট্টগ্রাম চেম্বারের আইনে আছে প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নমিনী ভোটার ভোট দিতে পারেন। ’
ব্যবসায়ী পরিষদের বর্জনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়ে তারা প্রচারণা চালিয়েছেন। সকালে নির্বাচন করতে এসেও হঠাৎ কেন চলে গেলেন বুঝলাম না। ’
মঙ্গলবার সকাল থেকে চেম্বার হাউসের চারতলায় স্থাপিত অস্থায়ী ভোটকেন্দ্রে লাইন ধরে বিপুল সংখ্যক ভোটারকে ভোট দিতে দেখা গেছে।
ছয় হাজার ভোটার চট্টগ্রাম চেম্বারের ২৪ জন পরিচালক নির্বাচিত করবেন। পরবর্তীতে নির্বাচিত পরিচালকরা চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি নির্বাচিত করবেন। এর মধ্যে ছয়জন পরিচালক বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
গত ২ নভেম্বর ব্যবসায়ী পরিষদের আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নির্বাচন স্থগিতের আদেশ দেয়। ৫ নভেম্বর এই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে দুটি রিট করেন চট্টগ্রাম চেম্বারের সচিব ওসমান গণি এবং চেম্বার পরিষদের নির্বাচিত পরিচালক মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিম।
সোমবার হাইকোর্ট রিট দুটি গ্রহণ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দেয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১০