ঢাকা: পুরান ঢাকার কেমিক্যাল কারখানাগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালালে তা প্রতিরোধ করার নির্দেশ দিয়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি একে আজাদ।
বৃহস্পতিবার এফবিসিসিআই সম্মেলনকক্ষে পুরান ঢাকার কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, ‘পুরান ঢাকার কেমিক্যাল কারখানা সরিয়ে ফেলার ব্যাপারে ১৩ নভেম্বর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের বৈঠক হবে। ওই বৈঠকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান বন্ধ রাখতে হবে। এ ব্যাপারে আজই (বৃহস্পতিবার) সরকারের কাছে চিঠি দেবে এফবিসিসিআই। ’
এরপরও অভিযান চালানো হলে সম্মিলিতভাবে তা প্রতিরোধ করতে ব্যবসায়ীদের নির্দেশ দেন এফবিসিসিআই সভাপতি। এক্ষেত্রে তিনি ব্যবসায়ীদের পাশে থাকবেন বলেও আশ্বাস দেন।
একে আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আবু নঈম মোহাম্মদ শহিদউল্লাহ, এফবিসিসিআই এর প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট জসিমউদ্দিন, পরিচালক মনোয়ারা হাকিম আলী, বাংলাদেশ চেম্বার অ্যান্ড কমার্স ইন্ডাস্ট্রিজ সভাপতি হেলাল উদ্দিন ও কেমিক্যাল ব্যাসায়ীরা বক্তব্য রাখেন।
একে আজাদ বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা কথা ও কাজে সৎ হলেই এফবিসিসিআই পাশে দাঁড়াবে। কিন্তু যে দাহ্য পদার্থ সরিয়ে ফেলার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে তা কারো কাছে পাওয়া গেলে এর দায়িত্ব পুরান ঢাকার ব্যবসায়ীদের নিতে হবে। ’
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বলেন, ‘পুরান ঢাকার বর্তমান পরিস্থিতির জন্য ব্যবসায়ীদের ব্যর্থতা রয়েছে। কেমিক্যাল কোথায় কিভাবে সরানো হবে এ ব্যাপারে আগেই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সিদ্ধান্তে পৌঁছার দরকার ছিল। ’
তিনি জানান, ফায়ার সার্ভিস লাইসেন্সের ১৯৬১ সালের আইন পরিবর্তন করে ফায়ার সার্ভিস অ্যাক্ট ২০১০ করা হচ্ছে। এ আইনে কারখানা ও গুদামের জন্য লাইসেন্স নেওয়ার বিধানও রয়েছে।
এর আগে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, ভ্রাম্যমাণ আদালত দাহ্য পদার্থ না পেলেও ফায়ার লাইসেন্সসহ বিভিন্ন অজুহাতে জরিমানা করছে।
ব্যবসায়ীরা আরো অভিযোগ করেন, ‘ভ্রাম্যমান আদালতের সঙ্গে কেমিক্যাল বিশেষজ্ঞ থাকার কথা থাকলেও অভিযানে তা থাকছে না। থাকছে না এফবিসিসিআই এর কোনো প্রতিনিধিও। উপরন্তু ফায়ার সাভির্সের পক্ষ থেকে ফায়ার লাইসেন্স দেওয়ার কথা থাকলেও ফায়ার সার্ভিসের গড়িমসি ও জটিল শর্তের কারণে দ্রুত লাইসেন্স নেওয়া যাচ্ছে না। আবার কারখানার পাশাপাশি গুদামঘরে আলাদাভাবে লাইসেন্স নেওয়ার বাধ্যাবাধকতা থাকছে।
ব্যবসায়ীদের দাবি, সরকারের পক্ষ থেকে ২০ টি কেমিক্যালের যে তালিকা দেওয়া হয়েছে সেগুলো এরই মধ্যে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এর পরেও বিভিন্ন অজুহাতে লাখ লাখ টাকা জরিমানা করছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সভায় এক ব্যবসায়ী জানান, তার সকল প্রকার লাইসেন্স আপডেট থাকার পরও এবং কারখানায় কোনো প্রকার দাহ্য না পেয়েও আদালত তার কারখানার টিনের চালে ছিদ্র থাকার অভিযোগে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন।
আদালতের এরকম অহেতুক হয়রানি বন্ধ না হলে প্রতিরোধ গড়বেন বলে ঘোষণা দেন ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০১০