ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

জিডিপিতে অর্থমন্ত্রীর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না: বিশ্বব্যাংক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০১০
জিডিপিতে অর্থমন্ত্রীর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না: বিশ্বব্যাংক

ঢাকা: চলতি অর্থবছর শেষে জাতীয় প্রবৃদ্ধির হার (জিডিপি) অর্থমন্ত্রীর নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না বলে ধারণা করছে বিশ্বব্যাংক।

বুধবার নিজস্ব কার্যালয়ে `ইধহমষধফবংয: ঝঃধঃব ঃযব ঊপড়হড়সু ধহফ ভরংপধষ ুবধৎ ২০১১ ঙঁঃষড়ড়শ` শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উপস্থাপন করে এ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানটি।



প্রতিবেদনে বিদ্যুৎখাতে বাংলাদেশের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক বলেও মন্তব্য করা হয়।

বিশ্বব্যাংকের মতে, চলতি অর্থবছর (২০১০-২০১১) শেষে বাংলাদেশের জিডিপির হার ৬ দশমিক ১ থেকে ৬ দশমিক ৩ শতাংশের মধ্যে থাকবে।

গত বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছিলেন, এবছর ৬ দশমিক ৫ থেকে ৭ শতাংশের মধ্যে নিয়ে যাওয়া হবে।

বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এর আগের বছর জিডিপির হার ছিল ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। এরও আগে ২০০৯ সাল শেষে ৯ দশমিক ৭, ২০০৮ সাল শেষে ৬ দশমিক ২ ও ২০০৭ সাল শেষে ছিল ৬ দশমিক ৪ শতাংশ।

এ বছর এখন পর্যন্ত খাদ্যমূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৩ শতাংশে। আগের অর্থবচরে এর হার ছিল ৬ দশমিক ৭। গত কয়েকমাসে এর ওঠানামা ছিল ৭ থেকে ৯ শতাংশের মধ্যে।

প্রতিবেদনে চট্টগ্রাম বন্দর কার্যকর রাখা ও শিল্প-কারখানায় স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর এলেন গোল্ডস্টেইন (ঊষষবহ এড়ষফংঃবরহ), লিড কান্ট্রি ইকোনোমিস্ট সঞ্জয় কাঠুরিয়া, সিনিয়র ইকোনোমিস্ট জাহিদ হোসাইন ও সেক্টর ডিরেক্টর আর্নেস্টো মে (ঊৎহবংঃড় গধু)
অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

প্রতিবেদনে স্থিতিশীল ক্ষুদ্র অর্থনীতির ফলে ২০১০ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধি হার বৃদ্ধি, উচ্চ ও অস্থির মূল্যস্ফীতি এবং যৌক্তিক মুদ্রানীতি বিষয়ে বিশ্লেষণ করা হয়।

এলেন গোল্ডস্টেইন (ঊষষবহ এড়ষফংঃবরহ) বলেন, ‘ বিগত কয়েকটি সরকার বেসরকারি বিনিয়োগের অনেক সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। দারিদ্র্য বিমোচন, স্যানিটেশন, শিক্ষা, নারীউন্নয়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। তবে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান ২/১ মাসে সম্ভব নয়। এজন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে, যদিও এ মুহূর্তে বিদ্যুতের অবস্থা ভালো নয়। ’

সঞ্জয় কাঠুরিয়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের নাজুক অবস্থার কথা তুলে ধরে বলেন, ‘সরকার ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। এটি সরকারের বাজেটের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়বে। এছাড়া এটি দীর্ঘমেয়াদি কোনও সমাধান নয়। ’

তবে অধিক ব্যয়েও বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ানো গেলে লোডশেডিং কমবে বলেও মনে করেনি তিনি।

তিনি বলেন, ‘তখন শিল্প-কারখানায় উৎপাদন বাড়বে, পণ্যের দামও কমবে। সার্বিকভাবে হয়তো মানুষের খরচ কমবে।

ইতিবাচক দিকগুলোর কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, ‘এ বছর ঈদের সময় বিক্রি, ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগ ও রাজস্ব আয় বেড়েছে। তবে বৈদিশেক রেমিটেন্স  কমেছে।

জাহিদ হোসাইনের মতে, বাংলাদেশে খাদ্যমূল্য বাড়ার মূল কারণ চাহিদা বৃদ্ধি। উৎপাদন কিছুটা বাড়লেও আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমাঞ্জস্য রেখে দাম নির্ধারণের ফলে তা স্থিতিশীল থাকে না।

তিনি বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল অবস্থায় রাখতে হলে উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে। তবে এক্ষেত্রে কৃষিজমির পরিমাণ কমে যাওয়া একটি বড় সমস্যা বলে তিনি উল্লেখ করেন। ’

তিনি জানান, গেল বছরে ব্যক্তিখাতে ঋণের পবৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ বাড়লেও ব্যাংকের তারল্য বেড়েছে। তবে সম্প্রতি এ তারল্য কিছুটা কমিয়ে এনেছে ব্যাংকগুলো।

এছাড়া রাজস্ব আয় বৃদ্ধিও একটি ইতিবাচক দিক বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তবে এডিপি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন নিয়ে গত বছরের হার এবার ধরে রাখার সম্ভাব্যতা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন জাহিদ হোসাইন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, ০৩ নভেম্বর, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।