ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

একান্ত সাক্ষাৎকারে মাতলুব আহমাদ: বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন বিদেশিরা

আহমেদ রাজু, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১০
একান্ত সাক্ষাৎকারে মাতলুব আহমাদ: বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন বিদেশিরা

ঢাকা: বিদেশি বিনিয়োগ না বাড়লে কোনো দেশেই প্রবৃদ্ধি বাড়ে না। তাই আমাদের দেশেও বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।

বিনিয়োগের জন্য তৈরি করতে হবে ভালো পরিবেশ। ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি‘র (আইবিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট ও নিটল গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল মাতলুব আহমাদ বাংলানিউজকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, ‘ভারতের টাটা চলে যাওয়ার পর বিদেশিরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে উৎসাহ বোধ করতো না। কিন্তু এখন পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। বিদেশিরাও বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে। ’

মাতলুব আহমাদ বলেন, টাটা চলে যাওয়ার পর বিদেশিদের বিনিয়োগ করতে অনুরোধ করলে তারা প্রায়শঃই এই যুক্তি দিতেন, প্রতিবেশি দেশ ভারতই বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চায় না। কারণ এ দেশে বিনিয়োগের ভালো পরিবেশ নেই।
 
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের পর বাংলাদেশ থেকে বেশ কয়েকটি প্রতিনিধি দল ভারতে গেছে। তারা বাংলাদেশে ভারতের বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে ভারত সরকার এবং সে দেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। এ ছাড়াও আমরা ইন্দো-বাংলাদেশ চেম্বারের পক্ষ থেকেও ভারতের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অনেক আলাপ-আলোচনা করছি। এতে ভারতের ব্যবসায়ীদের এখন বাংলাদেশের প্রতি আস্থা ফিরে এসেছে। তারা এখন এ দেশে বিনিয়োগ করতে চায়।

বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ভারত তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ১ হাজার ২শ’ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পরবর্তীতে আরো বিনিয়োগ আসবে। ভারত এ দেশে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়ায় বিশ্বের অনেক দেশের  ব্যবসায়ীরা এখন এদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করছে। তাই ভারতের সঙ্গে আমাদের ব্যবসা আরো বাড়াতে হবে। ’
 
মাতলুব আহমাদ বলেন, ভারতে আমাদের অনেক পণ্য রপ্তানির সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে পূর্বাঞ্চলের আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়, নাগাল্যান্ডসহ কয়েকটি রাজ্যে বাংলাদেশের পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এখন সেখানে আমাদের অনেক পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। তাই ওই অঞ্চলে আমাদের বিনিয়োগ  বাড়াতে হবে। এতে বাংলাদেশের লাভ হবে।
 
তিনি বলেন, ‘ভারতের ওই রাজ্যগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই। তাই ওই অঞ্চলের সঙ্গে আমাদের ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। বাস, ট্রেন ও সড়ক যোগাযোগের জন্য ভালো অবকাঠামো তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে আমরাও সহযোগিতা করতে পারি। আমাদের স্বার্থেই এটি করতে হবে। ’
 
মাতলুব আহমাদ বলেন, আমরা ভারতের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেছি। এ দেশের পণ্য আমদানিতে তাদের কোনোও আপত্তি নেই। এ ক্ষেত্রে যোগাযোগ হচ্ছে বড় বাধা। তাই দুই দেশের মধ্যে ব্যবসার ভালো পরিবেশ তৈরির জন্য ভারত বাংলাদেশের পোর্ট ও রাস্তাঘাট ব্যবহার করতে চায়। বিনিময়ে তারা সার্ভিস চার্জ দিতেও রাজি। এতে বাংলাদেশও লাভবান হবে। সরকার হিসাব কষে দেখেছে, সার্ভিস চার্জ থেকে সরকার বছরে ১ হাজার ২শ’ কোটি টাকা আয় করতে পারে।
 
তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বার্থেই ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ও বাণিজ্য বৃদ্ধি করা জরুরি। এটি করতে না পারলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পায়নে বাংলাদেশ সুবিধা করতে পারবে না। বরং পিছিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ সময় ১৭২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।