ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

চীন ও তাইওয়ানের ঐতিহাসিক বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৪৪ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১০

চংকুইঙ: তাইওয়ান ও চীনের মধ্যে সাক্ষরিত হলো এক ঐতিহাসিক বাণিজ্য চুক্তি। চীনের দক্ষিণপশ্চিমের চংকুইঙ শহরে গতকাল মঙ্গলবার দুদেশের উচ্চপদস্থ প্রতিনিধিদল এ চুক্তি সাক্ষর করেন।

দ্যা ইকোনমিক কোঅপারেশন ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট নামের এ চুক্তিকে উভয় দেশের সরকারই স্বাগত জানিয়েছেন। একইদিনে দেশ দুটি মেধাসত্ব অধিকার রক্ষা বিষয়ক আরেকটি চুক্তি স্বাক্ষর করে।

তাইওয়ানের প্রতিনিধি দলের নেতা চিয়াং পিন-কুঙ বলেন, “এ চুক্তি দুদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক বন্ধনের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। একইসঙ্গে আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সমন্বয় ও বিশ্বায়নের ধারায় এটি একটি বিশাল পদক্ষেপ। ”

তাইওয়ানের বর্তমান প্রেসিডেন্ট মা উইং-জো ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বের নীতি গ্রহণ করেন যা এ চুক্তি বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

এ চুক্তি অনুযায়ী পেট্রোকেমিক্যাল ও গাড়ির যন্ত্রাংশসহ তাইওয়ানের মোট ৫ শ’ ৩৯ টি পণ্য চীনে রপ্তানির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারমূলক শুল্ক সুবিধা এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে সম্পূর্ন শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। এর পরিমাণ তাইওয়ান থেকে চীনে মোট রপ্তানির ১৬ শতাংশের সমান। অন্যদিকে এ চুক্তির অধীনে চীনের মাত্র ২শ’ ৬৭ টি পণ্য এ সুবিধা পাবে।

এ চুক্তি যে ভারসাম্যহীন ও তাইওয়ানের প্রতি পক্ষপাতমূলক তা চীনা কতৃপক্ষ স্বীকার করেছে। গত সপ্তাহে চীনের একজন শীর্ষ আলোচক বলেন, চুক্তির এ অসাম্যতা তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য কারণ দুই পক্ষই আসলে ‘একই পরিবারের অংশ। ’  

এদিকে খোদ তাইওয়ানে এ চুক্তিটি ব্যাপকভাবে বিতর্কিত। গত শনিবার রাজধানি তাইপেই’তে কয়েক হাজার বিক্ষোবকারী চুক্তি স্বাক্ষরের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদ র‌্যালি বের করে। চুক্তিতে তাইওয়ানকে বাড়তি সুবিধা পাইয়ে দেয়ার বিষয়টিকে এ চুক্তির বিরোধীরা সন্দেহজনক বলে মন্তব্য করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, ভারসাম্যহীন এ চুক্তি প্রমাণ করে যে বাণিজ্যের আড়ালে চীন আরো কিছু আদায় করে নিচ্ছে।

তাইওয়ানের প্রধান বিরোধীদল ডেমোক্রেটিক প্রোগ্রেসিভ পার্টির মুখপাত্র সাই চি-চ্যাঙ বলেন, “মা সরকারের চীনপন্থি নীতির কারণে তাইওয়ান এখন চীনের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাবের আওতার মধ্যে চলে যাচ্ছে। এটা তাইওয়ানের স্বাধিনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য ক্ষতিকর। ”

অন্যদিকে তাইওয়ান সরকারের দাবি, এ চুক্তির কারণে দ্বীপ দেশটিতে নতুন করে আরও দুই লাখ ষাট হাজার কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এক দশমিক সাত শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে।

উল্লেখ্য, তাইওয়ানের বাণিজ্যের বড় অংশীদার চীন । গত বছর দুদেশের মধ্যকার বাণিজ্যের পরিমান ছিল ৮৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অন্যদিকে চীনে তাইওয়ানের বিনিয়োগের পরিমাণ ১৫০ বিলিয়ন ডলারের ও বেশি। তাইওয়ানের প্রায় ১০ লাখ মানুষ চীনে বসবাস করেন বলে ধারণা করা হয় যার অধিকাংশই থাকে সাংহাই অঞ্চলে।  

বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১০৩২ ঘন্টা, জুন ৩০, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।