ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

গুপ্তধন পাইয়ে দেয়ার কথা বলে হাতিয়ে নেয় ৬৫ লাখ টাকা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০২০
গুপ্তধন পাইয়ে দেয়ার কথা বলে হাতিয়ে নেয় ৬৫ লাখ টাকা কবিরাজ হাফেজ মোহাম্মদ লিয়াকত আলী

চট্টগ্রাম: ছেলের সংসার বাঁচাতে হাফেজ মোহাম্মদ লিয়াকত আলী নামে এক কবিরাজের দ্বারস্ত হন রোকেয়া করিম নামে এক নারী। কোরানি চিকিৎসার মাধ্যমে ছেলে ও তার স্ত্রীর সংসার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার জন্য কবিরাজের সঙ্গে সাড়ে ৩ লাখ টাকায় চুক্তিবদ্ধ হন রোকেয়া করিম।

কবিরাজের কথায় বিশ্বাস করে সাড়ে ৩ লাখ টাকা পরিশোধ করেন। কবিরাজ রোকেয়া করিমকে বিভিন্ন সুরা শিখিয়ে দিয়ে আমল করতে বলেন।

রোকেয়া করিম ছেলের সংসার ভাঙা ঠেকাতে নিয়মিত আমল করতে থাকেন।

এরই মধ্যে রোকেয়া করিমকে কবিরাজ হাফেজ মোহাম্মদ লিয়াকত আলী জানান, তার দেবরের জমির মাটির নিচে গুপ্তধন রয়েছে।

এসব গুপ্তধনের মূল্য আনুমানিক সাড়ে তিনশ কোটি টাকা। হাজিরা দেখে এই গুপ্তধনের সন্ধান পেয়েছে বলে জানান কবিরাজ হাফেজ মোহাম্মদ লিয়াকত আলী।

রোকেয়া করিমকে এই গুপ্তধন পাইয়ে দিতে তিনটি খালি নন- জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন কবিরাজ। এর বিপরীতে গুপ্তধন পাইয়ে দেওয়ার নামে রোকেয়া করিমের কাছ থেকে মোট ৬৫ লাখ টাকা নেন কবিরাজ।

পরে রোকেয়া করিমের কাছ থেকে আরও টাকা দাবি করলে তিনি গুপ্তধন না পাওয়া পর্যন্ত টাকা দিবেন না বলে জানান। তখন রোকেয়া করিমকে তার ছেলের ক্ষতি হবে বলে হুমকি দিতে থাকেন কবিরাজ হাফেজ মোহাম্মদ লিয়াকত আলী।

পরে রোকেয়া করিম পুলিশকে জানালে পুলিশ কবিরাজ হাফেজ মোহাম্মদ লিয়াকত আলীকে আটক করে। তার কাছ থেকে স্বাক্ষর নেওয়া তিনটি খালি স্ট্যাম্প উদ্ধার করে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ।

কবিরাজ হাফেজ মোহাম্মদ লিয়াকত আলী বাঁশখালী উপজেলার সরল ইউনিয়নের পাইরং এলাকার মো. জাকির আহম্মদের ছেলে। হাফেজ মোহাম্মদ লিয়াকত আলী একজন ভণ্ড ও প্রতারক বলে জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশের কাছে প্রতারণার কথা স্বীকারও করেছে লিয়াকত আলী।

পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভুঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, কবিরাজ হাফেজ মোহাম্মদ লিয়াকত আলী একজন ভণ্ড ও প্রতারক। রোকেয়া করিম নামে এক নারীর সরলতার সুযোগ নিয়ে তার কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

‘ওই নারীরর ছেলের সংসারে অশান্তি দূর করার জন্য সাড়ে ৩ লাখ টাকা নিয়েছে। পরে ওই নারীকে গুপ্তধন পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ৬৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। আটকের পর পুলিশের কাছে সব স্বীকারও করেছে হাফেজ মোহাম্মদ লিয়াকত আলী। ’

 

ওসি আবুল কাশেম ভুঁইয়া বলেন, হাফেজ মোহাম্মদ লিয়াকত আলী অন্ধ সেজে থাকেন। আসলে সে অন্ধ নয়। চোখে সব দেখে। মানুষের সঙ্গে প্রতারণার জন্য সে এমন বেশ ধরেছে। রোকেয়া করিমের কাছ থেকে ৬৫ লাখ টাকা নিয়ে সে বিভিন্ন জায়গায় দান করেছে বলে দাবি করেছে।

‘তবে ওই টাকা পাওয়ার পর সে আরও এক নারীকে বিয়ে করে। বিয়ের পর নতুন বউকে ফ্ল্যাট কেনার জন্য ৪০ লাখ টাকা দেয় কবিরাজ হাফেজ মোহাম্মদ লিয়াকত আলী। টাকা পাওয়ার পর ওই স্ত্রী হাফেজ মোহাম্মদ লিয়াকত আলীকে তালাক দিয়ে চলে যায়। ’

ওসি বলেন, হাফেজ মোহাম্মদ লিয়াকত আলীর বিরুদ্ধে রোকেয়া করিম বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪১ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০২০
এসকে/এমআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।