ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

নানামুখি সীমাবদ্ধতায় থমকে আছে চট্টগ্রামের অ্যাথলেটিক্স

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২০
নানামুখি সীমাবদ্ধতায় থমকে আছে চট্টগ্রামের অ্যাথলেটিক্স ফাইল ফটো

চট্টগ্রাম: নেই সিনথেটিক টার্ফ, নেই অবকাঠামো, তার ওপর নিয়মিত হয় না প্রতিযোগিতা। এমনই নানামুখি সীমাবদ্ধতায় থমকে আছে চট্টগ্রামের অ্যাথলেটিক্স।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একসময় চট্টগ্রাম থেকে খেলোয়াড় উঠে আসলেও এখন তা পরিণত হয়েছে অমাবস্যার চাঁদে। নিয়মিত প্রতিযোগিতা না থাকা এবং ফেডারেশনের উদাসীনতায় অনেকটা খেলাবিমুখ খেলোয়াড়রা।

চট্টগ্রাম থেকে খেলোয়াড়রা জাতীয় পর্যায়ে মাঠ দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। বর্তমানে এই অঙ্গনে নেমে এসেছে বার্ধক্য।

শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া তেমন কোথাও হয় না এ প্রতিযোগিতার নিয়মিত আসর।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) শুরু হওয়া ৪৩তম জাতীয় অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতায় দেশের ৬৪ জেলা থেকে এসেছেন খেলোয়াড়রা। স্বাগতিক হিসেবে এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছে চট্টগ্রামও। কিন্তু চট্টগ্রাম জেলা দল হিসেবে অংশগ্রহণ করলেও এ দলের বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই স্থায়ী নয়। ধারে খেলতে আসা খেলোয়াড়দের নিয়ে খুব একটা আশা নেই টিম সংশ্লিষ্টদের। ফলে পদক জয়ে নয়, অংশগ্রহণেই সান্ত্বনা খুঁজছেন তারা।

চলমান জাতীয় অ্যাথলেটিক্সের নানান বিষয় তুলে ধরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দলের হয়ে খেলতে নামা হোসাইন মাহমুদ জুয়েল বাংলানিউজকে বলেন, মাঠ এবং মাঠের বাহিরে সবখানেই একটা ঘাটতির চিহ্ন রয়েছে। কোথাও যেন সমন্বয়হীনতা চোখে পড়ছে। নামে জাতীয় হলেও জাতীয় পর্যায়ের কোনো বৈশিষ্ট্য আছে বলে মনে হয় না।

অ্যাথলেটিকে একসময়ে সোনালী দিন পার করেছেন চট্টগ্রাম জেলা দলের কোচ সরওয়ারুল আলম সোহেল। গল্পের ছলে জানালেন বর্তমান চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনের অবস্থার কথা।

২০০১ সালে জাতীয় স্কুল চ্যাম্পিয়ন হয়ে ২০০৪ সালে ভারতের আগরতলায় অনুষ্ঠিত আমন্ত্রণমূলক যুব অ্যাথলেটিক্সে ৮শ মিটার স্প্রিন্টে স্বর্ণ ও ১৫শ মিটার স্প্রিন্টে রৌপ্য পদক জয়ী সাবেক এই অ্যাথলেট বাংলানিউজকে বলেন, অ্যাথলেটিক্সে বর্তমান অবস্থা তেমন ভালো নয়। ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে এর আয়তন। ২০০৬ সালের পর চট্টগ্রাম থেকে তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য খেলোয়াড় উঠে আসেনি। যার দায় আমরা এড়াতে পারি না। নিয়মিত হয় না কোনো প্রতিযোগিতা। এছাড়া অবকাঠামোগত উন্নয়ন হওয়া দরকার। এর চেয়ে বড় বিষয়, খেলোয়াড়দের কোনো আর্থিক নিশ্চয়তা নেই। ফলে আমাদের এই ইভেন্ট এগুতে পারছে না।

জাতীয় পর্যায়ে বিজেএমসি ও পোস্ট অফিস দলের হয়ে বেশ কয়েকটি স্বর্ণপদক ঝুলিতে পুরেছেন এই সাবেক অ্যাথলেট, বর্তমানে পেশায় সাংবাদিক।

তিনি বলেন, শুধু সপ্তাহব্যাপি কোচিং করিয়ে কোনো পদক আশা করাটা নিতান্তই ভুল। খেলোয়াড় তৈরি করার জন্য তৃণমূলে প্রতিভা অন্বেষণ ক্যাম্প করা জরুরি। আর তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য প্রয়োজন দক্ষ প্রশিক্ষক। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ছাড়া এই ক্ষেত্রের উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব নয়।

এতসব সীমাবদ্ধতার মাঝেও আশার বাণী শোনালেন এবারের আসরে প্রধান পৃষ্ঠপোষক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।

তিনি বলেন, একেবারেই খেলা বন্ধ হয়ে থাকলে আর সামনে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এই আসর আমাদের কাছে অনেকটা ব্রেকথ্রু এনে দেওয়ার মতো। আমাদেরও অ্যাথলেটিক্স নিয়ে পরিকল্পনা রয়েছে। মাঠে সিনথেটিক টার্ফ বসানোর ব্যাপারে চিন্তা করছি। মানসম্মত খেলোয়াড় তৈরি করতে হলে সব রকম সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে। এছাড়া ক্যালেন্ডার অনুযায়ী খেলা আয়োজন করা আমাদের লক্ষ্য।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২০
এমএম/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।