ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চিন্তাশীল ব্যক্তিত্ব ড. রশীদ আল ফারুকী

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৯
চিন্তাশীল ব্যক্তিত্ব ড. রশীদ আল ফারুকী বক্তব্য দেন লোকবিজ্ঞানী অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান

চট্টগ্রাম: মাত্র ৪৭ বছর বয়স। এত কম জীবন-পরিসরের একজন মানুষ একাগ্র সাধনায় কত বিচিত্র ও বহুমুখী চর্চায় নিজেকে চিন্তাশীল ব্যক্তিত্বে পরিণত করে তুলতে পারেন তার নজির রশীদ আল ফারুকী।

জীবন-দর্শন, মূল্যবোধ ও চিন্তাধারায় তিনি যা হয়ে উঠেছিলেন তার পারিবারিক ঐতিহ্যিক-শিক্ষা, সামাজিক পরিবেশ তার অনুকূলে ছিল না। সেকালে বাঙালি মুসলিম সমাজে প্রচলিত মাদ্রাসা শিক্ষা লাভের ক্ষেত্রে ফারুকী পিতৃ-আদেশ অমান্য করেননি; তবে সে-শিক্ষা সমাপনান্তে, তার পরবর্তী চিন্তা-চেতনায় ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন এবং ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন তাকে নতুন জীবনবোধে উদ্দীপ্ত করে।

তার শ্রম, নিষ্ঠা, ধৈর্য ও অভিনিবেশ ও একাগ্রতাই লক্ষ্ করা যায়।  

‘রশীদ আল ফারকীর চিন্তার জগৎ: চকিত অবলোকন’ শিরোনামে ড. রশীদ আল ফারুকী তৃতীয় স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠানে খ্যাতিমান লোকবিজ্ঞানী অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান এসব কথা বলেন।

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায়  নন্দনকাননের ফুলকি একে খান স্মৃতি মিলনায়তনে এ স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ সাহিত্য পরিষদ।

ভাষাবিজ্ঞানী ড. মাহবুবুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সাহিত্য পরিদের সভাপতি কবি জিন্নাহ চৌধুরী। ধন্যবাদ বক্তব্য দেন মাহবুবুল হক চৌধুরী বাবর, শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক আহম্মদ খসরু, শামসুজ্জামান খানের জীবনী পাঠ করেন অধ্যাপক মেহেদী হাসান, রশীদ আল ফারুকীর জীবনী পাঠ করেন মিনু মিত্র,  রশীদ আল ফারুকীর রচনা থেকে পাঠ করেন আ ফ ম রবিউল হোসেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করে  আবৃত্তিশিল্পী সেলিম রেজা সাগর।  

অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান বলেন, ইসলামি শিক্ষা থেকে বাঙালি জাতিসত্তা গঠনের সহায়ক মাতৃভাষা ও সাহিত্যে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন রশীদ আল ফারুকীর জীবন-পুনর্গঠনের এক নতুন অধ্যায়। এতে তিনি চিন্তা-চেতনায় এক ধাপ এগিয়ে র‌্যাডিক্যাল সমাজ-সংস্কৃতি ও রাজনীতি চিন্তায় বিশ্বাসী হয়ে ওঠেন। এ বিশ্বাস থেকেই বামপন্থী ছাত্র আন্দোলন ও রাজনৈতিক সংগঠনে যোগ দেন এবং সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নিয়ে কিছুকাল কারা জীবনযাপন করেন। এসব ঘটনা তার আদর্শগত বিশ্বাস ও চিন্তা-চেতনার মৌলিক পরিবর্তনের পরিচয় বহন করে।    

অধ্যাপক রশীদ আল ফারুকীর স্বল্পায়ু জীবন ছিল। কিন্তু এ স্বল্পকাল স্থায়ী জীবনেও সামাজিক পরিবর্তন ও রূপান্তরকে তিনি তার চিন্তা-চেতনার কেন্দ্রে স্থান দিয়ে সাহিত্য-সংস্কৃতিধর্মী ও সৃজনশীল যেসব কাজ করে গেছেন তার পরিমাণ সামান্য নয়। প্রকৃতপক্ষে তিনি জীবনকে আধুনিক, প্রগতিশীল ও মানবিক রূপ দিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, রশীদ আল ফারুকী পাকিস্তান আমল থেকে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পরে দুই সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান ও হোসেইন মুহাম্মদ এরশাদ পুনরায় পাকিস্তানি ধারায় ফিরে বঙ্গবন্ধু কর্তৃক প্রবর্তিত মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকারকে কীভাবে ভূলুণ্ঠিত করেছেন ধর্ম ও রাষ্ট্র বইয়ে তার যেমন অনুপুঙ্খ বর্ণনা দিয়েছেন তেমনি ধর্মের নামে কোনো শাসন ব্যবস্থা চালু হলে তা যে পরিশেষে অনাচারে পরিণত হয় নানা ইতিহাস থেকে তথ্য সহযোগে তা ব্যাখ্যা করেছেন।  

বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৯
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।