ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চায়না হারবারের কর্মীদের অভিযুক্ত করে মামলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৫ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৯
চায়না হারবারের কর্মীদের অভিযুক্ত করে মামলা

চট্টগ্রাম: মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরীতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশনে কর্মরত নান্নু মিয়াকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। আর নান্নু মিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় চায়না হারবারের কর্মীদের অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করা হয়েছে ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশনের পক্ষ থেকে।

সোমবার (১৭ জুন) ভোররাতে জোরারগঞ্জ থানায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশনের প্রজেক্ট ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ।

মামলায় সুনির্দিষ্ট কাউকে আসামী করা না হলেও চায়না হারবারের কর্মীদের অভিযুক্ত করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রামের সহকারী পুলিশ সুপার (মিরসরাই জোন) মো. শামসুদ্দীন সালেহ আহম্মদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, নান্নু মিয়ার মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় চায়না হারবারের কর্মীদের অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেছেন ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশনের প্রজেক্ট ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ।

নিহত নান্নু মিয়া ফরিদপুরের মধুখালী পশ্চিম গারাখোলা এলাকার আবদুল হক মিয়ার ছেলে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ওয়াহিদ কন্সট্রাকশন বঙ্গবন্ধু শিল্পজোনে বেপজার ভূমি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত। মাটি ভরাটের কাজের জন্য সমুদ্রে ড্রেজার স্থাপনের লক্ষ্যে বামনসুন্দর খাল দিয়ে ইঞ্জিন বোটের সাহায্যে ওয়াহিদ কন্সট্রাকশনের কর্মচারীরা কোম্পানীর সাইট অফিস থেকে ড্রেজার পর্যন্ত আসা যাওয়া করতো। ১৪ জুন বিকেল ৫টার দিকে কোম্পানীর বোট অপারেটর ফারুক হোসেন নৌকা নিয়ে বামনসুন্দর খালের মুখে ঢোকামাত্র চায়না হারবার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানীর কর্মীরা অতর্কিত হামলা চালানোর চেষ্টা করে। এ সময় নৌকা চালক প্রাণভয়ে নৌকা রেখে পালিয়ে যাওয়ার পর চায়না হারবারের কর্মীরা নৌকাটি তাদের সাইট অফিসে নিয়ে যায়।

পরে জোরারগঞ্জ শিল্পজোন পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আবুল বাশার, কোম্পানীর প্রকল্প পরিচালক মেজর (অব.) ইঞ্জিনিয়ার রেজাউল করিম, উপদেষ্টা আরিফ মোস্তফাকে বিষয়টি জানালে আরিফ মোস্তফা বিষয়টি মেরিন ড্রাইভ প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক জুলফিকার তারেককে জানান। তারা ওয়াহিদ কন্সট্রাকশনের আটককৃত ইঞ্জিন নৌকাটি নিয়ে আসতে বলেন। তাদের কথামতো ল্যান্স কর্পোরাল (অব.) নান্নু মিয়াসহ ওয়াহিদ কন্সট্রাকশনের ৫ জন কর্মচারী ১৪ জুন রাত ৯টার দিকে নৌকাটি আনতে যান। এ সময় নৌকাটি ফেরত না দিয়ে চায়না হারবারের কর্মীরা হামলা চালায়। ওয়াহিদ কন্সট্রাকশনের চারজন কর্মী সাগরে ঝাঁপিয়ে পড়ে পালিয়ে আসলেও নান্নু মিয়া ফিরেননি। পরে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ওই এলাকায় নান্নুকে খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান পাননি। রোববার (১৭ জুন) সকালে পুলিশ নান্নু মিয়ার লাশ উদ্ধার করে।

ওয়াহিদ কন্সট্রাকশনের উপ-ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মো. আরিফুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, নান্নু মিয়াকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। তাকে ১৪ জুন ধরে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। নান্নু মিয়ার শরীরে গরম পানি ঢেলে দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। কান ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও জোরারগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোজাম্মেল হক বাংলানিউজকে বলেন, নান্নু মিয়ার শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তার ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। খুনের সঙ্গে জড়িত আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৭ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৯
এসকে/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।