হাসপাতাল এলাকায় ঢুকে দেখা মিললো না কারও। নিচতলার অর্থোপেডিক্স, সার্জারি ও নাক-কান-গলা ওয়ার্ডের রোগী-স্বজন এক হয়ে ঘুমাচ্ছেন।
বুধবার (২২ মে) দিবাগত রাতে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায় চট্টগ্রামের দ্বিতীয় বৃহৎ সরকারি চিকিৎসাকেন্দ্র আড়াইশ শয্যার আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের।
হাসপাতালে পুরুষ ও মহিলার আলাদা ৬টি ওয়ার্ড আছে সার্জারি, ইএনটি ও অর্থোপেডিকসের। এর বাইরে আছে গাইনি ও প্রসূতি, মেডিসিন, শিশু, চক্ষু, নেফ্রোলজি ও কার্ডওলজিসহ মোট ১৪টি ওয়ার্ড।
কিন্তু এত বড় হাসপাতালে রাতের ডিউটিতে ছিলেন ডা. অরুনাভ চৌধুরী নামে এক চিকিৎসক। মেডিসিন ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা মিলে তার।
জানা গেছে, প্রতিদিন একজন চিকিৎসকই হাসপাতালটিতে রাতের দায়িত্ব থাকেন। আলাদা ১৪টি বিভাগ থাকলেও একজন চিকিৎসক সব রোগের চিকিৎসা দেন।
ডা. অরুনাভ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, পেশায় একজন অর্থোপেডিকস চিকিৎসক হলেও এখানে সব ধরনের রোগীকে চিকিৎসা দিতে হয়।
‘বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পর্যাপ্ত থাকলেও এ হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার সংখ্যা খুবই কম। অথচ এদের দরকার বেশি। ’
অর্থোপেডিকস ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন কৃষাণ রাহা বাংলানিউজকে বলেন, ২২ দিন ধরে এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছি। দিনে দেখা মিললেও রাতে কোনো চিকিৎসক আসে না।
‘এক রাতে ঘুমের ওষুধ খেয়ে শরীর খারাপ হয়ে যায়। তখন মেডিসিন ওয়ার্ড থেকে এক চিকিৎসককে ডেকে আনেন নার্সরা। ’
অন্যদিকে হাসপাতালটিতে নেই কোনো নিরাপত্তারক্ষী। একজন ওয়ার্ডবয় নিরাপত্তরক্ষী হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও তার দেখা মেলেনি হাসপাতাল এলাকায়।
এদিকে জরুরি বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে একজন নার্স দায়িত্ব পালন করছেন। চিকিৎসককের চেয়ারটি খালি ছিল। জিজ্ঞেস করলে ওই নার্স জানান, চিকিৎসক ভেতরের রুমে আছেন। রাত ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত জরুরি বিভাগ সেবা নিয়েছেন ৭ জন।
উল্লেখ্য, নগরীর আন্দরকিল্লা এলাকায় ১৯০১ সালে এ হাসপাতাল গড়ে উঠে। তখন শুধু বহির্বিভাগে সেবা পেতেন রোগীরা। নতুন ভবন নির্মাণের মাধ্যমে ১৯৮৬ সালে ৮০ শয্যার কার্যক্রম শুরু হয় এ হাসপাতালে। এখনো সে ভবনটি বিদ্যমান রয়েছে।
২০০৩ সালে এ হাসপাতালকে দেড়শ শয্যায় উন্নীত করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু জনবল না বাড়িয়ে সর্বশেষ ২০১২ সালে এটিকে আড়াইশ শয্যার হাসপাতাল ঘোষণা করা হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গড়ে প্রতিমাসে ২০ হাজার রোগী এ হাসপাতালে সেবা নেন।
বাংলাদেশ সময়: ০২৩৫ ঘণ্টা, মে ২২, ২০১৯
এসইউ/টিসি