ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মুখে বড় বড় কথা বলে সড়ক নিরাপদ করা যাবে না

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৯
মুখে বড় বড় কথা বলে সড়ক নিরাপদ করা যাবে না বক্তব্য দেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাশহুদুল কবীর। ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: মুখে বড় বড় কথা বলে সড়ক নিরাপদ করা যাবে না। সড়ক নিরাপদ করতে হলে চালক-মালিক-পথচারী-সরকার সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে। সড়ক আইন মানতে হবে। তবেই সড়ক নিরাপদ করা সম্ভব হবে। দুর্ঘটনা কমে আসবে।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) নগরের ষোলশহর এলজিইডি ভবনে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও বিআরটিএ আয়োজিত সড়ক নিরাপত্তা ও জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

সেমিনারে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাশহুদুল কবীর বলেন, আমরা সব সময় মনে করি- আইন নিজের জন্য নয়, আইন অন্যের জন্য।

এ কারণে আমরা যখন পথচারী হই, তখন জেব্রা ক্রসিং ব্যবহার না করে হাতে গাড়ি থামিয়ে রাস্তা পার হতে চাই। যখন চালক হই, তখন সিগনাল না মেনে গাড়ি চালাই।

আরও খবর>>
** 
পুলিশ সড়কে বাণিজ্য করছে, অভিযোগ ম্যাজিস্ট্রেটের

তিনি বলেন, আমরা এখন স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছি। আমাদের চিন্তা-ভাবনাগুলোও এখন উন্নত করতে হবে। নিজে আইন মানার মানসিকতা সৃষ্টি করতে হবে। ধর্য্যশীল হতে হবে। একে অন্যকে দোষ না দিয়ে সবাই আইন মেনে চললেই সড়ক নিরাপদ হবে।

সেমিনারে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান প্রক্রিয়া আরও সহজ করার দাবি জানান জেলা সড়ক পরিবহন বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অলি আহম্মদ।

এ বিষয়ে মো. মাশহুদুল কবীর বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান প্রক্রিয়া সহজ করার বিষয়টি আমাদের হাতে নেই। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো। চালকদের ৮ম শ্রেণি পাশের যে বাধ্যবাধকতা তা ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত নামিয়ে আনা যায় কী না- খতিয়ে দেখা হবে। তবে শুধু অভিজ্ঞতা দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ চালক পড়তে বা লিখতে না জানলে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু বলেন, চট্টগ্রামসহ সারাদেশে অল্প বয়সী চালকরা গাড়ি চালাচ্ছে। এসব দেখার জন্য যে অথরিটি আছে- তারা কতটুকু দায়িত্ববান সেটা এখন প্রশ্নবিদ্ধ। হঠাৎ একটা দুর্ঘটনা ঘটলো, আমরা চালককে দায়ী করলাম, মালিকদের অপরাধী বানালাম- এটা তো ঠিক না।

তিনি বলেন, খোদ চট্টগ্রাম বিআরটিএ অফিসের সামনের সড়কেই ১২-১৪ বছরের চালকরা গাড়ি চালাচ্ছে। জেলার সিএনজি চালিত অটোরিকশা নগরে ঢুকছে। এসব দেখেও যেনো সংশ্লিষ্টরা দেখেন না। বিআরটিএ অফিসের সামনে দিয়ে প্রতিনিয়ত যে গাড়িগুলো চলছে সেটা যদি আমরা ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি তাহলে পর্যায়ক্রমে পুরো চট্টগ্রামে এটি বাস্তবায়ন করা যাবে। সড়ক দুর্ঘটনামুক্ত হবে।

মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব বেলায়েত হোসেন বেলাল বলেন, গাড়ির সব কাগজ ঠিক থাকার পরেও নানা অযুহাতে মামলা দিচ্ছে পুলিশ। আবার টোকেন বাণিজ্যের মাধ্যমে ৫-৭ বছরের ডকুমেন্ট ফেইল গাড়িকে অবাধে চলতে দিচ্ছে তারা। এভাবে তো সড়ক নিরাপদ রাখা সম্ভব না।

বিআরটিএর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ’র সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মনজুরুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মাসুম, বিআরটিএর চট্টমেট্রা-২ সার্কেলের সহকারী পরিচালক উসমান সরওয়ার আলম, জেলা সড়ক পরিবহন বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অলি আহম্মদ।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআরটিএর চট্টগ্রাম জেলা সার্কেলের সহকারী পরিচালক এম ডি শাহ আলম।

এ সময় বিআরটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউল হক মীর, সোহেল রানাসহ বিআরটিএর ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সেমিনারের আগে নিরাপদ সড়ক নিয়ে গণসচেতনতা তৈরিতে নগরের ২ নম্বর গেট এলাকা থেকে একটি র‌্যালি বের করা হয়। এতে নেতৃত্ব দেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাশহুদুল কবীর এবং বিআরটিএর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৯
এমআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।