মঙ্গলবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যায় নগরের চকবাজার এলাকার কামারগলি ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে পশু কোরবানির জন্য প্রয়োজনীয় ছুরি, চাপাতি, দা ও বটি তৈরি ও মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কামারেরা।
গত ৪৫ বছর ধরে চকবাজার কামারগলিতে বংশানুক্রমিক এ পেশায় জড়িত ষাটোর্ধ্ব কানু নন্দী। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কাজ করছিলেন দা, বটি ও ছুরি মেরামতের।
কানু নন্দী বাংলানিউজকে বলেন, ‘আগামিকাল ঈদ। এখন খুব ব্যস্ত আমরা। নতুন কোনো অর্ডার নিচ্ছিনা। আগের অর্ডারগুলো ডেলিভারি দিচ্ছি। ’
তিনি বলেন, ‘আকার ও আকৃতি অনুযায়ী দা, বটি, ছুরি, ধামার দাম বিভিন্ন রকম রয়েছে। ছুরির দাম ১০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা, বটির দাম ৭০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা, ধামার দাম ৩০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা, চাপাতির দাম ৫০০ টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত রয়েছে।
কানু নন্দী বলেন, ‘এখন শুধু ঈদ উপলক্ষে চাপাতি তৈরি করছি। অন্য সময় থানা পুলিশের অনুমতি ছাড়া চাপাতি তৈরি করিনা আমরা। ’
চন্দনাইশ বরমা এলাকার বাবুল দাশ, রাউজানের পশ্চিম গুজরা এলাকার জয়রাম নন্দীসহ ১৪ জন এ কামারগলিতে কামারশালা পরিচালনা করেন। তাদের অধিকাংশই বংশানুক্রমিক এ পেশায় জড়িত।
বাবুল দাশ বাংলানিউজকে বলেন, ‘নতুন জিনিস বিক্রির চেয়ে মেরামতের কাজ বেশি। মেরামত করতে গিয়ে আমাদের দম ফেলার সুযোগ নেই। প্রতিটি মেরামতে ৩০ টাকা থেকে শুরু করে ২০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়। ’
পাঁচলাইশ থেকে কোরবানির জন্য ছুরি কিনতে আসা এইচ এম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘কোরবানির জন্য ছুরি কিনতে এসেছি। কিছু পুরোনো ছুরি ছিল সেগুলো মেরামত করিয়ে নিলাম। অন্য সময়ের চেয়ে এখন একটু দাম বেশি। তবে যা যা প্রয়োজন সব পেয়েছি এখানে। ’
জয়রাম নন্দী বাংলানিউজকে বলেন, ‘এখন কয়লা পাওয়া যায় না। যা পাওয়া যায় সেগুলোরও দাম বেশি। আগে এক বস্তা কয়লা কিনতে লাগতো ৭০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা। আর এখন সেই কয়লা কিনতে আমাদের খরচ করতে হয় ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকার মতো। তাই আগের চেয়ে তুলনামূলক কাজের দাম একটু বেশি। ’
চকবাজার ছাড়াও নগরের ফিরিঙ্গি বাজার, সাগরিকা রোড, পাহাড়তলী, হালিশহরের ফইল্যাতলী বাজারসহ বিভিন্ন এলাকার কামারেরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৮
এসকে/টিসি