জানা গেছে, বিআরটিএ চট্টগ্রাম বিভাগীয় অফিসে সর্বশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কর্মরত ছিলেন ম্যাজিস্ট্রেট প্রশান্ত কুমার দাশ। ২০১৬ সালের ২৯ জুন যোগ দেওয়া এ ম্যাজিস্ট্রেট চট্টগ্রাম ছাড়েন ২০১৭ সালের ৩ জানুয়ারি।
আরও খবর>>
** ৪ দিনে ২৩৯২ আবেদন চট্টগ্রামের বিআরটিএতে
বিআরটিএ চট্টগ্রাম বিভাগীয় অফিসের কর্মকর্তারা জানান, ম্যাজিস্ট্রেট প্রশান্ত কুমার দাশ বদলি হওয়ার পর চট্টগ্রাম অফিসে নতুন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পদায়ন করতে নানা সময়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন তারা।
চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের ১২ এপ্রিল ফোর স্ট্রোক থ্রি-হুইলার (২০০২ মডেলের) সিএনজি চালিত অটোরিকশা ‘স্ক্রেপিং’ করতে মুনিবর রহমান নামে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এলেও ক’দিন পর তিনি চলে যান।
ফলে শূন্যই থেকে গেছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের পদগুলো। ত্রুটিপূর্ণ যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের ওপরই ভরসা রাখতে হচ্ছে বিআরটিএকে।
বিআরটিএ সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলায় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন এবং ড্রাইভিং লাইসেন্সের বিরুদ্ধে কিছু অভিযান পরিচালনা করেছে বিআরটিএ। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ৬ মাস সময়ে এ অভিযানের সংখ্যা ১ হাজার ১৬৭টি। এসব অভিযানে জরিমানা আদায় করা হয় ১২ লাখ ৫ হাজার ৩১০ টাকা।
এর মধ্যে ফেব্রুয়ারিতে ২১০টি অভিযানের বিপরীতে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা, মার্চে ২২০টি অভিযানের বিপরীতে ২ লাখ ৪০ হাজার ৮১০ টাকা, এপ্রিলে ১৯৮টি অভিযানের বিপরীতে ২ লাখ ১ হাজার ৫০ টাকা, মেতে ২২৭টি অভিযানের বিপরীতে ১ লাখ ৮১ হাজার ৪৫০ টাকা, জুনে ১৩৪টি অভিযানের বিপরীতে ৩ লাখ ৪০০ টাকা, এবং জুলাইয়ে ১৭৮টি অভিযানের বিপরীতে ১ লাখ ৭১ হাজার ৬০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ৬ মাসে চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলায় বিআরটিএর পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় যে পরিমাণ অভিযান এবং জরিমানা আদায় করা হয়েছে নিজস্ব ম্যাজিস্ট্রেট থাকলে এরকম অভিযান এবং জরিমানা আদায় দ্বিগুণ থেকে তিন গুণ করতে পারতো বিআরটিএ। সরকারি কোষাগারেও জমা পড়তো বিপুল অঙ্কের অর্থ।
বিষয়টি স্বীকার করে বিআরটিএ চট্টগ্রাম বিভাগীয় অফিসের সহকারী পরিচালক (সাধারণ) মো. সফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, নিজেদের ম্যাজিস্ট্রেট না থাকায় অভিযানে কিছুটা সমস্যাতো হচ্ছেই। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা অনেক সময় ব্যস্ত থাকেন। যেকোনো সময়ে তাদের পাওয়া সম্ভব হয় না। এ কারণে যখন-তখন অভিযানও পরিচালনা করা যায় না।
নিজেদের ম্যাজিস্ট্রেট থাকলে আমরা আমাদের পরিকল্পনা নিয়ে ত্রুটিপূর্ণ যানবাহনের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করতে পারতাম। সড়কে এসব যানবাহনের সংখ্যা কমে আসতো। সড়ক দুর্ঘটনা কম হতো। যোগ করেন মো. সফিকুল ইসলাম।
বিআরটিএ চট্টগ্রাম বিভাগীয় অফিসের উপ-পরিচালক (ইঞ্জি) মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, চট্টগ্রামে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পদায়নের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আশা করি ঈদুল আজহার পর আমরা ম্যাজিস্ট্রেট পাবো।
তিনি বলেন, চলতি মাসের শেষের দিকে বিআরটিএর পক্ষ থেকে ত্রুটিপূর্ণ যানবাহনের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হবে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং ফিটনেসবিহীন যানবাহনগুলো ডাম্পিং স্টেশনে পাঠানো হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৮
এমআর/টিসি